ত্রিপুরার রথ দুর্ঘটনায় নতুন কোনও মৃত্যুর খবর নেই, ছড়াচ্ছে গুজব

ওয়েটুবরাক, ২৯ জুন: ত্রিপুরার কুমারঘাটে ইসকনের উল্টো রথে তড়িদাহত হয়ে এ পর্যন্ত সাতজনেরই প্রাণহানি ঘটেছে৷ বৃহস্পতিবার নতুন করে মৃত্যুর কোনও খবর নেই৷ বিভিন্ন মহলে ১৫ জনের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে৷ মহকুমা শাসক সুব্রত কুমার দাশ বলেন, গতকালের ঘটনায় আগুনে জখম ১১ জন কুমারঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁরা এখন স্বাভাবিক আছেন। বৃহস্পতিবার ময়না তদন্তের পর সাতজনেরই দেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের তরফে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত রূপক দাসের পরিবারের তরফ থেকে কুমারঘাট থানায় মামলা করা হয়েছে৷ ওসি শংকর সাহা জানান, রূপক দাসের ভাই পঞ্চম দাস কুমারঘাট থানায় রথযাত্রার আয়োজকদের বিরুদ্ধে এজাহার করেছেন। তাঁর অভিযোগ, আয়োজকদের ভুল ও খামখেয়ালিপনার দরুণ তাঁর পরিবারে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে৷ রূপক দাস ও তাঁর ছেলে রোহন দাস অকালে  প্রয়াত হয়েছেন৷ রথের নির্দিষ্ট যাত্রাপথের বদলে অন্য রাস্তা দিয়ে শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মহকুমা পুলিশ অফিসার কমল দেববর্মা জানিয়েছেন। কুমারঘাট ইসকন মন্দিরের সেবক রাজেশ্বর গোপাল দাস স্বীকার করেছেন, ব্লক চৌমুহনী দিয়ে উল্টো রথ নিয়ে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। তবে রথে লোহার ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, এর জবাবে তিনি বলেন, ভারতের সব জায়গায় ইসকনের রথ লোহা এবং কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। একইভাবে কুমারঘাটের রথটিও নির্মাণ করা হয়েছিল।

ত্রিপুরার উল্টো রথের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেবার ঘোষণা করেছেন। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তার কথা ঘোষণা করেছেন। ষাট শতাংশেরও বেশী আহতদের আড়াই লক্ষ টাকা  আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই ঊনকোটি জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক ও রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য কুমারঘাট এলাকায় গিয়ে  নিহতদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়ে সমবেদনা জানিয়েছেন।