Barak UpdatesHappeningsBreaking News
প্রস্তাবিত শিলচর নগরীর সুস্পষ্ট মানচিত্র প্রকাশ করা হোক, লিখেছেন অধ্যাপক দিলীপ কুমার দে
অনেক আবেদন নিবেদন করেও প্রস্তাবিত শিলচর নগরীর সীমানা চিহ্নিত করে শিলচরের দৈনিক পত্রিকাগুলোতে কোনও সুস্পষ্ট মানচিত্র বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করানো গেল না। অথচ ছোট খাটো নানা প্রকল্প শুরু করলেই কোনও মন্ত্রীর রঙিন ছবি নানা আশ্বাসে ভরপুর করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।
শিলচর শহর, শহরতলি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল সহ বরাকের নাগরিকরা মতামত ও পরামর্শ দিবেন কীভাবে? জনাকয়েক ‘বিশিষ্ট’ ব্যক্তিদের অফিসে ডেকে সভা করলেই কি লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রতি কর্তব্য করা হল?
শিলচর নগরীর আকার-প্রকার নিয়ে কোনও বিস্তৃত আলোচনা কোনও সংবাদপত্রে এখন পর্যন্ত হয়নি বললেই চলে। কেবল প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে জানা গেছে যে, দুধপাতিল অঞ্চলের একাংশ অধিবাসী প্রস্তাবিত নগরীতে অন্তর্ভুক্ত হতে চান না। আর এক সংবাদে জানা গিয়েছে, শিলচর নগরীর যে বিস্তার ধরা হয়েছে, তা ‘স্মার্ট সিটি’ হবার যোগ্যতার চেয়ে কম। বঞ্চনার জন্যই নাকি এই ফন্দি আঁটা হয়েছে। শিলচরের বাইরের কোনও এক সংস্থা নাকি আকাশমার্গে জরিপ করে এই সীমারেখা নির্দিষ্ট করেছে।
কিছু ব্যক্তি মতামত ও সুপারিশ করে সরকারের কাছে লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে৷ সুপারিশগুলি হলো :
১। শিলচরের দক্ষিণে একদিকে আইরংমারা, অন্যদিকে সোনাবাড়িঘাট পর্যন্ত নগরী প্রসারিত হোক। এতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ( ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ), ঐতিহাসিক বরমবাবা মন্দির, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়, আইরংমারা বাজার সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও জনবসতি অন্তর্ভুক্ত হবে। মিজোরাম যাবার পথ সোনাই রোড ( মইনুল হক চৌধুরী রোড) নানা অলিগলিকে যুক্ত করে এমনিতেই সোনাবাড়িঘাট পর্যন্ত শহরকে নিয়ে গিয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার ওই পথে রয়েছে ছোট বড় অট্টালিকা নিয়ে।
২। পশ্চিমদিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আইএসবিটি, সুন্দরী মোহন হাসপাতাল, সেন্ট মেরি স্কুল, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় (শ্রীকোনা), আইটিআই, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন, এফসিআই সহ অন্যান্য বহু প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট শ্রীকোনা নতুন অভারব্রিজ পর্যন্ত বিস্তৃত, ঠিক শহরের মতো। এসব তো প্রস্তাবিত শিলচর নগরীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য। অন্যদিকে চেংকুড়ি বাগানের সীমানা পর্যন্ত নগরীর বৃদ্ধি প্রয়োজন।
৩। অরুণাচল রেল স্টেশন এখন জংশন হয়ে গিয়েছে। রেলপথে মণিপুরের সঙ্গে শিলচরকে যোগ করছে। মণিপুর থেকে আগত দ্রুতগামী চেয়ারকার ট্রেনে কম সময়ে আগরতলা পৌঁছতে অনেকেই এখন মাছিমপুর(অরুণাচল) ছোটেন। ভবিষ্যতে নিউ শিলচর রেল স্টেশন করতে হবে ওই দিকটায়। তাই মজুমদার বাজার হয়ে অরুণাচল পর্যন্ত মিলিটারি ক্যান্টনমেন্ট বাদ দিয়ে সমস্ত অঞ্চল প্রস্তাবিত নগরীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। স্মার্ট সিটি হবার জন্য নগরীর বহর বাড়ানো দরকার।
৪। রংপুর হাইস্কুল থেকে মণিপুর রোড হয়ে কাশীপুর পর্যন্ত, উধারবন্দের দিকে রেল ও মহাসড়ক ক্রসিং পর্যন্ত যেভাবে নতুন নির্মাণ চলছে তাতে ওই সব অঞ্চলকে নগরীর বাইরে রাখা অনুচিত হবে।
৫। প্রস্তাবিত শিলচর নগরীর কোথায় কোথায় পার্ক (উদ্যান), খেলার মাঠ, বাজার, পার্কি প্লেস, দীঘি, হাসপাতাল, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নতুন পাঠাগার, বাণিজ্য কেন্দ্র, অফিস পাড়া, বিনোদন কেন্দ্র, উড়ালপুল ইত্যাদি হবে তা সুস্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করতে হবে।
মুক্ত আলোচনা হোক। সবাই মতামত দিন। আমরা আরেকটি ঘিঞ্জি অঞ্চল নয়, পরিকল্পিত নগরী চাইছি। সেজন্য বিস্তৃত মানচিত্র সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন আকারে বরাকের দৈনিক গুলোতে প্রকাশ করা হোক। এখানে রাখঢাকের ব্যাপার নেই , রাজনীতির প্রশ্ন নেই।
(অধ্যাপক দিলীপ কুমার দে সক্রিয়পন্থী প্রবীণ নাগরিক মঞ্চ, শিলচর-এর সাধারণ সম্পাদক)
ফোন ৮৬৩৮৪৯৪২৬৮
(এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন সংবাদপত্রে ইমেলে পাঠানো হয়েছিল। কিছু পত্রিকা মূল বিষয় এড়িয়ে খবর ছেপেছেন। তবুও তাদের ধন্যবাদ।)