NE UpdatesHappeningsBreaking News

স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুরহস্য: বিক্ষোভ-আলোচনা ধর্মনগরে

ওয়েটুবরাক, ১৫ জুলাই : বামপন্থী ১০টি গণসংগঠনের যৌথ উদ্যোগে বুধবার ধর্মনগর শহরে ভগৎ সিং-এর ভাস্কর্যের পাশে মানবাধিকার কর্মী এবং আদিবাসীদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের নেতা ফাদার স্ট্যান স্বামীকে হেফাজতে রেখে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। পরে সিপিএমের মহকুমা অফিসে কোভিড নির্দেশিকা মেনে স্ট্যান স্বামীর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিমণ্ডলীতে ছিলেন প্রমোদ মালাকার এবং প্রসন্ন ত্রিপুরা।

বিভিন্ন গণসংগঠনের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন প্রাক্তন বিধায়ক অমিতাভ দত্ত, নিরঞ্জন দেবনাথ, হরকুমার নাথ, প্রসন্ন ত্রিপুরা, হাসি ভট্টাচার্য, জ্যোতির্ময় রায়, রঞ্জিত নাথ, সলমন, রমাপদ দে এবং হীরেন দাস। তাঁরা জানান, ৮৪ বছরের বৃদ্ধ স্বামী ছিলেন  ভীষণ অসুস্থ। চশমা ছাড়া একপ্রকার অন্ধ। অথচ জেলে চশমা দিতে আপত্তি ছিল। কানে শুনতেন না। লাম্বার স্পন্ডেলাইসিসের তীব্র ব্যাথায় ভুগছিলেন। তিনি পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত ছিলেন। শক্ত খাবার খেতে পারতেন না। অথচ দীর্ঘদিন তাঁকে তরল খাওয়ার জন্য স্ট্র, এমনকী জলের গ্লাসও দেওয়া হয়নি।

বন্দি অবস্থায় তাঁর কোনও চিকিৎসা হয়নি। বিনা চিকিৎসায় তাঁকে ইচ্ছাকৃত ভাবে খুন করা হয়েছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন। তাঁরা বলেন, জেলখানায় কোভিড আক্রান্ত রোগীদের সাথে রাখা হলেও তাঁর কোভিড টেস্ট করা হয়নি। ভ্যাকসিনও দেওয়া হয়নি। ২৮ মে বোম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর কোভিড ধরা পড়ে।

নিপীড়িত দরিদ্রদের প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে আদিবাসীদের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি দেখেছেন, সরল আদিবাসীদের কীভাবে বাজারে ঠকানো হতো। জমি থেকে উচ্ছেদ করা হতো। বিনা বিচারে দিনের পর দিন আটক করে রাখা হতো। সমস্ত বঞ্চনায় তিনি তাঁদের পাশে ছিলেন৷

বক্তাদের কথায়, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি ভীমা কোরেগাঁওয়ে কয়েক লক্ষ দলিতের সমাবেশ হয়। এই সমাবেশে কতিপয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রবেশ করে তীব্র সংঘর্ষ বাধায়। সংঘর্ষে বহু লোক আহত হয় এবং একজন সাধারণ নাগরিক নিহত হন। ৩ জানুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনা ও মৃত্যুর প্রতিবাদে কিছু দলিত সংগঠন মহারাষ্ট্র বনধ ডাকে। বনধে মহারাষ্ট্র অচল হয়ে যায়।

ভীমাকোরেগাঁওর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফাদর স্ট্যান স্বামী সহ ১৬ জন বুদ্ধিজীবী, গবেষক, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়। বাম নেতাদের দাবি, ধৃতদের সাথে ভীমাকোরেগাঁওয়ে- র কোন সম্পর্ক ছিল না।সরকার আজ পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি। একজন প্রকৃত দেশপ্রমিক মানবাধিকার কর্মী এবং আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের নেতাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে খুন করা হয়েছে৷ তাঁরা ফাদার স্ট্যান স্বামী ‘খুনের অপরাধী’দের শাস্তি দিতে দাবি করেন৷ বলেন, বিভিন্ন জেলে বিনা বিচারে আটক রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে৷ একইসঙ্গে ত্রিপুরায় বাদল চৌধুরী ও পবিত্র করের উপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান তাঁরা৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker