Barak UpdatesBreaking News
নিম্নাঙ্গ অসাড়, তবু স্বামীজির বার্তা নিয়ে স্কুটিতে দেশভ্রমণ করে চলেছেন থাঙ্গারাজাParalysed half body, yet Thangaraja spreading the message of Swamiji in his scooter
![](https://way2barak.com/wp-content/uploads/2019/11/thanga.jpg)
২৬ নভেম্বরঃ তিনি স্বামীজি অন্তঃপ্রাণ। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী প্রচারের জন্য স্কুটিতে সারা দেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু দর্শক-শ্রোতারা তাঁর সম্পর্কেই জানতে বেশি আগ্রহী। তিনি যত স্বামীজির কথা বলেন, সবাই তত জানতে চান, কবে পোলিও-য় আক্রান্ত হলেন, স্কুটি থেকে কী করে নামেন, কীভাবে যেতেন স্কুল-কলেজে?
![Rananuj](https://way2barak.com/wp-content/uploads/2024/06/IMG-20240611-WA0001.jpg)
কন্যাকুমারীবাসী আর থাঙ্গারাজা-কে দেখে বিস্ময়ের ঘোর যেন কাটতে চায় না। পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে শৈশবেই পায়ের শক্তি হারান। কোমরের নীচের অংশ পুরো অসাড়। হাঁটাচলা তো দূর, দাঁড়াতেও পারেন না। তিনিই কিনা স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ১৮ হাজার কিলোমিটার পাড়ির লক্ষ্য নিয়ে! এরই মধ্যে সাড়ে ১২ হাজার কিলোমিটার ঘুরে নিয়েছেন। কন্যাকুমারী থেকে রওয়ানা হয়ে সোজা কাশ্মীরে, সেখান থেকে এখন উত্তর-পূর্বে বিবেকানন্দ-কথা প্রচার করে চলেছেন। ঘুরতে ঘুরতেই চলে আসেন করিমগঞ্জে। স্থানে স্থানে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। করিমগঞ্জবাসীও তাঁকে সংবর্ধিত করে।
সাধারণ জনতার নানা প্রশ্নে থাঙ্গারাজা জানান, পায়ের অক্ষমতাই তাঁকে বারবার কঠোরতর চ্যালেঞ্জের দিকে ঠেলে দিত। প্রতি মুহূর্তে তিনি পরবর্তী সংগ্রামের জন্য শক্তি সঞ্চয় করতেন। একদিকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, অন্যদিকে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। বাবা মুটে, মা দিনমজুর। ওই পরিস্থিতিতেই পড়াশোনা করে তিনি এখন একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেছেন বেশ কিছুদিন। ২০০৮ সালে চাকরি ছেড়ে বিবেকানন্দ কেন্দ্র কন্যাকুমারীর সর্বক্ষণের কর্মী।
স্বামী বিবেকানন্দ শিলা স্মারকের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১১ সেপ্টেম্বর তাঁর বেরিয়ে পড়া। গত সপ্তাহে করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি কলেজে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সভার আয়োজন করা হয়। স্কুটিতে বসেই তিনি ফুলের তোড়া নেন। এর পরেই শুরু হয় চর্চা, তাঁকে সভাস্থলে নিয়ে যাবেন কী করে! কারও ধার ধারেননি থাঙ্গারাজা। স্কুটি থেকে নেমে হামাগুড়ি দিয়ে এগোতে থাকেন। ছাত্ররা দৌড়ে গিয়ে চেয়ার নিয়ে আসে। বসিয়ে কাঁধে করে তাঁকে সভায় নিয়ে যাওয়া হয়। ফেরার পথে দ্বিগুণ উতসাহে একইভাবে এনে তাঁকে তাঁর বাহনে বসিয়ে দেন ছাত্ররা।
তিনি সেখানে কলেজছাত্রদের মাদকের কুপ্রভাবের ওপর বক্তৃতা করেন। ফাঁকে ফাঁকেই বলেন, স্বামীজির আদর্শকে পাথেয় করে চললে সমাজের অনেক জটিল সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সবাই তাকিয়ে থাকে আত্মবিশ্বাসী মানুষটার মুখের দিকে।