মিছিলে আপত্তি, বরাকের দুই আসন কেটে নেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার শিলচরে ধিক্কার সমাবেশ

ওয়েটুবরাক, ১৯ সেপ্টেম্বরঃ ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়ার নামে বরাক উপত্যকার দুটি আসন কমিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় কমিটি আগামী বুধবার শহিদ ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে ধিক্কার সমাবেশের ডাক দিয়েছে৷ মঙ্গলবার কমিটির পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই সমাবেশ চলবে৷ সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্থ বলেন, বরাক উপত্যকার জনগণ দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা আসন কমিয়ে দেওয়াকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। মুখ্যমন্ত্রী মুখে যাই বলুন না কেন, তিনি পরোক্ষ ভাবে পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ আটকে দিতে চাইছেন।

সংগঠনের সম্পাদক কিশোর কুমার ভট্টাচার্য বলেন, পুলিশ প্রশাসন ২০ সেপ্টেম্বর ধিক্কার মিছিল আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। তারা বলছে, সুপ্রিম কোর্টে যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন, তাই এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করা যাবে না।

এই যুক্তির কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই বলেই মন্তব্য করেন কিশোরবাবু। তাঁর কথায়, ডিলিমিটেশনের খসড়া প্রকাশের পর বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছিল অথচ মামলা চলাকালীন সময়েই নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সুপ্রিম কোর্টের মামলা চলাকালে কমিশনের বিজ্ঞপ্তি জারির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট কিছু বলেনি। এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট, সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি বিচারাধীন থাকলেও এটা নিয়ে যে কোনও ধরনের কিছু করতে তাদের কোনও আপত্তি নেই।

সংগঠনের সম্পাদক সঞ্জীব রায় বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সংগঠনের চেয়ারম্যান তপোধীর ভট্টাচার্য ও তাঁকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে ডিআইজি’র উপস্থিতিতে বলে দেওয়া হয়, ২০ সেপ্টেম্বরের ধিক্কার মিছিলের অনুমতি দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে তারা গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা সহ বিভিন্ন বিষয় জোরালো ভাবে উত্থাপন করলে পুলিশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে শেষ পর্যন্ত ধর্নার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, আগামীকালের ধর্না আয়োজনের বিস্তারিত তথ্য লিখিত ভাবে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসিকে জানিয়েছেন।

ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চন্দ্র নাথ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যে এসব হচ্ছে তা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। নিজেদের নির্বাচনী স্বার্থে ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে আনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সম্পাদক হিল্লোল ভট্টাচার্য, হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি সিহাবউদ্দিন আহমেদ, এসইউসিআই ( কমিউনিস্ট ) দলের ভবতোষ চক্রবর্তী, ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি’র প্রদীপ নাথ, সিআরপিসিসির কাছাড় জেলা সম্পাদক মধুসূদন কর, সিপিআইর লোকনাথ দেবরায়, এআইইউডিএফ-এর নবদ্বীপ দাস, হিন্দুস্থানী পরিষদের বীরভদ্র সিং প্রমুখ। সংগঠনের পক্ষ থেকে এও বলা হয় যে আগামীকালের ধর্নায় সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পাৰ্টি,  প্রস্তাবিত ডিলিমিটেশন বিরোধী মঞ্চ, নাগরিক স্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ, সারা আসাম হরিজন উন্নয়ন সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলার সর্বস্তরের জনসাধারণকে উপস্থিত থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে।