Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News

রবীন্দ্র ভবনে সেনা, অর্থ গচ্ছা দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চে চতুরঙ্গের নাট্যোৎসব

১৫ মার্চ : পাথারকান্দি রবীন্দ্র ভবন থেকে আধাসামরিক সরানোর দাবি তুললেন এলাকার শিল্পী, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ। পাথারকান্দি এলাকার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একমাত্র উৎসস্থল এই রবীন্দ্র ভবন। অথচ আইন শৃঙখলার অবনতির অজুহাত দিয়ে গত ৪ বছর ধরে এখানে সেনা জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিপরীতে স্থানীয় সাংস্কৃতিক দলগুলোকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে অনুষ্ঠান করতে হচ্ছে।

Rananuj

পাথারকান্দির ‘চতুরঙ্গ নাট্য সংস্থা’ ৭ মার্চ থেকে ৯ মার্চ ৪২তম বর্ষপূর্তিতে বসন্ত নাট্যোৎসব আয়োজন করে। এ নাট্যোৎসবে করিমগঞ্জ, ত্রিপুরা, বাংলাদেশের সিলেট থেকে নাট্যদল যোগ দেয়। ত্রিপুরা ও বাংলাদেশ থেকে পাথারকান্দিতে এই প্রথম নাট্যদলগুলো নাটক নিয়ে এসেছিল। সে দিক থেকে এটি অবশ্যই ঐতিহাসিক। আর পুরো উৎসব হয়েছে একটি অস্থায়ী মঞ্চে।

চতুরঙ্গ সর্বশক্তি ও আবেগ ঢেলে দেয় এই উৎসবকে সফল করার জন্যে এবং তাদের বিশাল অঙ্কের অর্থ সংগ্রহেরও ঝুঁকি নিতে হয়েছে। উৎসবের অন্য সব খরচ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি ও দর্শক আসনের জায়গাকে বসার উপযোগী করে তুলতে কম করেও অতিরিক্ত দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এটি নিতান্তই প্রশাসন ও সরকারের উদাসীনতার জন্য হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়োজকরা।কিন্তু এতো খরচ করেও অস্থায়ী মঞ্চে কিছু ত্রুটি থেকে গেছে বলে জানান জনৈক কর্মকর্তা।

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া এক সংস্কৃতিকর্মী বলেন, পাথারকান্দিতে একটি রবীন্দ্র ভবন রয়েছে যা বহু পুরনো, এই রবীন্দ্র ভবনকে ভেঙে নতুন করে তৈরি হয়েছে। পাথারকান্দিতে সংস্কৃতি চর্চার একমাত্র কেন্দ্রই হচ্ছে এই ভবন। এই ভবন ছাড়া পাথারকান্দিতে নাটক, গান বাজনা চর্চার দ্বিতীয় কোনও জায়গা নেই। কিন্তু সরকারি অনেক টাকা খরচ করে এই ভবনটি নির্মাণ হলেও বর্তমানে আর কেউ তা ব্যবহার করতে পারছেন না। এদিকে, রবীন্দ্র ভবন পরিচালন কমিটির সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, এনআরসি-র কাজের জন্য প্রায় চার বছর আগে এই ভবনে আধা সামরিক বাহিনীকে থাকার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছিল! কিন্তু আজও তাদের সরিয়ে নিয়ে যাবার প্রশাসনিক স্তরে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

পাথারকান্দিতে কী এমন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলো যে দিনের পর দিন বছরের পর বছর সমস্ত সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে বন্ধ করে আধা সামরিক বাহিনীর আস্তানা করে দেওয়া হয়েছে? পাথারকান্দির মানুষের মনে আজ এই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। কারণ ১৯৬২-তে ভারত-পাক যুদ্ধ বা ১৯৭১-সনের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও রবীন্দ্র ভবনে কখনই সেনা বা আধা সামরিক বাহিনীর ছাউনি হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনেক আবেদন নিবেদন করা হলেও আধা সামরিক বাহিনীকে সরিয়ে নিতে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চতুরঙ্গের উৎসব থেকে দাবি উঠেছে, “অতি শীঘ্র রবীন্দ্র ভবন থেকে আধা সামরিক বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হোক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জন্য রবীন্দ্র ভবন কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হোক।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker