Barak UpdatesAnalytics
আডবাণীরই অবস্থা কবীন্দ্রবাবুর, তবু বললেন, পাশে আছিAdvani & Kabindra on the same boat, end of an era
২৫ মার্চঃ জাতীয় স্তরে যেমন লালকৃষ্ণ আডবাণী, বরাক উপত্যকায় তেমনি কবীন্দ্র পুরকায়স্থ। বিজেপি তো বটেই, সামগ্রিক রাজনীতির অঙ্গনেই দীর্ঘকাল নেতৃত্ব দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার শাসক দলের প্রথম তালিকা প্রকাশ হতেই কবীন্দ্রবাবু সংসদীয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেলেন। শিলচর আসনে এ বার বিজেপির প্রতিনিধি প্রদেশ মুখপাত্র রাজদীপ রায়। ১৯৯১ সাল থেকে লাগাতার কবীন্দ্রবাবুই এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
১৯৮০ সালে বিজেপির জন্মলগ্নে তাঁকেই এই অঞ্চলে সংগঠন বিস্তারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁর পরিশ্রমেই দল ১১ বছরে উপত্যকার ১৫ বিধানসভা আসনের ৯টি জিতে নেয়। জেতে বরাকের দুটি লোকসভা আসনও। শিলচর থেকে নিজেও সাংসদ হন। সে বার সিপিএমের নুরুল হুদাকে পরাস্ত করেন। পরে ১৯৯৮ এবং ২০০৯ সালেও কবীন্দ্রবাবু লোকসভা ভোটে জয়ী হন। দুইবারই হারান হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা সন্তোষমোহন দেবকে। কট্টর হিন্দুত্ববাদ তাঁর আদর্শ হলেও সংখ্যালঘুরা কখনও তাঁকে খলনায়ক বলে মনে করেনি।
লালকৃষ্ণ আডবাণী ও কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, দুইজনই বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় ছিলেন। কবীন্দ্রবাবু প্রতিমন্ত্রী থাকলেও আডবাণী কিছুদিন উপপ্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। দুজনের সংসদীয় জীবনে একসঙ্গে যবনিকা পড়লেও আডবাণীর শেষ পরিণতির সঙ্গে অবশ্য কবীন্দ্রবাবুর ফারাক রয়েছে। লৌহপুরুষ হিসেবে পরিচিত বিজেপি নেতা ২০১৪ সালের নির্বাচনে জিতেও দলে গুরুত্ব পাননি। ক্ষোভে ৫ বছর সংসদে কোনও কথা বলেননি।
কবীন্দ্রবাবু ১৪-য় কংগ্রেস প্রার্থী সুস্মিতা দেবের কাছে হেরে যান। কিছুদিন হতাশায় ভুগলেও দল সর্বানন্দ জমানায় তাঁকে গুরুত্বহীন মনে হয়নি। সর্বানন্দ সোনোয়াল প্রদেশ সভাপতি হিসেবে শিলচরে এলেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রতিটি সভায় কবীন্দ্রবাবুকে পিতৃতুল্য বলে সম্বোধন করেন। কখনও বলেন পিতামহ ভীষ্ম।
এমনকী, এ বার টিকিটের জন্য দাবি না জানালেও রাজ্য নেতৃত্ব তাঁদের প্যানেলে ৮৭ বছরের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নামটিই শীর্ষে রাখে। শেষপর্যন্ত টিকিট না পাওয়াকে কবীন্দ্র পুরকায়স্থ বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। বললেন, ‘আমি দলের সৈনিক। দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমি পাশে আছি।’ অনুগামীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘প্রার্থী যিনিই হোন, তাঁকে জেতাতে হবে। মোদির হাত শক্ত করতে হবে।’ রাজদীপ বললেন, ‘জেঠুর আশীর্বাদ নিয়েই তো লড়ছি আমি।’
সোমবার তাই মনোনয়ন পত্র জমার সময় রাজদীপ রায়ের সঙ্গে ‘জেঠু কবীন্দ্রবাবুও উপস্থিত ছিলেন।’