India & World UpdatesHappeningsBreaking News
কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের পেনশনে কী কী বদল আসছে
ওয়েটুবরাক, ২৭ আগস্টঃ ইউপিএস, এনপিএস এবং ওপিএসের মধ্যে ফারাকটা ঠিক কোথায়?
ইউপিএসে মূলত তিনটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল— নিশ্চিত পেনশন, নিশ্চিত পারিবারিক পেনশন এবং নিশ্চিত ন্যূনতম পেনশন।
নিশ্চিত পেনশনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের কর্মজীবনের শেষ এক বছরের গড় মাসিক বেতনের (বেসিক) ৫০ শতাংশ পেনশন হিসাবে পাবেন। তবে এই সুবিধা পেতে এক জন কর্মীকে কমপক্ষে ২৫ বছর চাকরি করতে হবে। তবেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন তিনি।
নিশ্চিত পারিবারিক পেনশনের অধীনে সুবিধা পাবেন সরকারি কর্মচারীদের পরিবার। যদি কোনও পেনশনভোগী মারা যান, তবে তাঁর মৃত্যুর সময় তিনি যে পরিমাণ পেনশন পেতেন তার ৬০ শতাংশ পেনশন হিসাবে পাবেন তাঁর পরিবারের লোকেরা।
পাশাপাশি, নতুন প্রকল্পের অধীনে আরও একটি সুবিধার কথা বলা হয়েছে। তা হল— নিশ্চিত ন্যূনতম পেনশন। এই প্রকল্পের আওতায় যদি কেউ ১০ বছর চাকরি করে ছেড়ে দেন, তবে তিনি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে পেনশন পাবেন।
পাশাপাশি, সরকারি কর্মীরা যেমন গ্র্যাচুইটি পেতেন তেমন পাবেন। ইউপিএসের কোনও প্রভাব তার উপর পড়বে না।
অন্য দিকে, এনপিএস হল একটি ঐচ্ছিক সঞ্চয় প্রকল্প। এই প্রকল্পে পেনশনের পরিমাণের কোনও নিশ্চয়তা নেই। এনপিএস তহবিলে প্রতি মাসে কর্মীদের বেতনের একাংশ জমা পড়ে। টাকা জমা করেন নিয়োগকর্তাও। ৬০ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পরে কর্মীরা এনপিএস তহবিলের ৬০% তুলে নিতে পারেন।
বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ এমন ভাবে লগ্নি করা যায়, যাতে প্রতি মাসে তার থেকে পেনশন মেলে। এতে শেষ বেতনের প্রায় ৩৫% মেলার কথা। অর্থাৎ, অবসর নেওয়ার পরে কর্মীকে নিজের পেনশন তহবিলের একাংশ দিয়ে অ্যানুইটি কিনে সারা জীবনের পেনশনের ব্যবস্থা করতে হয়। যা থেকে নিয়মিত পেনশন পান তিনি। এতে পেনশন প্রকল্পের তহবিলে কর্মী তাঁর বেতনের ১০% জমা দেন। সরকার দেয় ১৪%।
এনপিএসের আওতায় কর্মীরা তাঁদের চাকরি বদলানোর পরেও অ্যাকাউন্ট চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এনপিএস নিয়ন্ত্রণ করে পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রক৷
আয়কর আইনের ধারা ৮০ সিসিডির অধীনে কর্মীরা এনপিএসে সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে কর সুবিধাও পেতে পারেন।
২০০৪ পর্যন্ত চালু ছিল ওপিএস। শেষ প্রাপ্ত বেতন এবং মোট চাকরি-বর্ষের উপর ভিত্তি করে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত পেনশনের সুবিধা দিত এই ব্যবস্থা। উল্লেখ্য, পুরনো পেনশন প্রকল্পে সরকারই পুরো পেনশনের ব্যবস্থা করত। কর্মীদের টাকা জমা করতে হত না।
২০০৩ সালে এনডিএ সরকারের আমলে তা বন্ধ হয়। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হয় এনপিএস। ২০০৪ সাল থেকে চালু হওয়া নতুন ব্যবস্থায় রাজ্য সরকার একাংশ টাকা দিলেও, কর্মীকে পেনশনের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হয়।
সেই এনপিএস-ও এ বার বদলে যাচ্ছে। আসতে চলেছে ইউপিএস। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার জানিয়েছে, ইউপিএস চালু করলেও সরকার পুরোপুরি আর্থিক সংস্কারের পথ থেকে সরে আসেনি। পুরনো পেনশন প্রকল্প বা ওপিএস ফিরিয়ে আনা হয়নি। সেখানে পেনশনের পুরো বোঝাই সরকারের ঘাড়ে চাপত।
তার বদলে ভারসাম্য রেখে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য অবসরের সময় মূল বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এনপিএসে ছিল না। কিন্তু ইউপিএসে আগের মতোই কর্মীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ জমা করতে হবে। শুধু কেন্দ্র নিজের ভাগ ১৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৮.৫ শতাংশ করবে।