Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বড়খলায় দুই বছর থেকে অসমমালার কাজ ফেলে রাখা, জনগণের দুর্ভোগ চরমে, ক্ষোভ
ওয়েটুবরাক, ১৭ আগস্ট : ‘আসাম মালা প্রকল্পের’ আওতায় রাস্তা সম্প্রসারণ কার্যসূচিতে বরাকের অন্যতম প্রাচীন গ্রাম বড়খলায় চরম দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে৷ সে দিকে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কোনও দৃষ্টি নেই। এ নিয়ে জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
এই প্রকল্পের অন্যতম প্রয়াস হল রাস্তা সম্প্রসারণ এবং রাস্তাকে উঁচু করা। প্রাথমিক ভাবে সম্প্রসারিত অংশটিতে ধান ক্ষেতের মাটি এবং পরে অন্য স্থান থেকে এনে মাটি ভরাট করা হয়েছে৷ এর দরুণ দীর্ঘদিন ধরে জনগণের প্রাত্যহিক চলাফেরায় বিরাট অসুবিধা হচ্ছে৷ তাতে বিভাগীয় বাস্তুকার, আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধি কারও কোনও হেলদোল নেই৷
নিজ বড়খলা প্রথম খণ্ডের সাবেক বাজার এবং বাসস্টেশন সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার স্থানের কাজ প্রায় দুই বছর থেকে অসম্পূর্ণ রেখে দেওয়া হল। এই অংশে একটি বড় মাপের কালভার্টের কাজ শুরু হয়েছিল, তাও কোনও অজ্ঞাত কারণে অসম্পূর্ণ রেখে দেওয়ায় সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই এবং সেই সঙ্গে জাটিঙ্গা নদীতে সামান্য জলস্ফীতি দেখা দিলেই নদীর পশ্চিম পারে বাজার, ঐতিহাসিক নিমাতা মন্দির নিয়ে সম্পূর্ণ বসতি অঞ্চলটি জলমগ্ন হয়ে বছরে তিন-চার বার বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যে অতিরিক্ত জল ইতিপূর্বে কালভার্ট দিয়ে ধানক্ষেতে চলে যেত এখন তা আটকা পড়ে থেকে মানুষের ঘরবাড়ি ডুবিয়ে রাখে। তাছাড়াও সরকারি রাস্তা উঁচু হয়ে যাওয়ায় সমস্ত বসতি অঞ্চলের ঘরবাড়ি নীচু হয়ে গেছে। ফলে পুরো অঞ্চলটি ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। উন্নয়নের জন্য গ্রামবাসীকে নিজস্ব ভূমিতেই প্রায় বাস্তুহারার জীবন যাপনে বাধ্য করার এই প্রয়াসে গ্রামবাসী বিপন্ন বোধ করছেন। অনেকের মন্তব্য, এখানে বুঝি বসবাস করাই অসম্ভব৷
গ্রামের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, হাসপাতালের রোগী, বাজারের মানুষ এবং যাত্রীবাহী মোটরগাড়ি জীবনের ঝুকি নিয়েই চলছে। এ ছাড়াও ধলছাড়া গ্যাস রিফিলিং কেন্দ্রের গাড়ি, মালবাহী ট্রাক, চা বাগানের যানবাহনের আসা যাওয়া তো আছেই। এই কাজ দীর্ঘায়ত করে রাখায় জনগণের মনে তীব্র ক্ষোভ জমে উঠেছে। কাজের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সঞ্জীব দেবনাথ এ দিকে সম্পূর্ণ উদাসীন বলেই এলাকাবাসীর অভিযোগ৷ কার প্রশ্রয়ে তিনি দিনের পর দিন কাজটি অসম্পূর্ণ রেখে দিচ্ছেন, সে প্রশ্নও উঠছে৷ অনতিবিলম্বে এ রাস্তাটিকে চলাচলের উপযুক্ত করা, অসম্পূর্ণ কালভার্টের কাজ শেষ করা না হলে অঞ্চল জুড়ে আন্দোলন সংগঠিত হবে বলে গ্রামের ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। উন্নয়নের নামে গ্রামটিকে ধংস করে দেওয়ার প্রয়াস আর সহ্য হবে না বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা৷
(ছবিটি মোটেও প্রতীকী নয়৷ বড়খলার সড়কে এখন হাঁস, রাজহাঁস ঘুরে বেড়ায়৷ মানুষ চলে কোথাও দোকানের বারান্দা ধরে, কোথাও খানাখন্দের উপর দিয়ে৷)