AnalyticsBreaking News
নাগরিকত্ব/৮ঃ গেজেট নোটিফিকেশন হলেও আশ্রিতরা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীইCitizenship/8: Even after Gazette Notification, those who took shelter would be illegal migrants
(যৌথ সংসদীয় কমিটির অনুমোদন লাভের পর নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬ গত ৭ জানুয়ারি লোকসভায় পেশ হয়। ধ্বনিভোটে পাশও হয়ে গিয়েছে এটি। এ বার রাজ্যসভায় ওঠার কথা ছিল। শেষপর্যন্ত তা আনাই হয়নি। তবে সংসদে সুযোগ না থাকলেও বাইরে এ নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকবে। এই প্রেক্ষিতে যৌথ সংসদীয় কমিটি যে ৪৪০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে, ওয়েটুবরাক পুরো রিপোর্ট ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে চলেছে। আজ এর অষ্টম কিস্তি।)
১৮ ফেব্রুয়ারিঃ ১.১২ —-এ বার ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন আরও একবার সংশোধনের প্রস্তাব করা হচ্ছে যাতে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের হিন্দু, শিখ, পারসি, জৈন, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের মধ্যে যারা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বা ধর্মীয় নির্যাতনের ভয়ে বাধ্য হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের যেন আর অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলা না হয়। বরং নাগরিকত্ব আইনের ৬ নং ধারা অনুসারে তাদের যেন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়। ব্যাখ্যা করে বললে, হিন্দু, শিখ, পারসি, জৈন, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর বহু আফগানি, বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি ধর্মীয় নির্যাতনের দরুন বা ধর্মীয় নির্যাতনের ভয়ে বাধ্য হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু ১৯৫০ সালের পাসপোর্ট (এন্ট্রি ইনটু ইন্ডিয়া) রুলসের ৩ নং রুলে বলা হয়েছে, একমাত্র বৈধ পাসপোর্ট ও বৈধ ভিসা থাকলেই কেউ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন। বৈধ নথি ছাড়া কেউ ভারতে প্রবেশ করলে তিনি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। এমনকী, বৈধ নথি নিয়ে প্রবেশ করলেও যদি তার মেয়াদ ফুরিয়ে যায় এবং তিনি ভারতেই বসবাস করতে থাকেন, তাহলেও তাকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলা হবে। আর অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে কোনও সুযোগসুবিধার অধিকারী হবেন না। সে দিকে খেয়াল রেখে ওই ছয় জনগোষ্ঠীর আশ্রিতদের যাতে প্রয়োজনীয় সুযোগসুবিধা প্রদান করা হয় সে জন্য ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গেজেট অব ইন্ডিয়া (এক্সট্রাঅর্ডিনারি)-তে প্রকাশ করে যে, ২০১৫ সালের পাসপোর্ট (এন্ট্রি ইনটু ইন্ডিয়া) অ্যামেন্ডমেন্ট রুলস এবং ২০১৫ সালের ফরেনার্স (অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডার অনুসারে তাদের পাসপোর্ট-ভিসার শর্ত থেকে থেকে ছাড় দেওয়া হল। বরং ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে তারা এসে থাকলে তবে তাদের বসবাসকে নিয়মিত করা হল। তবু ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ছয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলেই বিবেচিত হচ্ছেন।
১.১৩ —–ভারত সরকার এও দেখেছে, এইসব বিদেশিদের মধ্যে অনেকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তারা ভারতের নাগরিকত্বের জন্যে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৫(১)(এ) ধারায় আবেদন করেছেন। এই ধরনের ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সাত বছর ভারতে বসবাস করলেই তাদের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার কথা। কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রমাণের জন্য তাদের মাতা-পিতা যে অবিভক্ত ভারতে জন্মেছিলেন, এর প্রমাণ তারা দেখাতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে পরে তাদের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬(১) ধারায় আবেদন করতে হয়, যেখানে ন্যূনতম ১২ বছর বসবাসের শর্ত রয়েছে।