Barak UpdatesFeature Story

প্রায়ান্ধ বাপনই প্রদীপ পৌঁছান বরাকের ঘরে ঘরে

৭ নভেম্বরঃ ডানচোখে একেবারেই দেখতে পান না। বাঁ চোখে বড়জোর এক হাত দূরে। সব আলোই তাঁর কাছে প্রায় অন্ধকার। তবু অন্যের ঘরে আলো জ্বালানোর জন্য দিনরাত কাজ করে চলেছেন ৫৪ বছরের বাপন পাল। লক্ষ্মীপূজা বা দেওয়ালির রাতে বরাক উপত্যকার ঘরে ঘরে যত প্রদীপ জ্বলে এর বড় অংশ তাঁরই তৈরি। এ বারও বিভিন্ন বাজারে এরই মধ্যে পৌঁছে দিয়েছেন ১ লক্ষ মাটির প্রদীপ।
ছেলেবেলায় বসন্তে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলেন শ্রীকোণার বাপনবাবু। রঙবৈচিত্র্য একেবারে ধরতে পারেন না। তাহলে মাটির ঢেলাকে কী করে মুহূর্তে প্রদীপ বা লক্ষ্মীর ঘট বানিয়ে ফেলেন? চাকতিটা ঘোরাতে ঘোরাতে বললেন, ‘এ বংশপরম্পরা। ছেলেবেলায় কী করে চাকতির নিয়ন্ত্রণ হাতে চলে আসে, বলা মুশকিল। প্রৌঢ়ত্বেও তাই তাতে সমস্যা হয় না।’
তবু এই পেশায় কতদিন টিঁকে থাকা যাবে শঙ্কায় বাপনবাবু। কারণ? তাঁর কথায়, মাটির প্রদীপের বিক্রি কমে গিয়েছে, এমন নয়। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুপাতে প্রদীপের ব্যবহার বাড়ছে না। অধিকাংশ বাড়িতে এখন টুনিবাল্ব জ্বালায়। প্রদীপ প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকেই পড়েছে। ফলে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। অথচ মাটি কেনা সহ ঘরসংসারের খরচ ক্রমে বেড়ে চলেছে।
তবে নিজে বাজারে ছোটাছুটি করতে পারলে আরও অনেক কাজ করতে পারতেন তিনি। বাড়ত লাভের বহর। কিন্তু চোখের জন্য শুধু বাড়ি থেকেই ব্যবসা করেন। বাপনবাবু তবু খুশি— এই বাজার, সেই বাজার হয়ে তাঁর হাতের প্রদীপ ছড়িয়ে পড়ে বরাকের ঘরে ঘরে!

English text here

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker