Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান দ্বিজেন্দ্র-ডলি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের
//প্রিয়াস্মিতা ভট্টাচার্য//
১৮ এপ্রিল : নববর্ষের শুরুতেই অভিনব প্রয়াসের দৃষ্টান্ত স্থাপন করল দ্বিজেন্দ্র-ডলি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। অমিত সম্ভাবনার অধিকারী নারীশক্তির যথাযথ বিকাশ সম্ভব হয় না ন্যূনতম সুযোগ এবং যথাযথ মূল্যায়নের অভাবে। এই ব্যতিক্রমী সন্ধ্যার উপহার ৩৩ জন নারীদের যোগ্য সম্মান প্রদান।
ট্রাস্ট আয়োজিত এই সন্ধ্যার কেন্দ্রবিন্দু ছিল নারীশক্তি। গত ১৬ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ দ্বিজেন্দ্র ডলি শিলচর প্রেমতলা স্থিত কার্যালয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ট্রাস্টের সভাপতি ডা. গিরিধারী কর, সহ সভাপতি জয়দীপ দে, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা এবং বিশিষ্ট সমাজসেবিকা গৌরী দত্ত বিশ্বাস, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বতোষ চৌধুরী, কাছাড় কলেজের অধ্যাপক সুদীপ কুমার দাস, গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবি সঞ্জয় ভট্টাচার্য, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উত্তরীয় এবং পুষ্পস্তবক দিয়ে অতিথিদের বরণ করেন পিয়ালী দেব। নববর্ষের স্বাগত বার্তা নিয়ে নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন মধুশ্রী চক্রবর্তী ও পিয়ালী পাল। বক্তব্য রাখতে গিয়ে গৌরী দত্ত বিশ্বাস নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ছাত্রদের অবশ্যই সিলেবাস কেন্দ্রিক পড়াশোনা করতে হবে, কিন্তু শুধুই সিলেবাস কেন্দ্রিক পড়াশোনাতে প্রকৃত শিক্ষা হয়ে ওঠে না। যত বেশি সম্পর্কযুক্ত বই বা রেফারেন্স বুক ছাত্ররা পড়াশোনা করবে ততই বেশি মেধার বিকাশ ঘটবে।
সভাপতি ডঃ গিরিধারী করের বক্তব্য, চৈত্র সংক্রান্তি এবং সাল পয়লা পাশাপাশি দুটো দিনই উৎসবের দিন হিসাবে থাকলেও আমাদের জীবন পাল্টায় না । তবে বছর শুরুর প্রথম দিনে নতুন সংকল্প গ্রহণ করে সমাজজীবনের ধারা পাল্টানো সম্ভব। ‘বিজ্ঞান যত উন্নত হচ্ছে মানুষ তত শেকড়রহীন হয়ে যাচ্ছে। কোনও জাতি বা কোনও সম্প্রদায় তার কৃষ্টি ভাষা সংস্কৃতি সভ্যতাকে বাদ দিয়ে তার যাত্রাকে বহমান রাখতে পারে না।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে মাথা পেতে আমরা যদি ইংরেজি ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তাহলে আমাদের কৃষ্টি সভ্যতা বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনীহা কেন? ব্যতিক্রম দ্বিজেন্দ্র- ডলি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। দ্বিজেন্দ্র- ডলির মহিলা সবলিকরণ ও স্বাবলম্বী সংবর্ধনা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বললেন বিশ্বতোষ চৌধুরী। ব্যবহারিক জীবনে শিল্পীসত্ত্বা এবং শৈল্পিক ভাবনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন গৌতম প্রসাদ দত্ত। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সপ্তমিতা নাথ ও দুর্বা দেব।
এদিনের এই অনুষ্ঠানটি ছিল এক ভিন্ন মাত্রার। মূলত বরাক উপত্যকার তিন জেলার বিভিন্ন স্তরের মহিলাদের সফলতার স্বীকৃতি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। করিমগঞ্জ জেলার রবীন্দ্রসদন কলেজের মহসিনা কওসার, শিলচর মহিলা কলেজে অনামিকা সিনহা এবং হাইলাকান্দির বর্ণালী ভট্টাচার্যকে ‘সেরা স্নাতক ‘ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে নগদ পাঁচ হাজার টাকা, লাইব্রেরির সাম্মানিক সদস্য পদ, বই এবং স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
শুধু বরাক উপত্যকা নয়, গোটা উত্তর-পূর্বের একমাত্র মহিলা বাস্তুবিদ হিসাবে বিজয়া লক্ষ্মী বৈদ-কে সম্মান জানানো হয়। শিলচর শহরের অম্বিকাপুর ক্লাস্টারের দুর্গাশঙ্কর পাঠশালা এবং অধর চাঁদ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের রাধুনী এবং সহায়িকা যথাক্রমে অর্চনা দাস, উজ্জলা ঘোষ, পিংকি পাল, বাবুল রানী মালাকারদের সম্মান জানানো হয়। এছাড়া দ্বিজেন্দ্র ডলি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের উদ্যোগে পৌষ পার্বণে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। গোটা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ট্রাস্টের সম্পাদক ও অধ্যাপক শামানন্দ চৌধুরী।