Barak UpdatesHappeningsBreaking News

রানী রাসমণি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে “চাতলা ও শিক্ষার বর্তমান অবস্থান” শীর্ষক আলোচনা চক্র

ওয়েটুবরাক, ১৭ এপ্রিলঃ রানী রাসমণি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রবিবার চাতলার বাঘমারা বন্যাশ্রয় স্থলে “চাতলা ও শিক্ষার বর্তমান অবস্থান” শীর্ষক এক আলোচনা চক্র অনুষ্ঠিত হয় । রানী রাসমণি ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের পৌরোহিত্যে আয়োজিত এদিনের আলোচনা চক্রে বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক জ্যোতি প্রকাশ দাস, শিলচর মহকুমা তপশিলি জাতি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান আইনজীবী নীহার রঞ্জন দাস, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক রমাকান্ত দাস, পিযুষ কান্তি চৌধুরী, সমাজকর্মী রূপেশ চন্দ্র দাস, গোপেন্দ্র দাস প্রমুখ চাতলা অঞ্চলে শৈক্ষিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমাজের সকল স্তরের জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বিশেষ করে, ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

এদিনের আলোচনা চক্রে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক জ্যোতি প্রকাশ দাস বলেন, জীবনে কিছু করতে হলে সাহস লাগবে৷  কারণ সাহস না থাকলে কেউ জীবনে এগিয়ে যেতে পারে না। কথা প্রসঙ্গে তিনি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, দেশের জন্য কিছু করব, এই অদম্য সাহস ও মানসিকতা ছিল বলে একজন চা-ওয়ালা দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন । সেই অদম্য সাহস ছিল বলেই মুকেশ আম্বানির মতো ব্যক্তি দেশের নামীদামি উদ্যোগপতি তথা বিশ্বের ১৩-তম ধনী ব্যক্তি । তিনি বলেন, আসলে কোনও কিছু করতে হলে মনে জেদ থাকতে হবে৷ তবেই যে কোনও ব্যক্তি জীবনে সফলতা লাভ করতে পারবে। চাতলা অঞ্চলের সন্তান হয়ে তিনি যদি বৈজ্ঞানিক হতে পারেন তাহলে অন্যরা কেন পারবে না, বলেন জ্যোতি প্রকাশ দাস। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অদূর ভবিষ্যতে চাতলা অঞ্চল থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এসিএস, আইএএস বের হবে। তিনি ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে কোচিংয়ের ব্যবস্থা অনতিবিলম্বে চালু করার কথা উল্লেখ করে সে জন্য নিজের বাড়িতেই একটি কোঠা প্রদান করার কথা ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে তিনি চাতলা ভ্যালিতে শিক্ষার বিকাশে সংগঠনকে তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা প্রদান করবেন বলে সভায় ঘোষণা করেন।

শিলচর মহকুমা তপশিলি জাতি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান নীহার রঞ্জন দাস বলেন, মনের জোর থাকলে সব কিছুই সম্ভব৷ এর জ্বলন্ত উদাহরণ প্রমীলা দাসের মতো চাতলা অঞ্চলের গরীব ঘরের মেয়ের এসিএস হওয়া। তিনি রানী রাসমণি ফাউন্ডেশনকে সবধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক রমাকান্ত দাস প্রথাগত শিক্ষার সাথে সাথে অপ্রথাগত শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, এই দুটি শিক্ষা ছাড়া আমরা আজকের জীবনে এগিয়ে যেতে পারব না। তিনি তার বক্তব্যে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রবর্তনের কথা উল্লেখ করেন এবং দীর্ঘ ৩৪ বছর পর বর্তমান সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে চিন্তাধারা করেছে বলে জানান।

উল্লেখ্য এদিনের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদিকা প্রমীলা দাস। ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য রাকেশ দাস। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এস সি ডেভেলাপম্যান্ট কর্পোরেশনের বোর্ড অব ডিরেক্টর সুবোধ দাস, রেবতী মোহন দাস, প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য তপন দাস, কালীপদ দাস, শিক্ষাবিদ রমা রঞ্জন দাস, হরিধন দাস, প্রদীপ দাস, প্রাক্তন জিপি সভাপতি প্রদীপ দাস, শিলচর মহকুমা এস সি ডেভেলাপম্যান্ট বোর্ডের সদস্য কমলেশ দাশ প্রমুখ। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও রানী রাসমণির প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে সভার সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক নৃত্য পরিবেশন করেন কাকলি দাস, পল্লবী দাস ও দিব্যশ্রী চক্রবর্তী৷ দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করেন প্রতিমা দাস ও সহশিল্পীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker