Barak UpdatesHappeningsBreaking News
মুখাগ্নি করলেন স্ত্রী শিবাণীদেবীইLast rites performed by wife of Samarendra Bhattacharjee
৬ অক্টোবরঃ বেশিদিনের সংসার নয়। আবার বিবাহবিচ্ছিন্নও হননি তাঁরা। দুজনের কেউ পরে আর বিয়ে-থা করেননি। অপেক্ষা করেছেন যদি আবার ভাঙা সংসার জোড়া লাগে। দু-চারবার চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু হয়নি। তবু স্বামীর মৃত্যুর খবরে স্থির থাকতে পারেননি শিবাণী ভট্টাচার্য। দুপুরেই ছুটে যান শ্বশুরবাড়ি। সমরেন্দ্র ভট্টাচার্যের শবযাত্রা বের হলে গিয়ে বসেন গাড়ির সামনে। সারাক্ষণ শববাহী শকটেই ছিলেন তিনি। শ্মশানে পৌঁছালে এক-দুইজন প্রশ্ন তোলেন, মুখাগ্নি কে করবেন। উত্তর পেতে দেরি হয়নি। সমরেন্দ্র ভট্টাচার্যের দাদা বিশিষ্ট সংস্কৃতপণ্ডিত অমরেন্দ্র ভট্টাচার্য শিবাণীদেবীকে ডেকে বলেন, তুমিই মুখাগ্নি করবে। এ তোমার অধিকার।
শেষ পর্যন্ত তাই হল।
সমরেন্দ্র ভট্টাচার্য ওরফে সমীরবাবুর মৃতদেহে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিধায়ক দিলীপকুমার পাল, বিধায়ক আমিনুল হক লস্কর, প্রাক্তন সাংসদ কমলেন্দু ভট্টাচার্য সহ অসংখ্য জনতা। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সমীরবাবুর দেহ সোজা যায় তাঁর শিলংপট্টির বাড়িতে। সেখান থেকে কংগ্রেস ভবন। কংগ্রেস টিচার্স সেলের জেলা চেয়ারম্যানের মৃতদেহে দলীয় পতাকা দিয়ে সম্মান জানান কংগ্রেসের জেলা সভাপতি প্রদীপকুমার দে। আওয়াজ ওঠে, হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
পরে সমরেন্দ্র ভট্টাচার্যকে নিয়ে যাওয়া হয় ইন্ডিয়া ক্লাবে। মাত্র কিছুদিন আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্লাবের সভাপতি মনোনীত হয়েছিলেন। বাদল দে সহ প্রচুর কর্মকর্তা-সদস্য তাঁদের সভাপতিকে শেষশ্রদ্ধা জানান।
সেখান থেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। শহরের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে সেখানে তাঁর মৃতদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড়, সাধারণ সম্পাদক সুবিমল ধর, সহ সম্পাদক বিজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ, অজয় চক্রবর্তী, সুজয় দত্তরায়, সুজন দত্ত, নিরঞ্জন রায়, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের জেলা সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী, আঞ্চলিক সহসভাপতি অমিত শিকিদার, সম্পাদক উত্তমকুমার সাহা, সহ সম্পাদক শৈবাল গুপ্ত ও প্রদীপ দাস, টাউন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নন্দদুলাল রায়, মন্টু শুক্লবৈদ্য, তপন দাস ও বাচ্চু দত্তবিশ্বাস, বিজয়ী সংঘের পক্ষে রূপু চন্দ, ইটখলা এসির সভাপতি অনুপকুমার সিংহ, দেবেন শুক্লবৈদ্য, বিবিসি ক্লাবের পক্ষে সুশীল বণিক, শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমির সভাপতি এসবি দত্ত, সম্পাদক শ্যামল দাস, আশিস গুপ্ত, শিলচর স্পোর্টিং ক্লাবের সম্পাদক রতন সিংহ, ইউনাইটেড ক্লাবের পঙ্কজ পাল, প্রশান্ত পাল, পৃথ্বিশ পাল, শিলচর সরকারি বালক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পক্ষে হারান দাস সমীরবাবুর প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানান।
জেলা কর্মচারী পরিষদের পক্ষ থেকে পান্না পালের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল তাঁকে চিরবিদায় জানায়। শ্রদ্ধা জানানো হয় বরাক উপত্যকা ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার পক্ষ থেকেও। নরসিং স্কুলেও প্রাক্তন অধ্যক্ষ, পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সভাপতিকে পুষ্পস্তবকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। স্কুলের প্রাক্তনীদের পক্ষে অমরনাথ খান্ডেলওয়াল, সুভাষচন্দ্র পাল, ডা. অজিত ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি পাল, শঙ্কর দাস, আশুতোষ দে, কৃষ্ণেন্দু রায়, ডাঃ রাজীব কর, সুবীর ভট্টাচার্য, সুরজিত সোম, শুদ্ধসত্য চৌধুরী, মৃদুল দত্ত সহ বহু প্রাক্তন ছাত্র শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন। শ্মশানে যান বীরব্রত রায়, সাধন পুরকায়স্থ, রাজু পাল প্রমুখ। প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায় সমরেন্দ্র ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থা প্রাক্তন সবসভাপতির মৃত্যুতে শনিবার তাদের সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত রাখে। বন্ধ থাকে প্রশিক্ষণও।