Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বাঙালিবিরোধী বক্তব্যের জন্য বিজেপি নেতাদের ক্ষমা চাইতে বলল জেলা কংগ্রেস
১৬ ফেব্রুয়ারি: গত ৫ বছর ধরে রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন প্রণয়নের নামে বাঙালিদের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্রের খেলায় মেতেছে বিজেপি দল, সরকার ও তার পৃষ্ঠপোষক আরএসএস। অভিযোগ করেছে শিলচর জেলা কংগ্রেস কমিটি৷ তাদের কথায়, এই চক্রান্ত শুরু হয়েছিলো আশির দশকে আরএসএস ও বিজেপির প্রত্যক্ষ মদতে আসুর বঙাল খেদা আন্দোলনের মাধ্যমে। প্রমাণ স্বরূপ আসাম আন্দোলনে বিজেপির প্রত্যক্ষ মদতের স্বীকরোক্তি করে গেছেন খোদ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তাও শিলচরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বরাকের বিজেপি নেতৃত্বের সামনে। আসাম আন্দোলনে ক্ষতবিক্ষত বাঙালির আত্মাকে আবার যন্ত্রণার স্মৃতি উস্কে দিয়ে অপমান করার জন্য জেপি নাড্ডা ও বরাকের বিজেপি নেতৃত্বকে ক্ষমা চাইতে বলেন তাঁরা৷
জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপকুমার দে ও মুখপাত্র জ্যোতিরিন্দ্র দে গত ২৫ শে ডিসেম্বর আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা স্মরণ করিয়ে দেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দীর্ঘ আন্দোলনকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল সদর্পে বলে গেলেন, আসাম বিশ্ববিদ্যালয় নাকি আসাম আন্দোলনের ফসল! আবারও সেই বরাকের বিজেপি মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কদের সামনে। তাই সর্বানন্দ এবং বরাকের বিজেপি নেতৃত্বকে ক্ষমা চাইতে বলেন তাঁরা৷
তাঁরা মনে করিয়ে দেন ২৬ শে জানুয়ারি মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের ভাষণের কথা৷ আশির দশকের সেই বিভীষিকাময় বঙাল খেদা আন্দোলনের শিকার হয়েছিল একমাত্র বঙ্গভাষী হিন্দু-মুসলমানরা৷ তিনি সেই আন্দোলনকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিলেন ৷ একবারও উচ্চারণ করলেন না বরাকের ভাষাসংগ্রামের শহিদদের কথা। মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যকে তাই জাতিশত্রু বলে উল্লেখ করে কংগ্রেস নেতারা তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেন৷ তাঁদের কথায়, মাত্র দু-চারদিন আগে বিধানসভার অধিবেশনে ঘটে গেল সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। বিশ্বের অন্যতম প্রধান ও রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাংলা ভাষায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধানসভায় বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থকে বিজেপি বিধায়কের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ইউডিএফ বিধায়করা পর্যন্ত বিজেপি বিধায়কের এই আচরণের প্রতিবাদ করলেন, কিন্তু বরাকের বিজেপি বিধায়করা মুখে তালা মেরে বসে রইলেন।
প্রদীপবাবু বলেন, বিজেপি সরকার এমন এক সিএএ লাগু করতে চাইছে যা এনআরসি ছুট বাঙালিদের জন্য আরও বড় বিপদ ডেকে আনছে। ইতিমধ্যেই এনআরসি ছুটদের উপর চাকরি, ট্রেড লাইসেন্স, জমির পাট্টা ইত্যাদিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে।
কংগ্রেস কোনওদিনই জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কাউকেই দেশ থেকে বিতাড়িত করে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়নি। এই দাবি করে তাঁদের আহ্বান, বিজেপির মেকি বাঙালিপ্রেম ও চতুরতায় ভুলবেন না। মনে রাখবেন, শিয়রে শমন, তাই সাধু সাবধান।