India & World UpdatesHappeningsBreaking News
নারদ মামলায় গ্রেফতার সুব্রত-ফিরহাদ-মদন-শোভন, কলকাতায় বিক্ষোভ, উত্তেজনা
মুখ্যমন্ত্রীও সিবিআই দফতরে, রাজ্যপালের দিকে তির
![](https://way2barak.com/wp-content/uploads/2021/05/kol.jpg)
ওয়েটুবরাক, ১৭ মেঃ নারদ মামলায় গ্রেফতার করা হল রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্রকে। গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ও।
সোমবার সকাল ন’টা নাগাদ সিবিআইর অভিযান শুরু হয়। প্রথমে ফিরহাদকে তাঁর বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। ফিরহাদ বললেন, ‘‘বিনা নোটিসে আমাকে গ্রেফতার করা হল। তাও স্পিকারের অনুমতি ছাড়া। আদালত দেখবে।’’ কিছুক্ষণ পরেই মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই-র কার্যালয় নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। আনা হয় রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। সেখানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
![Rananuj](https://way2barak.com/wp-content/uploads/2024/06/IMG-20240611-WA0001.jpg)
নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর জন্য গত ৭ মে তাদের অনুমতি দিয়েছিলেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, জানিয়েছে সিবিআই। সকলের বিরুদ্ধেই বিচার প্রক্রিয়া চালানোর অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। সেই অনুমতির ভিত্তিতে দ্রুত চার্জশিটও জমা করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি চলবে তদন্ত প্রক্রিয়া। তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা এসএমএইচ মির্জাও।
সিবিআই-এর বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে, নারদ স্টিং অপারেশনে একাধিক জনপ্রতিনিধি বেআইনি ভাবে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। তদন্তের পর এঁদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, সেই বিষয়েই অনুমতি দিয়েছেন রাজ্যপাল ধনখড়।
রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতারির পর নিজাম প্যালেসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। বেলা গড়াতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সামনের রাস্তা। বিক্ষোভের মধ্যেই ধস্তাধস্তি শুরু হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে। বিক্ষোভকারীরা ইটবৃষ্টি শুরু করলে আরও উত্তপ্ত হল পরিস্থিতি। শেষে ধৃতদের আদালতে পেশ করার বদলে ভার্চুয়াল শুনানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সোমবার বেলা বাড়তেই নিজাম প্যালেসে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা দলীয় পতাকা নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। ভিতরে মমতা বসে পড়েছেন চেয়ারে। তাঁকেও গ্রেফতার করা হোক বলে দাবি তোলেন। জানিয়ে দেন, যতক্ষণ না তাঁকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে তিনি কোথাও যাবেন না। এরপর সময় যত গড়াতে থাকে, ততই লোকের ভিড় বা়ড়তে থাকে নিজাম প্যালেসের সামনে। শেষে বাধ্য হয়ে সামনের রাস্তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। যদিও ভিড় কমার কোনও ইঙ্গিত ছিল না। একটু পর থেকে রাস্তায় বসে পড়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন তৃণমূল সমর্থকরা।
তাঁদের দাবি, বিজেপি ভোটে হেরে প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করেছে। তাঁদের প্রশ্ন, কেন একই অভিযোগে অভিযুক্ত মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীদের গ্রেফতার করা হল না?
এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রীকে আইন মেনে চলতে বললেন রাজ্যপাল ধনখড়। টুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেই তিনি লিখেছেন, ‘আপনাকে আমার অনুরোধ, সংবিধান মেনে চলুন। আইন মেনে চলুন’।
নিজাম প্যালেসের অশান্তির জন্য পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকাকেই ‘দায়ী’ করেন রাজ্যপাল। লেখেন, ‘রাজ্যের এই পরিস্থিতি দেখে আমি উদ্বিগ্ন। মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, দয়া করে সংবিধান এবং আইন মেনে চলুন। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনুরোধ করব পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকেও। এটা খুবই দুঃখজনক বিষয় যে, পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দেখেও প্রশাসন এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি’।
রাজ্যপাল আবার লিখেছেন, ‘প্রতি মিনিটে অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির। অথচ পুলিশ এবং প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছে, আশা করি এই ধরনের আইন-শৃঙ্খলাহীন পরিস্থিতির পরিণতি কী তা আপনি বোঝেন। এটি আসলে সাংবিধানিক পরিকাঠামোর ব্যর্থতা’।
নিজাম প্যালেস চত্বরে সিবিআই অফিস লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার ঘটনার কথাও টুইটারে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। তিনি লেখেন, ‘টিভিতে এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা দেখে আমি তাজ্জব। আমি এ ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তিনি দেখুন, কী ভাবে এই সব ঘটনা ঘটতে দেখেও রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশ স্রেফ দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমার অনুরোধ, রাজ্যে দ্রুত আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যবস্থা করুন’।