Barak UpdatesHappeningsBreaking News

মেডিক্যালে খোঁজ নিতে গিয়ে শুনি, তিনদিন আগেই মারা গিয়েছেন বাবা!

//টিংকু দেব//

২৩ অগস্ট: আমাদের বাবার শরীর কিছুদিন ধরে ভাল যাচ্ছিল না৷ গত ১৪ আগস্ট তাঁকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাই৷ প্রথমে কোভিড টেস্ট করানো হয়৷ রেপিড অ্যান্টিজেনে রেজাল্ট আসে নেগেটিভ৷ ওষুধ লিখে দিয়ে ডাক্তাররা বললেন, মেডিক্যালে রাখতে পারি, নইলে বাড়িতে নিয়ে ওষুধ খাওয়ালে হবে৷ আমরা ভাবি, মেডিক্যালে এখন চারদিকে করোনা৷ ওখানে না রেখে বাড়ি নিয়ে গেলেই ভাল৷

ডাক্তাররা জানালেন, আরটিসিপিআর টেস্টের ফলাফল ফোনে জানানো হবে৷ ১৬ তারিখ জানিয়েছেন ঠিকই, সেখানেও নেগেটিভ বলেই শোনানো হয়৷ আমরা নিশ্চিত হলাম, কোভিড নয়৷ কিন্তু পরদিনই মেডিক্যালের টেলিফোন, তিনি পজিটিভ৷ তাঁকে নিতে গাড়ি আসছে৷ আশ্চর্য হই৷ কিন্তু তখন কি আর জানতাম, সামনে আরও কত আশ্চর্য যে অপেক্ষা করছে৷

গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে থাকি, কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা কাটলেও মেডিক্যালের গাড়ি আর আসেনি৷ শেষে আমরাই ১0৮-কে ফোন করি৷ গাড়ি আসে, মেডিক্যাল যাই৷ এবার অবজারভেশন ওয়ার্ডে রেখে দেওয়া হয়৷ রাতে তাঁকে নিয়ে যায় কোভিড ওয়ার্ডে৷ পাকাপাকি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি বাবার সঙ্গে, চিরকালের জন্য৷ মাঝে বুধবার আমার ভাই গিয়েছিল বাবার খবর জানতে৷ ভেতরে ঢোকা বারণ৷ বাইরে থেকেই বলে দেওয়া হল, ভাল আছেন৷ শনিবার আমরা সবাই দল বেঁধে মেডিক্যালে যাই কোভিড টেস্ট করানোর জন্য৷ সবারই রিপোর্ট মেলে নেগেটিভ৷

পরে আমি যাই বাবার খবর নিতে৷ স্বাস্থ্যকর্মীরা কিছুতেই আমায় এগোতে দেয় না৷ তারা বলতে থাকে, তিনি ভাল আছেন৷ আমরা তাকে খাইয়ে দিই৷ আমি সন্তুষ্ট হতে পারলাম না৷ বললাম, বাবাকে না দেখে যাব না৷ হইচইয়ের মধ্যে একজন মহিলা ভেতর থেকে এলেন৷ খাতা খুলে জানালেন, তিনি ১৯ তারিখেই মারা গিয়েছেন৷ হায় রে মেডিক্যাল, হায় রে স্বাস্থ্যবিভাগ! কেউ একবার মৃত্যুর খবরটা পরিবারকে জানানোর ্ প্রয়োজন মনে করলেন না!

(টিংকু দেব শ্রীকোণার ৭৫ বছর বয়সী রণেন্দ্রকুমার দেবের পুত্র)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker