NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News

অভিমান অনেকের ওপর, কবীন্দ্রবাবু জানালেন, অভিযোগ শুধু রাজদীপের বিরুদ্ধে

''কণাদকে বলেছি, এখন রোজগারে মন দাও''

ওয়েটুবরাক, ৭ মার্চঃ শুক্রবারই জানিয়ে রেখেছিলেন, ছেলে কণাদের টিকিট না পাওয়ায় তিনি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। কেন পেলেন না, রবিবার এ ব্যাপারে সব বলবেন। প্রচার মাধ্যমের সবাই অধীর আগ্রহে ছিলেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ বোমা ফাটাবেন, অপেক্ষায় ছিলেন অন্যরাও।

রবিবার বিকাল সাড়ে তিনটায় নিজের নতুনপট্টির বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কবীন্দ্রবাবু। বললেন, তিন-তিনবার কণাদ (পুরকায়স্থ) দলীয় মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করেছেন। দুইবার তিনি নিজে তাতে জড়াননি। এ বার মনেপ্রাণে চেয়েছেন। কথা বলেছেন নেতাদের সকলের সঙ্গে। সবাই নিশ্চিত থাকতে বলেছিলেন। শেষপর্যন্ত মিলল না।

সে জন্য অনেকের ওপর তাঁর অভিমান রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ একজনেরই বিরুদ্ধে। তিনি শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়। কবীন্দ্রবাবুর কথায়, তাঁর বাবা বিমলাংশু রায় বিজেপির জন্মের পর দলে আসতে চাইছিলেন না। নতুন দল, ভবিষ্যৎ কী হবে বুঝতে না পেরে ১৯৮০ সালে তাঁর অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বিমলবাবু। দলে যোগ দেন এক বছর পরে।  ১৯৯১ সালে দাঁড়ানোর সময়েও ভরসা করতে পারেননি। তাই পায়ের চোট নিয়ে কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন। মনোনয়ন পত্রটা সই করে যেতে বললে রাজি হননি। সে বার সমরেন্দ্র সেন দাঁড়ান, তিনিই বিধায়ক হন। কিন্তু ৯৬-র ভোটে দাবি ছাড়তে চাননি বিমলবাবু।  সমরেন্দ্র সেনকে বসিয়ে তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। সমরেন্দ্রবাবু সে দিন তা মানতে পারেননি। কবীন্দ্রবাবুকে মুখের ওপর বলে দিয়েছিলেন, “আমি আপনাকে অভিশাপ দিলাম।”

রাজদীপের কী দোষ? প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বললেন, তিনিই প্রার্থী বাছাই কমিটির বৈঠকে বলেছেন, শিলচরে দীপায়ন চক্রবর্তীকে টিকিট দেওয়া না হলে তিনি সাংসদ পদে ইস্তফা দেবেন।

ফের অতীতে ফিরে যান ৯২ বছরের কবীন্দ্রবাবু। তবে খুব দূরে নয়। জানালেন ২০১৯ সালের কথা। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, ফণীন্দ্রনাথ শর্মা ও কৌশিক রাই তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন। রাজদীপকে জেতানোর আর্জি জানান। হিমন্ত সেদিন নিজেই বলেছিলেন, “আপনাকে ভাবতে হবে না। কণাদকে এমএলএ বানানো আমার দায়িত্ব।” রাজদীপের ভোটের প্রচারে তিনি পূর্ণ ঝাঁপিয়েছিলেন। নাড্ডার সঙ্গে এখানে এসেও হিমন্ত বলেছেন, “অমিত শাহ কণাদের নামে সায় জানিয়েছেন। আর চিন্তার কিছু নেই।” কিছুদিন আগে কবীন্দ্রবাবু গুয়াহাটি গিয়েছিলেন। ছিলেন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যর সরকারি আবাসনে। হিমন্ত-ফণী দেখা করতে যান। বলে আসেন, “কণাদের টিকিট পাকা।” তিনি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও প্রদেশ সভাপতি রঞ্জিতকুমার দাসের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁরাও একই কথা শোনান তাঁকে।

এর পর শেষ চালে বাজিমাত করলেন রাজদীপ রায়। অত্যন্ত ক্ষিপ্ত কবীন্দ্র পুরকায়স্থ শোনান,  “রাজদীপকে আমি অন্তত ২০দিন কণাদের ব্যাপারে বলেছি। সে বারবার বলেছে, চিন্তা করো না, জেঠু।”

অভিমান ভরা গলায় বৃদ্ধ বিজেপি নেতা শোনান, “ভীষ্ম পিতামহ বলা হচ্ছিল আমাকে। মা ছুঁয়ে প্রণাম করা হতো। এখন বুঝতে পারছি, সবই ছিল লোকদেখানো। আসলে পুরনো বিজেপিদের পরিত্যক্ত করা হচ্ছে।”

এখন কী কর্মসূচি আপনাদের? প্রশ্নের ইঙ্গিতটা বুঝে নিতে কষ্ট হয়নি রামকৃষ্ণনগর বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন অধ্যক্ষের। বললেন, “পার্টি আমি ছাড়ব না। এই পার্টি আমি গড়েছি। পার্টি ছাড়ব কেন? এই পার্টির মালিক আমি।”

আর কণাদ? কবীন্দ্রবাবুর জবাব, “তাঁকে বলেছি, এখন রোজগারে মন দাও।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker