Barak UpdatesHappeningsBreaking News

বাঙালি আবেগের গুরুত্বই নেই বিজেপির কাছে, অভিযোগ সুস্মিতার

১৫ জানুয়ারি: বিজেপি নেতাদের বাঙালির প্রতি কোনও দরদ নেই৷ বাঙালির আবেগের কথা তাঁরা মোটেও ভাবেন না৷ শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এই অভিযোগ করেছেন শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার বক্তৃতার উল্লেখ করে জানতে চান, বিজেপির বাঙালি ভোটাররা কীভাবে নিচ্ছেন এই ধরনের কথাবার্তাকে?

তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসে বলে গিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় আসাম চুক্তির ফসল। অথচ বরাক উপত্যকায় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার চরম বিরোধী ছিলেন তৎকালীন আসু নেতৃত্ব৷ সর্বানন্দ সোনোয়াল তখন ওই ছাত্র সংগঠনেরই নেতা ছিলেন৷

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সোমবার শিলচরে এসে আসাম আন্দোলনের যে গুণগান করে গেলেন, এ নিয়েও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান সুস্মিতাদেবী। তাঁর কথায়, আসাম আন্দোলন ছিল বাঙালি বিদ্বেষী। স্লোগানই ছিল, বাঙালি খেদাও। নিগৃহীত হয়েছিলেন কত বাঙালি! বিজেপির বাঙালি ভোটাররা কি সে সব দিন ভুলে গেলেন, জানতে চান তিনি৷

অসমে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এনআরসিকে বড় ইস্যু করছে কংগ্রেস। সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী সুস্মিতা দেব বুধবার বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে বঙ্গভাষীদের দুর্ভোগ বাড়বে। কারণ তাদের সরকার হলফনামা করে শীর্ষ আদালতে জানিয়ে দিয়েছে, নতুন করে এনআরসি করতে চায় তারা।একবার এনআরসি করতে গিয়ে মানুষের যে কী দুর্দশায় পড়তে হয়েছিল, সে সব স্মরণ করান সুস্মিতাদেবী। তিনি বলেন, শিশুকোলে কত মা-কে তিন-চারশো কিলোমিটার দূরে ছুটে যেতে হয়েছে নথি পরীক্ষার জন্য। নথিপত্র সংগ্রহ করতে গিয়েও কী হয়রানি সইতে হয়েছিল! রেহাই পাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও৷ কেউ গরু বিক্রি করে, কেউ জমি বন্ধক রেখে টাকা হাতে রেখেছেন। পরে দফায় দফায় গাড়ি ভাড়া করে এনআরসি-র জন্য ছুটোছুটি করেছেন। আরও একবার এনআরসি মানে আবারও সেই ছুটোছুটি, জানান সুস্মিতা দেব।

আর কংগ্রেস সরকার গড়লে? তাঁর দাবি, এ ব্যাপারে দল ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ক্ষমতায় এসে এনআরসি কার্যকর করবেন। তিনি বলেন, মানুষের দুর্দশার কথায় তাঁরা যেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন, তেমনি রয়েছে সরকারি তহবিলের কথা। কোটি কোটি টাকা খরচ করে এনআরসি তৈরি হয়েছে। কিছু দোষত্রুটি থাকলে তা শোধরানোর উপায় বার করতে হবে। তাই বলে একেবারে বাতিল করা যায় না।

সুস্মিতাদেবী বলেন, এনআরসি-কে ঝুলিয়ে রেখে একদিকে যাদের নাম উঠে গিয়েছে, তাদের নতুন উৎকণ্ঠায় ফেলা হচ্ছে। অন্যদিকে এনআরসি থেকে বাদ পড়া উনিশ লক্ষ মানুষকে নাগরিকত্বের দাবি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে যাঁরা প্রকৃত ভারতীয়, তাঁরা ফরেনার্স ট্রাইবুনালে গিয়ে নথিপত্র দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে এনআরসি-ছুটদের মানসিক চাপ ক্রমে বাড়ছে।

প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিংহ, জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপকুমার দে, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জ্যোতিরিন্দ্র দে, অমিতাভ সেনও এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker