AnalyticsBreaking News

নাগরিকত্ব/৪২ঃ রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় প্রতিটি মানুষের বায়ো-মেট্রিকস থাকা উচিত
Citizenship/42: For the security of the nation, every person must have bio-metrics

২৭ মার্চঃ ৫.৩৯ অবৈধ অনুপ্রবেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে কোনও আন্দোলন হয়েছে কি-না, কমিটি সে রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের ডিজিপি বলেন, অসমের অবস্থাটা পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে অনেক অনেক আলাদা। পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের কোনও পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি।

৫.৪০ বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণ ও বিতাড়নে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, এই প্রশ্নে ডিজিপি জানান, আমি এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশ থেকে বিদেশিরা এলেই ধরা পড়ে যায়, তাদের ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং বিতাড়নও করা হয়।

৫.৪১ ডিজিপি আরও জানান, এখনও আমাদের জেলে কিছু বিদেশি রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার তাদের সে দেশের নাগরিক  বলে মানতে নারাজ। তাই তাদের সীমান্তের ও পারে পাঠানো যাচ্ছে না।

 

৫.৪২ অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিতকরণ ও বিতাড়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কমিটিকে জানায়, ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্টের ৩(২)(সি) ধারা অনুসারে কোনও বিদেশি নাগরিককে বিতাড়নের ক্ষমতা সরকারের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। কোনও বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বসবাস করতে থাকলে তাকে চিহ্নিত করার ও বিতাড়িত করার ক্ষমতা রয়েছে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনের। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণ ও বিতাড়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে এসে বসবাসকারীদের চিহ্নিতকরণ এবং বিতাড়নের একটি নতুন প্রক্রিয়াও গ্রহণ করা হয়েছে। তা রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনকে ২০০৯ সালের নভেম্বরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একবার এর আংশিক সংশোধন হয়।

 

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতেও আরেকবার সংশোধন করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, নিজের এলাকায় বসবাসকারী অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণ, শনাক্তকরণ এবং ধরে আনার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রতিটি জেলায় টাস্কফোর্স তৈরি করা হবে। প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করা হবে, সন্দেহভাজন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের আগে পর্যন্ত ধৃতকে সেখানেই রাখা হবে। ওই প্রক্রিয়ায় সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করতে কাউকে দেখলে বা সীমান্তে ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

৫.৪৩ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আরও জানায়, একজন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে তার দেশে পাঠানোর জন্য ন্যাশনালিটি ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় তার জাতীয়তার পরীক্ষা হবে। তাতে ওই দেশের বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হলেই সরকার তার প্রত্যর্পণের জন্য ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করবে। সব ক্ষেত্রে ন্যাশনালিটি ভেরিফিকেশন ও ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করার বিষয়গুলি বিদেশ মন্ত্রকই দেখে। তা হয় কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের সম্মতির ভিত্তিতে। কারণ নাগরিকত্বের পরীক্ষার সঙ্গে একটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িয়ে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অবৈধ অনুপ্রবেশের ইস্যুটি উত্থাপিত হয়।

৫.৪৪ রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ টেনে আইবি ডিরেক্টর জানান, নিরাপত্তার প্রয়োজনে দেশে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের বায়ো-মেট্রিকস থাকা উচিত। যাতে আমি আমার সম্পর্কে কোনওকিছু দাবি করলে সঙ্গে সঙ্গে তা পরীক্ষা করে নেওয়া যায় যে, আমি ঠিকঠিক বলছি নাকি মিথ্যে বলছি। মিথ্যে বললে, রেকর্ড কী বলছে। আমার মনে হচ্ছে, ভারত তার নাগরিক ও বসবাসকারীদের নথিভুক্তির জায়গায় এখনও অনেক পিছিয়ে। আমি মনে করি, এটা করার জন্য চূড়ান্ত সময় চলছে। শুধু নিরাপত্তার প্রয়োজনে, আরও বহু কারণ রয়েছে।

৫.৪৫ যৌথ সংসদীয় কমিটির নজরে এসেছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশ থেকে যে সব উদ্বাস্তু ভারতে, বিশেষ করে অসমে ঢুকেছেন, তাদের কী হবে, সে নিয়ে জাতীয় নেতাদের অনেকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তারা বিপুল হারে অনুপ্রবেশ নিয়েও সমান চিন্তায়। কারণ অনুপ্রবেশের দরুন রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক অস্থিরতা দেখা দেয়, যার জেরে ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ব্যাপক আন্দোলন হয় এবং সবশেষে ১৯৮৫ সালের ১৫ আগস্ট অসম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির উদ্দেশ্যই হল ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত যারা বাংলাদেশ থেকে অসমে ঢুকেছে তাদের শনাক্ত করা এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে যারা ঢুকেছে তাদের বিতাড়ন করে অসমিয়া জনগণের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও ভাষিক অস্তিত্ব রক্ষা করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker