Barak UpdatesHappeningsBreaking News
শুধু একটি সাইনবোর্ড বদলানোর কথা বলায় দত্তরায়কে গ্রেফতার! নিন্দা বরাক বঙ্গের সভায়
ওয়েটুবরাক, ২৮ নভেম্বরঃ “চরম সঙ্কটের মধ্য দিয়ে চলতে হচ্ছে বরাকবাসীকে। এমন সঙ্কটের মুখোমুখি এই উপত্যকার মানুষকে আগে আর কখনও হতে হয়নি।” এই মন্তব্য করেছেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের শিলচর শহর আঞ্চলিক সমিতির দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি আজ বলেন, এই সময়ে বরাক বঙ্গকে আরও বেশি করে মানুষের কাছে যেতে হবে, মানুষের কথা বলতে হবে। এ ব্যাপারে শিলচর শহর আঞ্চলিক সমিতির গুরুদায়িত্ব তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় সমিতির সহ-সভাপতি, আইনজীবী ইমাদউদ্দিন বুলবুল সঙ্কটের গভীরতা বোঝাতে সাম্প্রতিকতম ঘটনার উল্লেখ করেন। জানান, শুধু একটি সাইনবোর্ড বদলানোর কথা বলায় প্রদীপ দত্তরায়কে গ্রেফতার করা হল। তিনি এর নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ তো একজন ব্যক্তির গণতান্ত্রিক অধিকার। ক্ষমতার দম্ভে তাঁকে গ্রেফতার করা হল।
১৯৬০ সাল থেকে দফায় দফায় যে আসামে বাংলা ভাষার ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে, এর নানা উদাহরণ টেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বতোষ চৌধুরী শোনান, “তাই ১৯৬১ সালের একাদশ শহিদের পরও জগন-যিশুকে হারাতে হয়েছে আমাদের। আজও ওই ধারা অব্যাহত।” তিনি ওইসব ইস্যুতে বরাক বঙ্গের পুরনো অবস্থান মনে করিয়ে দিয়ে স্পষ্ট বলেন, “ভাষা-সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে আপস করা চলবে না।” এ সবের প্রতিবাদ করতে না পারলে যে বাঙালিকে ভাসমান জাতিতে পরিণত হতে হবে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দেন বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত। তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক পরিসর থেকে আমরা সুরক্ষা পাচ্ছি না। ওই জায়গায় এখন দেউলিয়াপনা চলছে।” বিভাসরঞ্জন চৌধুরী, তৈমুর রাজা চৌধুরী, বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যও সাধারণ সভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির ভাষণে সঞ্জীব দেবলস্কর বলেন, “বরাকের জনজীবনে বাংলা ভাষাকে হটিয়ে দেওয়ার প্রবল চাপ আমাদের পীড়িত করছে। বরাকের আকাশে-বাতাসে বাংলাভাষা বিরোধী চক্রান্তের সদর্প অভিযান শুরু হয়েছে।” তিনি সতর্ক করে দেন, এই সময়ে বরাকবাসী নিষ্ক্রিয় থাকলে তাঁদের ভবিষ্যত ক্রমাগতই অন্ধকার থেকে আরও অন্ধকারের দিকে যাবে।
সাধারণ সভায় পুরনো কমিটি ভেঙে আগামী দুই বছরের জন্য নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন ড. বিভাসরঞ্জন চৌধুরী৷ তাঁকে সহায়তায় ছিলেন ড.জয়ন্ত দেবরায় ও অমিত চক্রবর্তী৷
নতুন কমিটিতে সভাপতি মনোনীত হয়েছেন সব্যসাচী পুরকায়স্থ৷ দুই সহ-সভাপতি মিলনউদ্দিন লস্কর ও আশিস চক্রবর্তী৷ সম্পাদক উত্তমকুমার সাহা৷ দুই সহ-সম্পাদক সুশান্ত সেন ও কৃষ্ণগোপাল হালদার৷ কোষাধ্যক্ষ বকুলচন্দ্র নাথ৷ সাহিত্য সম্পাদক হাসনা আরা শেলী৷ সংস্কৃতি সম্পাদক তাপসী দত্ত৷ কার্যবাহী সদস্যরা হলেন হৃষিকেশ চক্রবর্তী, অমিত চক্রবর্তী, অতনু ভট্টাচার্য, নবেন্দু বণিক, রণধীর চক্রবর্তী, অরুন্ধতি দত্তরায়, সব্যসাচী রায় ও রমাকান্ত দেব৷