NE UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News
৬এ: অসমিয়াদের প্রকৃত ভূমিপুত্র মানতে নারাজ কছারিরা6A: Kocharies unwilling to recognise Assamese as real son of the soil
২৫ ফেব্রুয়ারি: প্রকৃত ভূমিপুত্রদের অধিকারে ভাগ বসাতে চাইছে অসমিয়ারা৷ এমনটাই অভিযোগ কছারিদের৷ তারা নানা উদাহরণ দেখিয়ে বলেন, কছারি সহ বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীই হল অসমের আদি বাসিন্দা৷ অল আসাম কছারি সমাজের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়৷
তাতে তাঁরা বলেন, অ-জনজাতি অফিসাররা কছারিদের ইতিহাস, রাজত্ব, প্রাচীনত্বকে যেন স্বীকারই করতে রাজি নন৷ অথচ বড়ো কছারি, রাভা কছারি, লালুং কছারি, দেওড়ি কছারি, ডিমাসা কছারি, গারো কছারি, মিসিং কছারি, কার্বি কছারি সবাইকে নিয়েই তাদের কছারি সমাজ৷ এমনকী, ত্রিপুরার ককবরকভাষীরাও একই গোষ্ঠীর অন্তর্গত৷
তাঁদের দাবি ৫ হাজারের বেশি সময় ধরে কছারিরা এই অঞ্চলের পাহাড়, নদী উপত্যকায় বসবাস করছেন৷ প্রত্যেকের আলাদা ভাষা, আলাদা সংস্কৃতি, পৃথক সত্ত্বা রয়েছে৷ অন্যদিকে, আহোমরা এই অঞ্চলে এসেছে থাইল্যান্ড থেকে৷ তাদের নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতিও ছিল না৷ তারা কছারি রাজাদের কাছ থেকে এই শর্তে বসবাসের অনুমতি নিয়েছিল যে, তারা কখনও কছারিদের উৎখাতের চেষ্টা করবেন না৷ শুধু ক্ষেত-কৃষি করবেন, খাবেন-থাকবেন৷ মটক, মরানদেরও নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি ছিল না৷ আর আদিবাসীদের আনা হয়েছিল চা বাগানে কুলির কাজ করাতে৷ কছারি রাজারা অন্যান্য অউপজাতিদের আনেন পূজাপাঠের জন্য৷ তাদের অধিকাংশ আসে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা থেকে, কছারি সমাজ কোচ রাজবংশীদেরও অসমের ভূমিপুত্র বলে মানতে নারাজ৷ স্মারকপত্রে বলেন, এরা তো এসেছে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে৷
কছারি সমাজের কথায়, এরা নির্লজ্জভাবে অসমিয়া ভাষা নিয়ে গর্ব করে৷ এ তো হল কছারিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য সংযোগী ভাষা৷ এরা গামোছা, বিহু উদযাপন নিয়ে মিথ্যা অহঙ্কার করে৷ এ সবই আসলে কছারিদের| তাই আসামবাসী হিসেবে অসমিয়া শব্দের ব্যবহার হলে কছারিরাই প্রকৃত অসমিয়া৷
এ ছাড়া ভূমিপুত্রের সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্ককেও কছাড়ি সমাজের নেতৃবৃন্দ অর্থহীন বলে মন্তব্য করেন৷ তারা বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভূমিপুত্রের সংজ্ঞা নির্ধারিতই রয়েছে৷ যাদের একসময় রাজত্ব ছিল, নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য রয়েছে, কিন্তু আর্থিক বা শিক্ষাগত দিক থেকে সেভাবে নিজেদের উন্নয়ন ঘটাতে পারেনি তারাই ভূমিপুত্র৷ তথাকথিত অসমিয়ারা এর আওতাভুক্ত নন বলেই দাবি করেন তারা৷ বলেন, তাদের নিজস্ব ভাষা নেই, কৃষ্টি-সংস্কৃতি বলতেও নিজেদের কিছুই নেই৷
এই অবস্থায় আসাম চুক্তির ৬ নং ধারা বাস্তবায়নে যে উচ্চ স্তরের কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাতে কছারি প্রতিনিধি না নেওয়ায় কছারি সমাজ সমালোচনামুখর হয়েছে৷ তারা এই কমিটির কাছ থেকে ভাল কিছু আশাও করছেন না৷
তাঁদের দাবি, কছারিদের সাংবিধানিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্য সুরক্ষায় সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে৷ অসমিয়াকে রাজ্যভাষা হিসাবে গ্রহণের মধ্যেও কছারি ভাষা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র দেখছেন তারা৷ তাই তাতে আপত্তি তুলেছে কছারি সমাজ৷
ডিমাপুরকে অসমে ফিরিয়ে আনার দাবি করে তারা বলেন, শিলঙ চুক্তির মধ্য দিয়ে আসাম সরকার ডিমাপুরকে ২০ বছরের জন্য নাগাল্যান্ডের কাছে লিজ দিয়েছিল৷ পরে তা আর ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷ অথচ এককালে কছারিদের রাজধানী ছিল ডিমাপুর৷ কছারি রাজত্বের প্রচুর স্মৃতিচিহ্ন সেখানে রয়েছে৷ তাকে ফিরিয়ে এনে ষষ্ঠ তফশিলের আওতাভুক্ত হিড়িম্বা স্বশাসিত পরিষদ গঠনের দাবি করেন৷