Barak UpdatesHappeningsBreaking News

সদ্যপ্রয়াত বিশ্বজিৎ চৌধুরীর নির্বাচিত রচনা সংগ্রহ প্রকাশিত

ওয়েটুবরাক, ৩১ জানুয়ারি : মৃত্যুর আগেই সব পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে গিয়েছেন তিনি৷ কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, কাকে মঞ্চে বসানো হবে ইত্যাদিও৷ তাঁর সেই সব নির্দেশ মেনেই গ্রন্থপ্রকাশের যাবতীয় আয়োজন করে দ্বিজেন্দ্র-ডলি মেমোরিয়াল লাইব্রেরি৷ তাদের উদ্যোগেই সদ্যপ্রয়াত কবি-প্রাবন্ধিক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর দুটি গ্রন্থ রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে উন্মোচিত হয় । ‘নির্বাচিত রচনাসংগ্রহ-১’ এবং ‘নির্বাচিত রচনাসংগ্রহ ২’-এর আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন দ্বিজেন্দ্র-ডলি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভাপতি ডা. গিরিধারী কর, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বতোষ চৌধুরী এবং কবি চন্দ্রিমা দত্ত।

ট্রাস্টের অন্যতম কর্মকর্তা দূর্বা দেব আক্ষেপ প্রকাশ করেন, গ্রন্থপ্রকাশ আনন্দানুষ্ঠানই হওয়ার কথা, কিন্তু এই অনুষ্ঠানটা যেন বেদনার৷ তবে এটাই স্বস্তির যে, বিশ্বজিৎ চৌধুরী বইটি দেখে গিয়েছেন৷

তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, “বিশ্বজিৎ নিজেকে কখনও মেলে ধরেনি৷ কিন্তু আধুনিকতা বা আধুনিক উত্তরবাদ নিয়ে গভীর অধ্যয়ন ছিল তাঁর৷” তাঁর পড়াশোনার ব্যাপ্তি ও গভীরতার কথা উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন মণ্ডল৷ তিনি বলেন, বিশ্বজিৎ চৌধুরী যে কত বড় পাঠক ছিলেন, তা অনুমান করা যায় না৷

বিশ্বজিৎ চৌধুরী স্কুলশিক্ষক ছিলেন, সে কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক বিশ্বতোষ চৌধুরী বলেন, “কে কোথায় পড়ান, সেটা বড় কথা নয়৷ গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কতজন শিক্ষকের মতো বেঁচে আছেন৷” বিশ্বজিৎ চৌধুরী যে কেমন শিক্ষক ছিলেন, এর উদাহরণ দেন আনিপুর নারায়ণ নাথ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ রঞ্জন ভট্টাচার্য৷ তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বিএড পরীক্ষার দু-দিন আগে মনে হচ্ছিল ছন্দ বিষয়টা ঠিক বোঝা হয়ে ওঠেনি৷ বিশ্বজিৎ চৌধুরীকে ফোন করলেন৷ তিনি টেলিফোনে বুঝিয়ে দিলেন৷ কিন্তু টেলিফোনে বুঝিয়ে ঠিক স্বস্তি পেলেন না৷ পরদিন করিমগঞ্জ থেকে চলে আসেন শিলচরে৷

আইনজীবী ইমাদউদ্দিন বুলবুলের কথায়, এই সংকলন না করলে বিশ্বজিৎ চৌধুরীর ঠিকই মৃত্যু হত৷ এই অঞ্চলে অনেকের লেখার ক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু তাঁরা লেখেন না বলে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন৷ কবি চন্দ্রিমা দত্ত বলেন, “বিশ্বজিৎদা সাহিত্য কর্মকেই ধর্ম বলে মনে করতেন৷”

নির্বাচিত রচনাসংগ্রহ-১ সম্পাদনা করেছেন শ্যামানন্দ চৌধুরী এবং দূর্বা দেব৷ এর প্রকাশক দ্বিজেন্দ্র ডলি মেমোরিয়াল লাইব্রেরি। গ্রন্থটি তিনি উৎসর্গ করে গিয়েছেন দুই সাংবাদিক তৈমুর রাজা চৌধুরী ও মিহির দেবনাথকে৷

নির্বাচিত রচনা সংগ্রহ-২ সম্পাদনা করেছেন গ্রন্থকার-তনয় বরুণজ্যোতি চৌধুরী । তিনি জানিয়েছেন, তাঁর পিতা নির্বাচিত রচনা সংগ্রহের মোট চার খণ্ড তৈরি করে গিয়েছেন৷ আরও দুই খণ্ড তাঁরা শীঘ্রই প্রকাশ করবেন৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker