Barak UpdatesHappeningsBreaking News
জমা জলের সমস্যা সমাধানে নাগরিকদের ডেকে সভা করল করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন
১০ জুলাই: জমা জলের সমস্যা নিরসনে শেষপর্যন্ত নড়েচড়ে উঠল করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন ৷ শুক্রবার অতিরিক্ত জেলাশাসক গয়াপ্রসাদ আগরওয়ালের আহ্বানে শহরের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে প্রশাসনিক আধিকারিকদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ সভায় উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ পুরসভা এবং শহর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরাও ৷
এই বর্ষার মরসুমে করিমগঞ্জ শহরবাসীকে সামান্য বর্ষণেই জমা জলের সমস্যায় নাকাল হতে হচ্ছে ৷ শহরের নর্দমাগুলো বৃষ্টির জল পরিবহনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ৷ ফলে কয়েক ঘণ্টার ধারাবর্ষণে জলবন্দি হয়ে পড়ছেন শহরবাসী৷ এই বিষয়ে সুরাহার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট দাবি নিয়ে শহরের কিছু সাধারণ নাগরিক স্মারকপত্রে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে নেমেছিলেন৷ ৭ হাজার স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকপত্র গত ১৭ জুন জেলা প্রশাসনের নিকট পেশ করা হয় ৷ মূলত: তিন-দফা দাবি উপস্থাপন করা হয় ওই স্মারকপত্রে ৷
স্বীকৃত পারদর্শী সংস্থাকে দিয়ে নালাগুলো নিরীক্ষণ করিয়ে বিহিত ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা এবং যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রয়োজনে শহরের ড্রেনেজ সিস্টেম ভেঙে নতুন করে তৈরি করা। সেইসঙ্গে শহরের নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখার দাবিরও উল্লেখ রয়েছে স্মারকপত্রে। এ ছাড়া, শহরের জন্য সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের কার্যকরী পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়িত করা। পলিথিন, থারমোকল, প্লাস্টিকের বর্জ্য পদার্থের সঠিক ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে এগুলোর রিসাইকেল-এর বন্দোবস্ত করা৷ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় অন্যান্য শহরের মতো জৈব ও অজৈব বর্জ্য আলাদা করে যথোচিত প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা করা। সেই সঙ্গে শহরে পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
তাঁরা শহর এবং শহরের আশপাশে বেঁচে থাকা জলাশয়গুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণেরও দাবি করেন৷ কারণ এগুলোই বৃষ্টির জলের আধার বা ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে কাজে আসে। সঙ্গে সমস্ত নিম্নভূমি , যেগুলি বর্ষাকালে বৃষ্টির জল ধারণ করে, সেগুলির অবৈধ জবরদখল বন্ধ করা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। এই স্মারকপত্র মুখ্যমন্ত্রীর নিকটও পাঠানো হয় ৷ এই প্রেক্ষিতেই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সভাটি অনুষ্ঠিত হয় ৷ জমা জলের সমস্যা, আবর্জনার সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়৷
পারদর্শী সংস্থাকে দিয়ে প্রথমে শহরের নর্দমাগুলো জরিপ করে স্থায়ী সমাধানে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণে সহমত পোষণ করেন অতিরিক্ত উপায়ুক্ত গয়াপ্রসাদ আগরওয়াল৷ এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি৷ সেইসঙ্গে শহরে পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা এবং অনতিবিলম্বে শহরের পর্যাপ্ত আবর্জনা ফেলার বিনের বন্দোবস্ত করার দাবি পুরসভাকে জানায় সভা৷ সেইসঙ্গে বিনগুলো থেকে নিয়মিত আবর্জনা সরানোর জন্য পুরসভাকে অনুরোধ জানায় নাগরিকেরা ৷ শহরের আবর্জনা জমা করার নির্দিষ্ট ডাম্প-ইয়ার্ড বা ট্রেন্সিং গ্রাউণ্ড নেই৷ এই ব্যাপারে সভায় উপস্থিত নাগরিকেরা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে অবিলম্বে এর বন্দোবস্ত করার আবেদন জানান৷
ব্যাপারগুলো নিয়ে সময়-আবদ্ধ পরিকল্পা করে এর বাস্তবায়ন করার দাবি রাখেন উপস্থিত নাগরিকরা ৷ এই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড° সব্যসাচী রায়, ড° নির্মল কুমার সরকার, রূপক দে, অরূপ রায়, কুমারজিৎ দত্ত৷ উপস্থিত ছিলেন নগর উন্নয়ন বিভাগের ডেপুটি ডাইরেক্টর সুপ্রিয় দেব, পুরসভার জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার এম আর বরভূঁঁইয়া৷