Barak UpdatesHappeningsBreaking News

পিতার জন্মদিনে স্কুল তৈরি করে শ্রদ্ধার্ঘ রূদ্রনারায়ণের

ওযেটুবরাক, ২৪ মার্চঃ পুত্রের স্মৃতিতে ডা. রাহুল গুপ্ত গড়ে তুলেছিলেন রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজ। আর আজ ডা. রাহুল গুপ্তর ৮২-তম জন্মদিনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আরেক ছেলে রুদ্র নারায়ণ গড়ে তুললেন ডা. রাহুল গুপ্ত (ডিআরজি) ড্রিম স্কুল। যে স্কুল প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন ডা. গুপ্ত, সেই স্কুলে এখন জীবন গঠনের স্বপ্ন দেখবে শত শত শিশু, কিশোর এবং তাদের অভিভাবকরা।

এ যে আর পাঁচটি বেসরকারি সিবিএসই স্কুলের মতো নয়, একে ঘিরে বিরাট স্বপ্ন দেখছেন রুদ্র নারায়ণ ও তাঁর মাতৃদেবী নন্দিতা গুপ্ত, তা উদ্বোধনী পর্বেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ফিতা কেটে সদ্য নির্মিত স্কুলভবনের উদ্বোধন করেন তিন উপাচার্য — আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজীবমোহন পন্থ, হোজাইর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবেন্দ্র দত্ত চৌধুরী এবং ত্রিপুরার মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাস দেব। শুরুতে রামানুজ গুপ্ত মেমোরিয়াল চেরিটেবল ট্রাস্টের পতাকা উত্তোলন করেন ট্রাস্টের সচিব নন্দিতা গুপ্ত। উপস্থিত ছিলেন ডা. সুজিত কুমার নন্দী পুরকায়স্থ, সীতালক্ষী কান্নান, অতীন দাশ প্রমুখ।

ট্রাস্টের সভাপতি রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত জানান, তাঁর দাদা রামানুজ ইঞ্জিনিয়ার করে সবে বাড়ি এসেছিলেন। কিছুদিনের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। সেটা ১৯৯৭ সালের ১৪ নভেম্বর । ডা. রাহুল গুপ্ত সহ গোটা পরিবার ভেঙে পড়ে। এক বছরের মধ্যে তাঁর স্মৃতিতে ট্রাস্ট তৈরি করে জুনিয়র কলেজ শুরু করেন তাঁরা। মাত্র ৩০ ছাত্র নিয়ে বিজ্ঞান শাখার মাধ্যমে কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন আসন সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ানো হচ্ছে, এর পরও তিনগুণ আবেদন আসে। পরে কলা শাখাও শুরু হয়। রুদ্র নারায়ণ গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন, নাসা, ইসরোতেও রামানুজের প্রাক্তনীরা রয়েছেন।

রুদ্র গুপ্তের কথায়, জুনিয়র কলেজে ভালো ফলাফল করতে হলে ছাত্রদের স্কুল থেকেই সঠিক ভাবে গড়ে তোলা প্রয়োজন। ওই প্রয়োজনীয়তা থেকে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠা হয় রামানুজ বিদ্যামন্দির। সেখান থেকে ৯০-৯৫ শতাংশ পড়ুয়া প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করে।

২০১৬ সালে ডাঃ রাহুল গুপ্ত প্রয়াত হলেন। পরের বছরেই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ডিগ্রি কলেজ শুরু করেন পুত্র রুদ্র নারায়ণ। কিন্তু তাঁর পিতা ডে-বোর্ডিঙ স্কুলের কথা ভাবতেন! সেই ভাবনাকে সামনে রেখেই রুদ্র নারায়ণের নেতৃত্বে চেরিটেবল ট্রাস্ট তৈরি করে এই নতুন স্কুল ডিআরজি ড্রিম স্কুল। একে তারা এমনভাবে সাজিয়ে তুলছেন যাতে এখানে আসা পড়ুয়ারা বাড়িতে থাকার অনুভব বোধ করেন। তাই স্পোর্টস কমপ্লেক্স, সুইমিং পুল, স্মার্ট ক্লাশ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

শুরুতে সিবিএসই কোর্সে এলকেজি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাশ হলেও ধীরে ধীরে একে সার্বিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রূপ দেওয়া হবে। জব মার্কেটে নজর রেখে বিষয় ঠিক করা হবে। থাকবে কৃষি শিক্ষাও, জানান রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত।

সোমবার উদ্বোধনী পর্বের দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল ‘নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে বিদ্যালয় শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষা’ শীর্ষক প্যানেল ডিসকাশন। তাতে অংশ নেন দুই উপাচার্য অধ্যাপক মানবেন্দ্র দত্ত চৌধুরী এবং ত্রিপুরার মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিভাস দেব। মডারেটর হিসেবে ছিলেন দীপ্তিমান বিশ্বাস।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker