NE UpdatesBarak UpdatesHappenings
মুখ্যমন্ত্রিত্বের লড়াই ছেড়ে কোভিড মোকাবিলায় মন দিতে বলল বিডিএফ
ওয়েটুবরাক, ৬ মে : গত ২ মে প্রকাশিত হয়েছে আসাম বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। কিন্তু কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, সেই দড়ি টানাটানিতে আটকে রয়েছে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে এবার সরব হল বিডিএফ৷ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, একই দিনে ফলাফল ঘোষিত হয়েছে পশ্চিম বাংলা নির্বাচনের। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন৷ সেখানে আসামের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এর মূল কারণ, কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন তা নিয়ে সর্বানন্দ সোনোয়াল ও হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মধ্যে প্রতিযোগিতা।
প্রদীপবাবুর অভিযোগ, সরকার ক্ষমতায় না থাকায় বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না৷ এর ফলভোগ করতে হচ্ছে রাজ্যের নাগরিকদের।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন, রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। এই অবস্থায় সরকারি তৎপরতা ও কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। গুয়াহাটিতে ইতিমধ্যে রোগীদের হাসপাতাল শয্যার অভাব দেখা দিয়েছে। কাছাড় জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। গুয়াহাটিতে প্রাক্তন স্বাস্থ্য মন্ত্রী একটি বেসরকারি ভবনে পরিকাঠামো তৈরি করে কোভিড আক্রান্তের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রদীপবাবুর বক্তব্য, শিলচর তথা বরাকেও অদূর ভবিষ্যতে একই অবস্থা হলে রোগীরা যাবেন কোথায় ? যে ৮০০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বিগত সরকারের আমলে সে ব্যাপারেও স্থানীয় সাংসদ সহ সবাই নীরব।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক এদিন আরও বলেন, সারা রাজ্য সহ বরাকেও ভ্যাক্সিনের আকাল চলছে। কোনও বেসরকারি হাসপাতালকে ভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালে গাদাগাদি ভিড় হচ্ছে, যার থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায়না। তিনি আরও বলেন, আগে যেখানে মেডিকেল কলেজ বা সিভিল হাসপাতালে করোনা রোগীদের পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহের জন্য রোগীপ্রতি ৩৫০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, সেখানে এ বার শিলচরের রোগীদের ৬৫ টাকায় ভাত-ডাল-আলুভাজা দেওয়া হচ্ছে। শিলচরের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন রোগীদের ডিম-দুধ ইত্যাদি দেবার জন্য ইতিমধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও একই অবস্থা চলছে।
প্রদীপ বাবু এদিন দেশের সামগ্রিক কোভিড পরিস্থিতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য একমাত্র সরকারি নীতিই দায়ী। তিনি বলেন প্রথম করোনা সংক্রমণের পর অক্সিজেন উৎপাদন থেকে শুরু করে ভ্যাক্সিন, হাসপাতাল শয্যার সংখ্যাবৃদ্ধি, কোভিড প্রটোকল কার্যকর রাখা ইত্যাদি সব বিষয়ে চূড়ান্ত উদাসীনতা দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার ফলে একদিকে কাতারে কাতারে রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন অন্যদিকে সারা বিশ্বের কাছে মাথা হেঁট হচ্ছে ভারতের। সুপ্রিম কোর্ট ,মাদ্রাজ হাইকোর্ট, দিল্লি হাইকোর্ট ইতিমধ্যে নিষ্ক্রিয়তার জন্য কেন্দ্র সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এখন থেকেই সতর্ক না হলে একই অবস্থা হতে পারে এই রাজ্যেও। তাই মুখ্যমন্ত্রীর বিবাদ বাদ দিয়ে কোভিড পরিস্থিতির প্রতি নজর দেবার জন্য অবিলম্বে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।