Barak UpdatesHappeningsBreaking News

এন এইচ এম-র তিনদিনের কর্মবিরতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত

আন্দোলনস্থলে গিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ অভিজিৎ পালের, সুস্মিতা দেবের

ওয়েটুবরাক, ৬ মার্চ: সারা রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাছাড় জেলায়ও শেষ হল এন এইচ এম কর্মীদের তিনদিনের কর্মবিরতি ধর্মঘট। বৃহস্পতিবার জেলার ৮টি স্বাস্থ্যখন্ড সহ মেডিক্যাল কলেজ এবং জেলা পর্যায়ে সতীন্দ্রমোহন দেব সিভিল হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মবিরতি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসক, কম্যুনিটি হেলথ অফিসার, স্টাফ নার্স, এএনএম, ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, ম্যানেজম্যান্ট ইউনিটের প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তারা জড়ো হন এবং তাদের মুখ্য তিন দাবি যথাক্রমে চাকরি স্থায়ীকরণ, সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন সহ বকেয়া প্রদান ও সর্বোপরি দেশের সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী সম কাজে সম বেতনের দাবিতে আন্দোলনস্থল মুখরিত করে তোলেন বিশ্বজিৎ দেব, লিটন দেবনাথ, নিবেদিতা সিংহ, অমিতা দাস, শিবানী নাথ, শেফালী মজুমদার, স্বপ্না নাথ, উপাসনা দাস, আল্পনা নাথ, মিতালি চৌধুরী, সুমি নাথ সহ উপস্থিত সবাই। এই তিনদিনের রাজ্য ব্যাপি আন্দোলনে সরকার পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা জানিয়ে দেয়া হবে বলেও জানান আয়োজক সংগঠকরা। তারা জানান, এবারে জরুরি পরিসেবায় ব্যাঘাত ঘটায়নি কর্মবিরতি আয়োজক সারা আসাম হেল্থ এন্ড টেকনিক্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যসোসিয়েশন এবং এন এইচ এম এমপ্লোয়িজ অ্যাসোসিয়েশন সহ অন্যান্য ভ্রাতৃ সংগঠন। বরং সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে আন্দোলনের পাশাপাশি জরুরিকালীন পরিষেবায়ও সর্বশক্তি দিয়ে তারা সহায়তা করেছেন। সরকার এটাকে গুরুত্ব না দিলে আগামী দিনের আন্দোলনে স্বাস্থ্য বিভাগকে প্যারালাইজড করে দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মবিরতি আয়োজকরা। অন্তিম দিনের আন্দোলনে জেলার সিভিল হাসপাতালে উপস্থিত হন শিলচর জেলা কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ পাল। তিনি এন এইচ এম কর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবিপুরনের জন্য পত্র লিখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরে জেলা আন্দোলন স্থলে হাজির হন রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবও। তিনি উপস্থিত হয়ে চাকরি স্থায়ীকরণ ও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সম কাজে সম বেতনের নির্দেশ এন এইচ এম কর্মীদের জন্য কেন লাগু হয়নি ? সে বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি এন এইচ এম কর্মীদের দাবিগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন এবং সুপ্রিম নির্দেশ সমান কাজে সমান বেতনের অবজ্ঞার বিষয় সহ কর্মীদের ন্যায্য দাবিগুলো তিনি সংসদে উপস্থাপন করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। সবশেষে সারা আসাম হেল্থ এন্ড টেকনিক্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সচিব মফিদুল ইসলাম, সভাপতি ওয়াসিম জাভেদ চৌধুরী, এন এইচ এম এমপ্লোয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইকবাল বাহার লস্কর, সচিব হিমেন্দুশেখর নাথ জেলায় এন এইচ এম কর্মীদের তিনদিনের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়াতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। জেলার কোথাও কোনধরনের অশান্তির কোন ঘটনা ঘটেনি। ধৈর্যের চরম পরিচয় দিয়েছেন এন এইচ এম-র প্রত্যেকজন কর্মী। এজন্য সবাইকে সাধুবাদ জানান সংগঠনের কর্মকর্তারা। সর্বোপরি আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও সুন্দরভাবে শেষ হওয়াতে জেলার সাধারণ প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলার যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক ডাঃ শিবানন্দ রায়, সিভিল হাসপাতাল সুপার ডাঃ অরূপ পাটোয়া, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জেলার স্বাস্থ্যখন্ড ও বিভিন্ন হাসপাতালের আধিকারিক , ছাপা ও বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যম ছাড়াও আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানাভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন সংগঠন কর্মকর্তারা। পাশাপাশি এই তিনদিন সাধারণ জনগণকে স্বাস্থ্য পরিসেবা দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন ওয়াসিম জাভেদ চৌধুরী, মফিদুল ইসলাম, ইকবাল বাহার লস্কর, হিমেন্দু নাথ প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker