Barak UpdatesHappeningsBreaking News

উনিশে মে পরীক্ষা! বাতিলের জন্য চাপ সৃষ্টির আর্জি জানাল বরাক বঙ্গ

ওয়েটুবরাক, ১১ এপ্রিল : উনিশ মে একষট্টির অমর ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দল-মতের উর্ধ্বে উঠে বরাক উপত্যকা ও অন্যান্য অঞ্চলের ভাষাপ্রেমী মানুষ দিনভর যে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন  এবার তাতে ছন্দপতন ঘটাচ্ছে অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদ (কাউন্সিল)। ওই দিনটি পরীক্ষার রুটিনের বাইরে রাখার দাবিটি মেনে নেওয়া হবে বলে কথা দিয়েছিল কাউন্সিল৷ কিন্তু তা বাস্তবায়ন না করে নিজেদের পুরনো সিদ্ধান্তে অনড় থেকে যায়৷ তাতে  কাউন্সিল কথার খেলাপ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন ।
শনিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত অভিযোগ করেন, অতীতে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি । প্রতি বছরই কাউন্সিলের তালিকায় দিনটি ‘উদযাপন দিন’ বলে চিহ্নিত ছিল । বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই উপত্যকা জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ সে সম্পর্কে কাউন্সিলের সচিব রমেশচন্দ্র চুটিয়াকে বৃহস্পতিবার ফের ফোনে জানিয়ে দিয়েছেন গৌতমবাবুরা৷ সঙ্গে সতর্ক করে দিয়েছেন, এর ফলে উদ্ভূত যে কোনও পরিস্থিতির দায় এই সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিচালনা প্রতিষ্ঠানের উপরই বর্তাবে।
 বিবৃতিতে দত্ত বলেছেন, চলতি বছরের রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার রুটিনে উনিশ মে  অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের কথা জেনেই বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে পত্র দিয়ে তার প্রতিবাদ জানায়। বলা হয়, ওই দিনটি সর্বাবস্থায়  পরীক্ষার রুটিনের বাইরে রাখতে হবে। এ নিয়ে কাউন্সিলের নড়চড় না দেখে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের বর্তমান ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সব্যসাচী রায়  গুয়াহাটিতে কাউন্সিলের সদর দফতরে গিয়ে সচিব রমেশ চন্দ্র চুটিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে জোরালো দাবি জানান । তাঁর হাতে ফের সম্মেলনের আরেক দফা চিঠি তুলে দিয়ে কেন উনিশ মে পরীক্ষার রুটিনের বাইরে রাখা প্রয়োজন এবং এ সম্পর্কে উপত্যকার মানুষের ভাবাবেগের কথা পরিষ্কারভাবে জানানো হয় । ওই সময়ে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান দফতরে না থাকায় চুটিয়ার হাতে তাঁর চিঠিটিও তুলে দেওয়া হয় । দীর্ঘ আলোচনার পর সচিব বরাক বঙ্গের প্রতিনিধি দলকে জানান , বিষয়টি কাউন্সিলের সভায় সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হবে এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি। কিন্তু এরপরও রুটিন সংশোধনের কোনও পদক্ষেপ নজরে না আসায় সংগঠনের সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য্য ও সাধারণ সম্পাদক দত্ত চুটিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কয়েক দফা কথা বলেন । প্রতিবারই ওই টেলিফোন-আলাপে  সচিব চুটিয়া সদর্থক মনোভাব নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
বিবৃতিতে সাধারণ সম্পাদক দত্ত খেদ ব্যক্ত করে বলেন , কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ তার প্রদত্ত কথা না রেখেই উল্টো উনিশ মে দিনটি উচ্চমধ্যমিক প্রথম বর্ষের  পরীক্ষার রুটিনেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। বিষয়টি নজরে আসার পরই সচিব চুটিয়াকে ফোন করে সম্মেলন তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং উনিশ নিয়ে কাউন্সিল কথার খেলাপ করছে বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া  হয়। সচিব তখন বরাক বঙ্গের সাধারণ সম্পাদককে বলেন , বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করবেন । তবে এ সম্পর্কে সম্মেলনকে পরিস্থিতি জানিয়ে একটি চিঠি দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এই মর্মে সচিব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে দুটি আলাদা চিঠি দিয়ে বরাকের অসন্তোষের কথা জানান সাধারণ সম্পাদক। এ কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে দত্ত বলেছেন, রাজনৈতিক স্তরে এ নিয়ে কোনও চাপ না থাকায় কাউন্সিল তার কথা রাখছে না এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে । এখন পর্যন্ত উপত্যকার কোনও রাজনৈতিক দল এ সম্পর্কে কাউন্সিলকে চাপ দেয়নি । এই প্রেক্ষাপটে উপত্যকা জুড়ে প্রতিবাদের গণ আওয়াজ তোলার জন্য বরাক বঙ্গের তরফে সর্বস্তরের দল, সংগঠনগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে দত্ত জানিয়েছেন, একমাত্র উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ বরাক বঙ্গের অভিমতের কথা সচিব চুটিয়াকে বলে অবিলম্বে রুটিন সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন । অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদেরও এভাবে এগিয়ে আসার জন্য দত্ত বিবৃতিতে আবেদন জানান ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker