Barak UpdatesHappeningsBreaking NewsFeature Story

বাবার কোলে চড়েই মাধ্যমিকে ইটখলার শংকরী

ওয়েটুবরাক, ৩০ মার্চ : বাবার কোলে চড়েই মাধ্যমিকে বসছে শিলচর ইটখলার শংকরী নমঃশূদ্র৷ তার দুটি পা-ই আকারে ছোট, অসমানও৷ ২০০৩ সালে অন্য শিশুর মতো সুস্থই জন্মেছিল শংকরী৷ হাঁটা-চলা, কথা বলা সবই এগোয় স্বাভাবিক গতিতে৷ কিন্তু দেড় বছর বয়সে প্রথম বার পা ভাঙলে সমস্যার শুরু৷ দশ বছরে মোট ছয়বার পা ভাঙে তার৷ ডান পা চারবার, বাম পা দুইবার৷ এক জায়গায়ই‌৷ কেন এমনটা হচ্ছে? ডাক্তাররা পরীক্ষা করে জানালেন, মেয়ে পোলিওতে আক্রান্ত৷ চেন্নাই নিয়ে অপারেশনের পরামর্শ দেন তাঁরা৷ বাবা চিরঞ্জিৎ নমঃশূদ্র পেশায় দিনমজুর৷  বাইরে নিয়ে চিকিৎসার জন্য  এত টাকা কোথায় পাবেন!

তাই মা-বাবার কোলে চড়েই চলতে থাকে পড়াশোনা৷ কিন্তু চিকিৎসাধীন থাকায় দুইবার পরীক্ষায় বসতে পারেনি৷ সে কী মন খারাপ তখন৷ এ বার পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়েই শংকরী বলে, “পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই৷ জানি, কঠিন কাজ৷ তবু এই চ্যালেঞ্জ জিততে হবে৷”

বাড়ির কাছেই স্বামী বিবেকানন্দ বহুমুখী বিদ্যামন্দিরে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে সে৷ এখন দুশ্চিন্তা, মাধ্যমিক পাশের পরে কী হবে? চিরঞ্জিৎ অবশ্য জোরগলায় বলেন, “নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শক্তি নেই তার৷ তবু মেয়ে যতদিন পড়তে চাইবে, আমি কোলে করে নিয়ে যেতে প্রস্তুত৷”

কেমন হচ্ছে পরীক্ষা ? শংকরী বলে, গৃহশিক্ষক রাখার সুযোগ মেলেনি, প্রয়োজনও ছিল না৷ স্কুলের পড়াতেই সবটা হয়ে যেত৷ কিন্তু কোভিডের দরুন অনলাইন পড়া শুরু হলে তার অনেক ক্ষতি হয়ে যায়৷ তবে পাশের ব্যাপারে নিশ্চিত শংকরী৷ জানায়, কষ্ট করেই কভার করার চেষ্টা করছি৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker