বরাক বনধে উত্থাপিত দাবি পূরণ না হলে ১ ডিসেম্বর নিষ্প্রদীপ কর্মসূচি

ওয়ে টু বরাক, ২৬ নভেম্বর : বরাক বনধে উত্থাপিত দাবিদাওয়া পূরণে সরকার আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে সাড়া না দিলে ১ ডিসেম্বর নিষ্প্রদীপ কর্মসূচি পালন করা হবে শহর শিলচরে। বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের ডাকা সর্বদলীয় সভায় শনিবার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত পুরো বরাক জুড়ে নিষ্প্রদীপ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

১৮ নভেম্বরের সফল বরাক বনধ পালনের মাধ্যমে বরাকবাসী যে বার্তা দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে বনধের দাবিগুলি পূরণে সরকারকে ২৯ নভেম্বরের মন্ত্রিসভার বৈঠক পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছিল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। এরপরই শনিবার শিলচর পেনশনার্স ভবনে আয়োজিত এক সর্বদলীয় বৈঠকে বিস্তৃত আলোচনার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে কিছু আগাম সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

বিডিএফ এর ডাকা এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কর্মকর্তারা তাঁদের বক্তব্যে বরাক উপত্যকার প্রতি সরকারি বৈষম্য ও উত্তরপূর্বে বাঙালি সহ সংখ্যালঘু অনুপজাতিদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। এরপর আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যে তিনটি দাবিতে বনধ ডাকা হয়েছিল, যদি ২৯ নভেম্বরের মধ্যে সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর তরফে তা মেনে নেওয়া না হয়, তবে প্রথম প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ১ ডিসেম্বর সমগ্র বরাকজুড়ে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নিষ্প্রদীপ কর্মসূচি পালন করা হবে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ-এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, গত ১৮ নভেম্বরের স্বতস্ফুর্ত বনধ পালনের মাধ্যমে যেভাবে বরাকবাসী বঞ্চনা, বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন, যদি শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা তা বুঝতে পারেন, তবে অবশ্যই দাবিগুলির প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন। অন্যথায় এই প্রতিবাদ কর্মসূচি চলবে। তিনি বলে, ১ ডিসেম্বরের কর্মসূচি পালনের পর ধাপে ধাপে পথসভা, ধর্ণা, মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট ইত্যাদি করা হবে। ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি পূরণ না হলে তিনি বরাকের কর্মপ্রার্থী, ছাত্র যুবক সহ আপামর জনগনকে ১ ডিসেম্বরের নিষ্প্রদীপ কর্মসূচি পালন করে সরকারকে প্রত্যাহ্বান জানাবার আবেদন জানিয়েছেন।

বাংলা নবনির্মাণ সেনার পক্ষ থেকে প্রীতম দেব এ দিন বলেন, যদি ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে বরাক থেকে অন্তত ১০০০ প্রার্থীর নিযুক্তির নিশ্চয়তা না দেওয়া হয়, যদি মেঘালয়ে অনুপজাতিদের নির্যাতন রোধে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ ঘোষিত না হয় এবং সুপারি ব্যবসাকে প্রশাসনিক জটিলতা থেকে মুক্ত না করা হয়, তবে বরাকবাসীকে ১ ডিসেম্বরের নিষ্প্রদীপ কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে সরকারকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, তারা তাদের দাবি থেকে একচুলও নড়বেন না। তিনি বলেন, অন্তত আগামী প্রজন্মের স্বার্থে এই কর্মসূচিকে সফল করতেই হবে এবং এই দায়িত্ব সমস্ত বরাকপ্রেমী দল সংগঠন সহ আপামর জনগনকে নিতে হবে।

এ দিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, এআইইউডিএফ, সিপিআই , আমরা বাঙালি, আকসা এবং আম আদমি পার্টির কাছাড় জেলা কমিটির প্রতিনিধিরা। এছাড়া এদিনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে আরও কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।