Barak UpdatesHappeningsBreaking News
অসমিয়া হোর্ডিংয়ে কারা কালি লাগিয়েছে জানেন না দত্তরায় !
ওয়েটুবরাক, ১৯ অক্টোবর : অসমিয়াতে লেখা সরকারি হোর্ডিংয়ে কালি লাগানো বিডিওয়াইএফ-এর নির্ধারিত কর্মসূচির অঙ্গ ছিল না ৷ চরম বিতর্কের মধ্যে আজ মঙ্গলবার এই মন্তব্য করলেন বিডিএফ নেতা প্রদীপ দত্তরায়। তিনি বলেন, শিলচর রেলস্টেশনে অসমিয়া ভাষায় সরকারি পোস্টার লাগানোর বিরুদ্ধে বরাক ডেমোক্রেটিক যুব ফ্রন্টের বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে কিছু অসমিয়া সংগঠনের নেতা-কর্মী মিথ্যা অভিযোগ, অপপ্রচার, হুমকি ইত্যাদি দিয়ে অসমিয়া-বাঙালি বিভেদকে উস্কে দিতে চাইছেন। প্রদীপবাবু আরও বলেন, বিডিওয়াইএফ সদস্যদের সাথে কর্মসূচি চলাকালীন তাঁর কথা হয়েছে৷ তাঁরা স্পষ্টতই বলেছেন, পোস্টারে কালো কালি লাগানো তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অঙ্গ ছিল না। কর্মসূচির নির্ধারিত সময় বেলা সাড়ে এগারোটায় গিয়ে তারা এই বিষয়টি দেখতে পান এবং সেখানে বিডিওয়াইএফ এর নামোল্লেখও দেখতে পান। তখন একে সংশোধন করতে গেলে আবার বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে বলে তারা তাদের নির্ধারিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, একটি বিষয় মনে রাখা দরকার, বিডিওয়াইএফ-এর এই কর্মসূচি কোনও ভাষা বা ভাষিক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, এটি ভাষা আইন লঙ্ঘন করার সরকারি প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে। বিডিওয়াইএফ বা বিডিএফ শুধু অসমিয়া নয়, সমস্ত ভাষিক গোষ্ঠীর ভাষিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
প্রদীপ বাবু বলেন, আসুর মুখ্য উপদেষ্টা সমুজ্জল ভট্টাচার্য বা জাতীয়তাবাদী দলের লুরিন জ্যোতি গগৈ থেকে শুরু করে স্বল্পখ্যাত বা অখ্যাত সংগঠনের যেসব নেতা অসমিয়া ভাষার অপমান হয়েছে বলে বিডিওয়াইএফ-এর বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন, তাদের তিনি মনে করান, কিছুদিন আগে বরাকের ঐতিহ্যবাহী তরুণরাম ফুকন অসমিয়া বিদ্যালয়কে ছাত্রছাত্রীর অভাব দেখিয়ে যখন বাংলা মাধ্যমের সাথে জুড়ে দেবার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তখন বিডিএফ-এর তরফেই প্রথমে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়৷ কারণ এটি বন্ধ হলে এই অঞ্চলে কেউ অসমিয়া মাধ্যমে পড়তে চাইলেও পারবেন না এবং তাতে ভাষিক অধিকার ক্ষুন্ন হবে। মূলত এই উদ্যোগের জন্যই তা রাজ্যের সংবাদ মাধ্যম ও সরকারের নজরে আসে ও সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়। তিনি বলেন, সেই সময় এইসব নেতাদের কাছ থেকে বিডিএফ-এর প্রতি একটি প্রশংশাসূচক শব্দও শোনা যায়নি।
প্রদীপ বাবু এদিন সাংসদ রাজদীপ রায়ের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, সাংসদ কি ভাষা আইন জানেন না ? তাহলে যে স্টেশন চত্বর এগারো ভাষাশহীদের রক্তে রঞ্জিত সেখানেই যে ভাষিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সে বিষয়ে তাঁর কোনও বক্তব্য নেই কেন ? এছাড়া তিনি কি দেখছেন না, কেন্দ্রীয় সরকার গ্রিন সিগন্যাল দেবার পরও এতদিন ধরে ‘ভাষা শহিদ স্টেশন ‘ নামকরণ হচ্ছে না ? একবারও কি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন ? একবারও কি এই নিয়ে জনসমক্ষে কোনও বক্তব্য রেখেছেন ? একবারও কি ভেবেছেন যে বরাকের প্রার্থীরা কেন ক্রমাগত সরকারি চাকরিতে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে ? করিমগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে বরাকের অধিকাংশ সমস্যার ক্ষেত্রে তার নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে, তিনি কোনও অর্থেই তার পদের সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। একই কথা এখানকার অধিকাংশ বিধায়কদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
বিডিএফ নেতা এদিন বলেন, পূর্বতন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যে বরাক-ব্রহ্মপুত্র সমন্বয়ের কথা বলছেন, তাতে আমরা আশাবাদী। তবে সত্যিই যদি তা উদ্দেশ্য হয় তবে বাঙালি তথা বরাকের বাসিন্দাদের সাথে আলোচনায়ও বসতে হবে।তাদের দাবি দাওয়া,অভাব অভিযোগকে সঠিক অনুধাবন করতে হবে। তাহলেই প্রকৃত অর্থে সমন্বয় সম্ভব হবে। শুধু বিধায়ক-সাংসদের উপর নির্ভর করলে চলবে না৷ কারণ তাঁরা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেন না, জানিয়ে দেন দত্তরায়।