Barak UpdatesCultureBreaking News
একালের বাসন্তী পুজো : আজও মুক্তির স্বাদ খুঁজে ফুল্লরারা, লিখেছেন ভাস্কর জ্যোতি দাস
![](https://way2barak.com/wp-content/uploads/2019/04/Basanti-Puja.jpg)
![Rananuj](https://way2barak.com/wp-content/uploads/2024/06/IMG-20240611-WA0001.jpg)
–ভাস্কর জ্যোতি দাস–
শিক্ষক, বিক্রমপুর হাইস্কুল।
“আশ্বিনে অম্বিকা পূজা করে জনে জনে।
ছাগল মহিষ মেষ দিয়া বলিদানে।।
উত্তম বসনে বেশ করয়ে বনিতা।
অভাগী ফুল্লরা করে উদরের চিন্তা।।”
২১ এপ্রিল: এ উচ্চারণ মধ্যযুগের। কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, চন্ডীমঙ্গল কাব্যগ্রন্থের অমোঘ শব্দবন্ধ। এখন আশ্বিন নয়, চলছে চৈত্র মাস। দেবী আরাধনার সময়, বসন্ত ঋতু বাসন্তী পুজোর সঠিক সময়। যদিও মধ্যযুগ থেকেই, অকালবোধনের আড়ম্বরতা, সঙ্গে প্রকৃতির কৃপাদৃষ্টি, আশ্বিনের পুজোকে সর্বজনীন উৎসবে পরিণত করেছে । তবে এতে কিন্তু বাসন্তী পুজোর গুরুত্ব মোটেও কমেনি, বরং অভিজাত বাঙালির ঘরে ঘরে আরাধনা হয় দেবীর।
![No description available.](https://scontent.fgau4-1.fna.fbcdn.net/v/t1.15752-9/175913972_829230457802111_3799897751645773983_n.jpg?_nc_cat=107&ccb=1-3&_nc_sid=ae9488&_nc_ohc=2HI5vCCq96QAX__iFGb&_nc_ht=scontent.fgau4-1.fna&oh=4b7af7e1076c101a1cefe7f6faca72ca&oe=60A3E163)
ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, দেবী ভাগবতপুরাণ, দেবী মাহাত্ম্যম্, কৃত্তিবাসী রামায়ণ এ সবের মধ্যে দেবী আরাধনার নানা গল্প আখ্যান বর্ণিত আছে। এর মধ্যে মহিষাসুর দমনের আখ্যান জনমানসে বহুল প্রচলিত। স্মরণাতীত কাল থেকে চলে আসা দেবীর আরাধনা, বাঙালি সংস্কৃতির পটচিত্রে গ্রথিত হয়ে আছে।
কিন্তু, এতো বছরের আরাধনার পরও বাঙালির সংকল্প সার্থক হয়নি আজও। শুভ অশুভের লড়াই শেষে শুভ বিজয়ী হয়, দেবীর বিজয় উৎসবে মেতে ওঠে সবাই। কিন্তু উৎসবের আলো মধ্যযুগেও সবাইকে স্পর্শ করতে পারেনি, একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক জগতেও অবস্থা সেই। সেকালের ফুল্লরার যাপিত জীবনের যন্ত্রণা, আর একালের ফুল্লরাদের যাপিত জীবনের যন্ত্রণার মধ্যে মৌলিক কোনও পার্থক্য নেই। প্রদূষনের কারণে ঋতু বসন্তের রূপে পরিবর্তন এসেছে, দেবী বাসন্তী ছোঁয়া পেয়েছেন আধুনিকতার, আলোর রোশনাই বেড়েছে কয়েকগুণ। শুধু বাঙালির যন্ত্রণার অন্ধকারের রং পাল্টায়নি।
“নাগরিক” প্রমাণে ব্যস্ত বাঙালি আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রতি বসন্তে আরাধনা করে বাসন্তী দেবীর। দেবী অন্ধকারকে বধ করে আলো স্থাপন করবেন এই আশায়। বাঙালি আশীর্বাদধন্য হবে, অভিশাপ মুক্ত হবে আধুনিক ফুল্লরা।