Barak UpdatesHappeningsBreaking News

রাজ্য বাজেট : প্রতিক্রিয়ায় দিলীপকুমার দে, সঞ্জীব রায়, গৌতমপ্রসাদ দত্ত

অধ্যাপক দিলীপকুমার দে, প্রাক্তন অধ্যক্ষ, শিলচর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ

আমরা চেয়েছি খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প ও ভাল যাতায়াত ব্যবস্থা। চিড়িয়াখানা আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় কখনও ছিল না। কৃষির উন্নতির জন্য কোনও প্রকল্প নেই। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য শিলচর মেডিকেল কলেজে বহু বিভাগে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ নেই, করিমগঞ্জে প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজের বরাদ্দ নেই, কাগজ কল পুনরায় চালু করার উদ্যোগ (অন্ততঃ কেন্দ্র সরকারের কাছে দাবি) নেই, ফল ও সব্জি প্রসেসিং ও সংরক্ষণের কোনও উদ্যোগ নেই, স্কুলগুলোতে প্রশাসনিক ও শৈক্ষিক ব্যবস্থার জন্য শিক্ষক নেই, গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক নিযুক্তির উদ্যোগ নেই, মহাসড়কে পূর্ণতা নেই, মিজোরামের সাথে সীমান্ত সমস্যার সুরাহা নেই, যুবক-যুবতীদের কর্ম সংস্থান নেই।

এখন জংলি প্রাণীর জন্য সরকারের মন কাঁদছে। তাই চিড়িয়াখানা দিয়ে লোক ঠকানো, মূল সমস্যাগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়া? আগে কাজিরাঙায় চিড়িয়াখানা করা হোক না কেন?

সঞ্জীব রায়, প্রদেশ কংগ্রেস সম্পাদক

অদ্ভুত বাজেট। বরাক উপত্যকায় চিড়িয়াখানা ? করিমগঞ্জ মেডিকেল কলেজের উল্লেখ নেই, এক বছর আগে মন্ত্রী পীযূষ হাজারিকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শিলচরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল হবে, এর কোনও উল্লেখ নেই৷  শিলচরে ফ্লাইওভারেরও উল্লেখ করা হয়নি, যা নিয়ে কিছুদিন আগে ঢাকঢোল বাজানো হলো৷  গ্রেড থ্রি ও ফোরের সরকারি চাকরি বরাকের স্থানীয় বেকার যুবক-যুবতীদের দেওয়ার উল্লেখই নেই, যা আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বার বার শুনিয়েছিলেন। বরাক নদীর উপর ৫টি আরসিসি সেতুর উল্লেখ না থাকা আবারও মিথ্যাচারের প্রমাণ দিল বিজেপি সরকার।

এই কোভিড-কঠিন সময়ে বরাকের  হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোগত বিকাশের কোনও উল্লেখ নেই, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই প্রয়োজন৷ এছাড়াও হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বরাকে এসে নির্বাচনী সমাবেশে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন,  মহিলাদের ক্ষুদ্রঋণ পুরোপুরি মাফ করে দেওয়া হবে, সেকথাও অনুল্লেখিত থেকে গেল৷  অরুণোদয় প্রকল্পের মাসিক অনুদান ৮৩০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০০ টাকা করার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও রসিকতা বলে প্রমাণিত হল৷ বাজেটে ৮৩০ টাকা থেকে তা বৃদ্ধি করে কেবল ১০০০ টাকাই করা হয়েছে। তাই যে বাজেটে করিমগঞ্জ মেডিকেল কলেজ বঞ্চিত, শিলচরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল বঞ্চিত, যেখানে ফ্লাইওভারের উল্লেখ নেই, যেখানে বরাকের তিন জেলায় নতুন কোনও উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়নি এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষার

পরিকাঠামোগতগ উন্নতির কোনও চিন্তাধারা নেই সেই জায়গাতে বরাককে শুধু একটি চিড়িয়াখানা উপহার দিয়ে ৪০ লক্ষ বরাকবাসীকে সম্মানিত করা হয়েছে না অপমান করা হয়েছে তা একটা প্রশ্নচিহ্ন হিসেবেই রয়ে গেল।

গৌতমপ্রসাদ দত্ত, সাধারত সম্পাদক, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন 

সরকারিভাবে নাগরিকদের বলা হয়েছিল বাজেটের জন্য প্রস্তাব পাঠাতে । আমরা উপত্যকার মানুষের অনুভবের কথা অর্থমন্ত্রী অজন্তা নেওগকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম। প্রতিলিপি দিয়েছিলাম মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য , শিলচরের সাংসদ ডাঃ রাজদীপ রায় ও বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদেরও। আমাদের প্রস্তাব ছিল, বরাক উপত্যকার তিন জেলায় একটি করে মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারি, অনুবাদ পর্ষদ, স্থল যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, শিলচর মেডিক্যাল কলেজে নিউরোলজি, নেফ্রলজি বিভাগ চালু করা, কার্ডিওলজি বিভাগের উন্নতি, করিমগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন, হাইলাকান্দি সিভিল হাসপাতালের আধুনিকীকরণ ইত্যাদি৷

আমরা আশা করেছিলাম সবগুলো না হলেও কিছু প্রস্তাব অন্তত অর্থমন্ত্রী অজন্তা নেওগ বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করবেন। সে প্রত্যাশা অধরা থেকে গেল। আশা করছি , বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় বরাকের জনপ্রতিনিধিরা বিষয়গুলো সরকারের নজরে এনে তার যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker