Barak UpdatesHappeningsBreaking News

মুদ্রিত বিল চেয়েও পাননি নীহার ঠাকুর, লাইন কাটায় জরিমানা গুণতে হবে বিএসএনএল-কে, রায় কমিশনের

ওয়েটুবরাক, ১৮ নভেম্বরঃ বিএসএনএলের কাছে তাঁর ব্যক্তিগত ল্যান্ডলাইন ও মোবাইল ব্যবহারের মুদ্রিত বিল চেয়েও পাননি শিলচরের প্রাক্তন পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর৷ তিনি একজন বরিষ্ঠ আইনজীবী৷ তখন ছিলেন পুরসভার সভাপতির চেয়ারেও৷ মুদ্রিত বিল দেওয়া বন্ধ, এ কথা জানিয়ে বিএসএনএল বকেয়া বিল পরিশোধ হয়নি বলে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তাঁর দুটি লাইনই কেটে দেয়৷ তাতে তাঁকে সমস্যায় পড়তে হয়৷ তিনি মানসিক চাপেও ভোগেন৷ বিল না পাঠিয়ে লাইন কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে তাঁকে দিল্লির একটি চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়ে বলা হয়, মুদ্রিত বিলের বদলে ডিজিটাল বিলে যারা সম্মতি দেবেন, তাঁদের মুদ্রিত বিল দেওয়া হবে না৷ ওই চিঠিকে হাতিয়ার করেই নীহারেন্দ্র নারায়ণ জেলা গ্রাহক সুরক্ষা কমিশনে যান৷ কোথায় কী ভাবে তিনি ডিজিটাল বিলে সম্মতি দিয়েছেন, কমিশনের সামনে বিএসএনএলের আইনজীবী কোনও জবাব দিতে পারেননি৷ শেষে গত সপ্তাহে কমিশনের সভাপতি সমরজিৎ দে এবং দুই সদস্য কমল সারদা ও দীপান্বিতা গোস্বামী বিএসএনএল-কে দোষী সাব্যস্ত করেন৷ রায়ে জানান, নীহারেন্দ্র নারায়ণকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক হাজার টাকা এবং মামলার খরচ বাবদ তিন হাজার টাকা দিতে হবে৷ নব্বই দিনের মধ্যে বিএসএনএল এই অর্থ দিতে না পারলে পরে সাত শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে৷

নীহারেন্দ্রবাবুর হয়ে এই মামলা লড়েন আইনজীবী জয়দীপ বিশ্বাস৷ তিনি জানান, নীহারেন্দ্রবাবু দীর্ঘদিন ধরে বিএসএনএলের গ্রাহক৷ বিল পরিশোধের ব্যাপারে কখনও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ছিল না৷ তাই বিল না পেয়ে তিনি নিজেই গিয়েছিলেন বিলের ব্যাপারে খোঁজ নিতে৷ তখন জানতে পারেন, মুদ্রিত বিল দেওয়া বন্ধ৷ ডিজিটাল বিলই সবাইকে নিতে হবে৷ অথচ নিয়ম হলো, যারা ডিজিটাল বিলে সম্মতি জানাবেন, তাদের মুদ্রিত বিল দেওয়া হবে না৷ লাইন কাটার পরে এর কারণ জানতে চাইলে ঔদ্ধত্বের সঙ্গে জবাব দেয়, এখন সব সিস্টেমে চলে৷ বিল দিতে দেরি হলে সিস্টেমেই লাইন কাটা পড়ে যায়৷ এর পরও তিনি বলে গিয়েছেন, বিলই যদি না জানলাম, তাহলে টাকাটা দেব কী করে৷ কিন্তু কেউ কোনও কথা শুনতে রাজি হলেন না৷

প্রথমদিকে বিএসএনএলের আইনজীবী মহম্মদ হোসেন মজুমদার ট্রাইবুনালকে মামলা খারিজের আর্জি জানিয়ে বলেছিলেন, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার এই সময়ে মুদ্রিত বিলের গোঁ ধরলে কি আর চলে! এ ছাড়া, তাঁর ই-মেল রয়েছে৷ ওই মেলে সব বিল নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে৷ ফলে টাকার অঙ্ক না জানার কথা নয়৷

ট্রাইবুনাল অবশ্য এত কথায় না গিয়ে শুধু জানতে চেয়েছিলেন, মুদ্রিত বিল লাগবে না বলে নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর কোনও সম্মতি জানিয়েছিলেন কি৷ জানালে কোথায় সম্মতিপত্র বা সম্মতিসূচক চিঠি৷ এই প্রশ্নের উপযুক্ত না পেয়ে তিন সদস্যের কমিশন বিএসএনএল-কে দোষী বলে চিহ্নিত করে৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker