India & World UpdatesHappeningsBreaking News

কাশ্মীরে হারলেন ওমর-মেহবুবা

ওয়েটুবরাক, ৪ জুনঃ জম্মু এলাকার দু’টি লোকসভা আসন উধমপুর এবং জম্মুতে জয় পেয়েছে বিজেপি। কাশ্মীর উপত্যকার বারামুলা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী শেখ এ রশিদের কাছে ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি)-এর নেতা ওমর আবদুল্লা। অনন্তনাগ রাজৌরি আসনে এনসি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপল্‌স ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)-র মেহবুবা মুফতি। শ্রীনগর আসনটিও ধরে রেখেছে এনসি।

ভূস্বর্গে কংগ্রেস এবং এনসি আসন সমঝোতা করে লড়লেও একাই লড়ছে সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি। পুরনো ‘গড়’ অনন্তনাগ-রাজৌরি থেকে এ বারেও প্রার্থী হয়েছিলেন মেহবুবা। তাঁর লড়াই মূলত ছিল ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদল এনসি-র প্রার্থী মিয়াঁ আলতাফের সঙ্গে। গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন এনসি-র হাসনাইন মাসুদি। দ্বিতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। আর ২০০৪ এবং ২০১৪ সালে অনন্তনাগ আসন থেকে জিতে লোকসভায় যাওয়া মেহবুবা চলে গিয়েছিলেন তৃতীয় স্থানে। পেয়েছিলেন মাত্র ২৪.৪৪ শতাংশ ভোট। এই আসনে এ বার প্রার্থী হয়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর ‘আপনি পার্টি’র জ়াফর মানহাস। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছিল প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজ়াদের প্রগ্রেসিভ আজ়াদ পার্টি এবং সাজাদ গনি লোনের জম্মু ও কাশ্মীর পিপল্‌স কনফারেন্স (জেকেপিসি)।

উপত্যকার অপর ‘তারকা’ কেন্দ্র শ্রীনগর। ২০১৪ সাল বাদ দিলে গত দু’দশকে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন ফারুক বা ওমর আবদুল্লা। এ বার অবশ্য ‘পারিবারিক গড়’ শ্রীনগর ছেড়ে পড়শি কেন্দ্র উত্তর কাশ্মীরের বারামুলার প্রার্থী হয়েছিলেন ওমর। বয়সজনিত কারণে ভোটে লড়েননি শ্রীনগরের বিদায়ী সাংসদ ফারুক। এই কেন্দ্রে লড়াই ছিল মূলত এনসি প্রার্থী তথা শিয়া ধর্মগুরু আগা সৈয়দ রুহুল্লা মেহদির সঙ্গে পিডিপি-র ওয়াহিদ পাররার। আর বারামুলা কেন্দ্রে মুল লড়াই ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমরের সঙ্গে পিপল্‌স কনফারেন্সের প্রধান সাজ্জাদ লোনের। তবে লড়াইয়ে ছিল মেহবুবার দলও। গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল ওমরের দল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল পিপল্‌স কনফারেন্স। এক সময় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন হুরিয়তের সঙ্গে যুক্ত সাজ্জাদ নির্বাচনী প্রচারমঞ্চগুলি থেকে যে ভাবে ওমরকে আক্রমণ করছিলেন, তাতে অনেকেই বিজেপির কথার ‘প্রতিধ্বনি’ শুনেছিলেন। সাজ্জাদ দাবি করেছিলেন, বারামুলা কেন্দ্রের ১০ জন প্রাক্তন সাংসদের মধ্যে ৯ জনই ওমরের দলের সদস্য হলেও উত্তর কাশ্মীরের এই কেন্দ্র উন্নয়নের প্রশ্নে অবহেলিতই থেকে গিয়েছে। ঘটনাচক্রে, উপত্যকার দলগুলি সম্পর্কে একই অভিযোগ বার বার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।

হিন্দুপ্রধান জম্মু লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৪ সাল থেকেই জয় পেয়ে আসছে বিজেপি। এই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ যুগলকিশোর শর্মাকে এ বারেও টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। প্রার্থী বদল করেনি কংগ্রেসও। ২০১৯ সালে যুগলের কাছে পরাজিত রমন ভাল্লাকে এ বারেও টিকিট দিয়েছিল ‘হাত’ শিবির। জম্মুর মতোই পড়শি কেন্দ্র উধমপুরে গত এক দশক ধরে বিজেপির দখলে। গত দু্’বারের মতো এ বারেও এখানকার পদ্মপ্রার্থী ছিলেন বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য জিতেন্দ্র সিংহ। কংগ্রেস এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল চৌধরি লাল সিংহকে। আসন সমঝোতার সূত্র অনুযায়ী জম্মুর দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দেয়নি এনসি। তেমনই ‘ইন্ডিয়া’র স্বার্থে অনন্তনাগ-রাজৌরি, শ্রীনগর, বারামুলায় ফারুকের দলকে সমর্থন জানিয়েছিল কংগ্রেস। এনসি-র প্রতি ‘অভিমান’ থেকে উপত্যকার তিন আসনে আলাদা লড়লেও জম্মু এবং উধমপুরে কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছিলেন মেহবুবা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker