India & World UpdatesHappeningsBreaking News
১৯ নভেম্বরের পর এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে না চড়তে শিখদের বললেন পান্নুন
ওয়েটুবরাক, ৮ নভেম্বরঃ ১৯ নভেম্বরের পর এয়ার ইন্ডিয়ার কোনও বিমানে শিখ সম্প্রদায়ের কেউ যাতায়াত করবেন না, রবিবার ভিডিয়োবার্তায় সতর্ক করে দিয়েছেন ভারতে নিষিদ্ধ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর প্রধান গুরপতবন্ত সিংহ পান্নুন। তাঁর নির্দেশ পালন না করলে শিখদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানিয়ে দেন তিনি। পঞ্জাবি ভাষায় ওই সতর্কতার পরই দিল্লি এবং পঞ্জাবের বিমানবন্দরে এন্ট্রি পাসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ‘দ্য ব্যুরো অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি’ (বিসিএএস)। বিসিএএস-এর তরফে জানানো হয়েছে, নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত দুই বিমানবন্দরে এন্ট্রি পাস পাওয়া যাবে না। দিল্লি এবং পঞ্জাব বিমানবন্দর থেকে যে সকল যাত্রী এই মাসে এয়ার ইন্ডিয়ার মাধ্যমে যাতায়াত করবেন বিমানে ওঠার আগে তাঁদের ‘হ্যান্ডব্যাগ’-এরও তল্লাশি নেওয়া হবে বলে বিসিএএস জানিয়েছে। দেশবাসীর সুরক্ষার জন্য এই কড়া পদক্ষেপ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তারা।
পান্নুন ভিডিয়োবার্তায় বলেন, ‘‘১৯ নভেম্বর সারা বিশ্বজু়ড়ে বিমানবন্দরগুলিকে ঘেরাও করা হবে। এয়ার ইন্ডিয়া সংস্থার বিমান বিশ্বের কোনও প্রান্তে যেতে পারবে না সে দিন। শিখদের উদ্দেশে বলছি, ১৯ নভেম্বরের পর এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের মাধ্যমে কোথাও যাতায়াত করবেন না। এর ফলে কিন্তু প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে। আবার বলছি, জীবনমরণের প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। ভারত সরকারের প্রতি এটি আমার সতর্কবাণী। ১৯ নভেম্বর যেন ইন্দিরা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট বন্ধ থাকে।’’
এই প্রথম বার নয়, আগেও হুমকি দিতে দেখা গিয়েছিল পান্নুনকে। অক্টোবর মাসে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও হুমকি দিয়েছিলেন পান্নুন। প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আল কাশিম ব্রিগেড যে ভাবে ২০ মিনিটে ৫,০০০ রকেটহানায় বিধ্বস্ত করেছে ইজ়রায়েলের বিস্তীর্ণ অংশকে, ভারতেও সেই ধাঁচে হামলা চালানো হবে, ভিডিয়োর মাধ্যমে এমন বার্তাই দিয়েছিলেন তিনি। ইজ়রায়েলের পরিণতি থেকে ‘শিক্ষা নেওয়ার’ বার্তা দিয়ে পান্নুন বলেছিলেন, ‘‘ভারত যদি পঞ্জাবে দখলদারি কায়েম রাখতে চায়, তবে এমনই প্রতিক্রিয়া হবে।’’ ‘বৃহত্তর পঞ্জাব’ নিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্র গড়ার পক্ষে সওয়াল করে তিনি জানান, প্রয়োজনে এ বিষয়ে পঞ্জাবের আমজনতার মতামত গ্রহণ করতে তাঁরা প্রস্তুত। পান্নুন বলেন, ‘‘ভারতকেই বেছে নিতে হবে তারা ব্যালট চায়, না কি বুলেট।’’
আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন-সহ কয়েকটি দেশে সক্রিয় রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এসএফজে। পঞ্জাবের মধ্যে ‘স্বাধীন এবং সার্বভৌম’ রাষ্ট্র গড়ার দাবি তুলেছে তারা। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এসএফজেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেন্দ্র। জানায়, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য বড়সড় আতঙ্কের কারণ এই সংগঠন। ২০২০ সালে সংগঠনের নেতা পান্নুনকে জঙ্গি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইন্টারপোলকে ‘রেড নোটিস’ জারি করার অনুরোধও জানিয়েছে ভারত। যদিও এ বিষয়ে আরও তথ্য চেয়ে সেই আবেদন ফেরত পাঠায় ইন্টারপোল। তার পরেও কানাডায় বসে পান্নুনের সংগঠন ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রচার করে চলেছে বলে জানিয়েছে এনআইএ। খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিংহ নিজ্জরের খুনের ঘটনায় গত মাসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিতর্কিত বিবৃতির পরে পর ভারত এবং কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন চলছে। সেই আবহেই সম্প্রতি পান্নুন কানাডার হিন্দুদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এর পর ভারতে ১৬টি গুরুতর ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত পান্নুনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এনআইএ। ভারতে নিষিদ্ধ এবং খলিস্তানপন্থী সংগঠন এসএফজে সাম্প্রতিক কালে কানাডা, আমেরিকা এবং ব্রিটেনের কয়েকটি ভারতীয় দূতাবাসে বিক্ষোভও দেখিয়েছে।