Barak UpdatesHappeningsFeature Story

ভারতীয় প্রমাণের সুযোগই পেলেন না, মারা গেলেন কানু পাল

২৮ অক্টোবর: ১৯৬৫ সালে কেনা জমির দলিল হাতে রয়েছে৷ আছে বাবা রসময় পালের ভারতীয় নাগরিকত্বের শংসাপত্রও৷ কিন্তু ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বা আদালতে দেখানোর সুযোগই পেলেন না হাইলাকান্দি জেলার কারিছড়ার কানু পাল৷ মহানবমীর সকালে বিদেশি তকমা নিয়েই মারা গেলেন৷

২১ মার্চ ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ৬২ বছরের কানু পাল৷ বেরিয়েই বলেছিলেন, বাকি জীবন স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে স্বাধীনভাবে কাটাবেন৷ কিন্তু বিদেশি নোটিশ যে তাঁর সব স্বাধীনতা আগেই কেড়ে নিয়েছে! ফলে ৭ মাসের মুক্ত জীবনে স্বস্তি মেলেনি৷ জেল থেকে বেরনোর একমাস আগে, ১২ ফেব্রুয়ারি ডিটেনশন ক্যাম্পেই প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন কানুবাবু৷ ফলে মুক্তির পরও তাঁর চিকিৎসা-পথ্যের প্রয়োজন ছিল৷ কিন্তু পরিচারিকার কাজ করে তাঁর স্ত্রীর পক্ষে সে সবের বন্দোবস্ত করা সম্ভব হয়নি৷

আগে থেকেই দিনমজুর কানু পালের টানাটানির সংসার ছিল৷ এর মধ্যে ২০১৭-র এপ্রিলে পুলিশ তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে আনে৷ জানায়, ট্রাইব্যুনালের একতরফা রায়ে তিনি বিদেশি৷  কবে নোটিশ এল? কবে ট্রাইব্যুনালে ডাকা হল? কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই পুলিশ তাঁকে পাঠিয়ে দেয় শিলচর সেন্ট্রাল জেলে৷ ওইটাই যে ডিটেনশন ক্যাম্প! জমির দলিল, বাবার নাগরিকত্বের শংসাপত্র নিয়ে কে আদালতে ছোটাছুটি করবে! পরিবারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন কানুবাবু৷ তাঁর ক্যাম্প-বাসে দু মুঠো খাবার জোগানোই কঠিন হয়ে পড়ে স্ত্রী-কন্যার৷

এ বার প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হলে তাঁকে জেল থেকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়৷ তখনই হিন্দুত্ববাদী নেতাদের নজরে পড়েন তিনি৷ পাশে দাঁড়ায় নর্থ ইস্ট লিঙ্গুইস্টিক অ্যান্ড এথনিক কোঅর্ডিনেশন কমিটি (নেলেক)৷ হাইকোর্টে তাঁর মুক্তির আর্জি খারিজ হলেও সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করে৷ এর ভিত্তিতেই জামিনে মুক্ত হয়েছিলেন ৬২ বছরের কানুবাবু৷

Also Read: ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেলেন ষাটোর্ধ্ব কানু পাল

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker