Barak UpdatesHappeningsBreaking News
শিক্ষিকা, সমাজকর্মী রিক্তা কর প্রয়াত
ওয়েটুবরাক, ১৩ মেঃ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংগঠনের সার্থক শিক্ষিকা রূপে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত, সমাজকর্মী রিক্তা কর আর নেই। তিনি ২০১৬ সাল থেকে ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন। কাছাড় ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে বেশ সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। আবার পাঠদান করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মাসিমপুর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পরে আবারও একই রোগে আক্রান্ত হন। শেষপর্যন্ত গত ১২ মে বিকাল পৌনে পাঁচটার সময় কাছাড় ক্যানসার হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবার-পরিজন, ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
তিনি অরবিন্দ সোসাইটি, ‘এরা আমাদের’, মৈত্রেয়ী সংঘ, রূপম, গ্রিনস, সরস্বতী স্মারক সমিতি প্রভৃতি বেশ কয়েকটি সামাজিক সংস্থার কাজকর্মের সঙ্গে নিবিড় ভাবে যুক্ত ছিলেন। তার বাড়ি পাবলিক স্কুল রোডে। শিলচর স্বদেশি স্কুলে পড়াশোনার সময় তিনি আসামের বেস্ট ক্যাডেটরূপে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতির সম্মুখে প্যারেডে যোগ দিয়ে সারা ভারতের গার্লস এন-সি-সি’কে কমান্ড করেছিলেন। শিক্ষকতায়ও তিনি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত হন।
শিলচর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ দিলীপ কুমার দে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, রিক্তা কর ছিলেন তাঁর স্কুল ও কলেজের মেধাবী ও পরিশ্রমী ছাত্রী। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে মন:সংযোগ ও অধ্যবসায়কে সম্বল করে তাঁর এই ছাত্রী কর্মজীবনে অসামান্য কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি ছিল তার অপরিসীম স্নেহ। ‘এরা আমাদের’ সংস্থার কর্ণধার ও সহপাঠী নারায়ণী দেব (ভাওয়াল) ব্যক্তিগতভাবে ও সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক ্জ্ঞাপন করে বলেন, নি:সহায় ছেলেমেয়েদের প্রতি রিক্তা করের সাহায্য সহযোগিতা ও ভালবাসা ছিল অকৃত্রিম। কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল সোসাইটির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক নীলমাধব দাস, সদস্য নীহারেন্দুু পরকায়স্থ সহ অনেকে শোক ব্যক্ত করে বলেন, প্রয়াত এই শিক্ষিকা কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতালে সেবাকার্যের জন্য বিভিন্ন সংগঠনকে উদ্বুদ্ধ করতেন।
রূপমেও রিক্তা কর (মিত্র)-র প্রয়াণে শোকের আবহ বিরাজ করে। সাধারণ সম্পাদক নিখিল পাল বলেন, তিনি নব্বইয়ের দশক থেকে রূপমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন।
মৈত্রেয়ী সংঘের শীর্ষনেত্রী সুমিত্রা দত্তের কথায়, “এক যোদ্ধাজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটল। মারণ রোগ দেহে নিয়ে এই অসমসাহসী সমাজের কাজে বিলিয়ে দিয়েছিলেন নিজেকে। জীবন মৃত্যুকে আক্ষরিক অর্থেই পায়ের ভৃত্য করে করোনাকালীন সেবায় নিয়োজিত করেছিলেন নিজেকে। ”