Barak UpdatesHappeningsBreaking NewsFeature Story

চার প্রজন্মে হাতবদল : শতবর্ষ পুরনো ঘড়ি, এখনও চলে এক চাবিতে

ওয়েটুবরাক, ১৬ সেপ্টেম্বর : বাবার ট্রাঙ্কটিই ছিল ছোটবেলায় তাঁর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতি সপ্তাহে কৃষিবিভাগের কর্মী বাবুল আচার্য ট্রাঙ্কটি খুলতেন, আর পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন ছেলে বিকাশ। সুযোগ পেলেই ছুঁ মেরে ঘড়িটি হাতে তুলে নিতেন। তখনই শুরু হয়ে যেত বাবার হইচই, “বাবা-ঠাকুরদার কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। এই জিনিসটিই একমাত্র স্মৃতিচিহ্ন।” কাগজপত্র নিয়ে হাতাহাতি করলেও বাবুল আচার্যের আপত্তি ছিল না। কিন্তু ঘড়ি ছোঁয়া চলবে না। এত আপত্তিই আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয় বিকাশের। পিতার মৃত্যুর পর এখন এই ঘড়ি বিকাশেরই জিম্মায়। বাবার মতোই প্রতি সপ্তাহে ঘড়িতে দম দেন। এখনও চলছে একেবারে সেকেন্ডের হিসেব কষে।

ঘড়িটি সুইজারল্যান্ডের ওয়েস্ট এন্ড ওয়াচ কোম্পানি নির্মিত। ১৮৮৬ সালে নির্মিত কোম্পানিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ম্যাচলেস রেগুলেটর মডেলের ঘড়ি তারা তৈরি করেছেন ১৯০১ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত।

বিকাশ জানিয়েছেন, তাদের ঘড়িটি সম্ভবত এই মডেলের মেকানিক্যাল পকেট ওয়াচের গোড়ার দিকের। কারণ বাবার কাছে বিকাশের শোনা, তাঁর ঠাকুরদা পীতাম্বর আচার্য পূর্ববঙ্গে থাকার সময় এই ঘড়ি ব্যবহার করতেন। পাঞ্জাবীর বোতামের সঙ্গে আটকানো থাকত ঘড়ির চেনের এক প্রান্ত, অন্য প্রান্তে ঘড়িটি, থাকত বুকপকেটে। ১৯২১ সালের শিলচরের জমির দলিল এখন তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্বের লিগ্যাসি ডকুমেন্ট। এতেই প্রমাণ মেলে, পীতাম্বর আচার্যের কাছে ঘড়িটি ছিল ১৯২১-র আগে থেকে৷

বিকাশের একমাত্র সন্তান রুদ্রনীলের এখন দশ বছর। ব্যবসায়ী বিকাশের ইচ্ছে, ছেলে বড় হয়ে অপ্রয়োজনীয় বলে যা-ই ফেলে দিক না কেন, এই ঘড়িটি যেন তার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ধরে রাখে।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker