NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
সাত বছর বন্দিদশার পর মানসিক ভারসাম্যহীন অমিতকে হাই কোর্টের ভারতীয় ঘোষণা
ওয়েটুবরাক, ৩ ডিসেম্বর : অরবিন্দ বসু-নীলিমা বসুর সন্তান অমিত বসু বিদেশি৷ লিখিত স্বীকারোক্তিতেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন করিমগঞ্জ ফরেনার্স ট্রাইবুনালের সদস্য-বিচারক ৷ কিন্তু আদৌ অমিত স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিলেন কিনা তা আর খতিয়ে দেখেনি ট্রাইবুনাল৷ সাত বছর পরে অমিতকে ভারতীয় ঘোষণা করে গৌহাটি হাইকোর্ট৷ কাউকে বিদেশি বলার আগে আরও যত্নশীল হতে ট্রাইবুনালকে বলে দিয়েছে৷
ছেলেকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করে গুয়াহাটির নীলিমা বসু পুরনো রায় পুনর্বিবেচনার দাবি জানালে মামলাটি বিচারের জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷ নিম্ন আদালতের রেকর্ড তলব করে বিচারপতি এন কুটিশ্বর সিংহ এবং বিচারপতি এল জামির দেখতে পান, ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি অমিতকে করিমগঞ্জ শহরে দেখতে পেয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়৷ জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে বাংলাদেশি বলে স্বীকার করে নেন৷ পরদিন আদালতে তোলা হলে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির মাধ্যমে আইনজীবী এমএ চৌধুরীকে তাকে আইনি সহায়তার জন্য নিযুক্ত করা হয়৷ কিন্তু ১৪ দিন পর ফের তাকে হাজির করা হলে আইনজীবী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন না৷ সে দিনই তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়৷ পরদিন চূড়ান্ত শুনানি বলে জানিয়ে দেওয়া হয়৷ ২১ জানুয়ারি মামলা উঠতেই চৌধুরী জানান, অমিত সমস্ত দোষ স্বীকার করে নিয়েছে৷ তিনি তার লিখিত স্বীকারোক্তি আদালতে পেশ করেন৷ তা দেখেই বিচারক অমিতকে একবছর সশ্রম কারাবাসের রায় শোনান৷
কিন্তু নীলিমাদেবী অমিতের বার্থ সার্টিফিকেট, স্কুল সার্টিফিকেট এবং মেডিক্যাল সার্টিফিকেট আদালতে পেশ করলে বিচারপতিদ্বয় নিশ্চিত, মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকটি ঘুরতে ঘুরতে গুয়াহাটি থেকে করিমগঞ্জে চলে যায়৷ তাকে দেখেই পুলিশ গ্রেফতার করে৷ এমএ চৌধুরীকে আইনি সহায়তার জন্য নিযুক্ত করা হলেও তিনি তা করেননি৷ তাই নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে অমিতকে তাঁরা ভারতীয় বলেই ঘোষণা করেন৷
তবে রাজ্য সরকারকে এই রায় চ্যালেঞ্জেরও সুযোগ দেওয়া হয়েছে৷ একমাসের মধ্যে তারা এ সংক্রান্ত নথি পরীক্ষা করে দেখতে পারবে৷ ওই সময়সীমায় চ্যালেঞ্জ না জানালে এই রায়ই চূড়ান্ত বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতিদ্বয়৷
ছয় মাস আগেই অবশ্য হাই কোর্ট মানসিক প্রতিবন্ধী অমিতকে মা-বাবার সঙ্গে থাকার অনুমতি দেয়৷ অরবিন্দ বসু, নীলিমা বসু এসে শিলচর ডিটেনশন সেন্টার থেকে অমিতকে বাড়ি নিয়ে যান৷ এ বার হাই কোর্টের ভারতীয় ঘোষণায় পূর্ণ স্বস্তি মিলল৷