Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বিধানসভায় বড়োর সঙ্গে বাংলাকেও সন্নিবিষ্ট করতে অধ্যক্ষকে বরাক বঙ্গের আর্জি
ওয়েটুবরাক, ২৫ জুলাই : পঞ্চদশ রাজ্য বিধানসভায় বড়ো ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়ে সভার কাজকর্মে এই ভাষার ব্যবহার পর্যায়ক্রমে শুরু করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাকে স্বাগত জানালো বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সন্মেলন। সংগঠন বলেছে , অসম যে একটি বহুভাষিক ও বহুজাতিক রাজ্য এই পদক্ষেপে তা আরও একবার মান্যতা পেল।
রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ দৈমারি নিজের মাতৃভাষার স্বীকৃতির জন্য যে আন্তরিক প্রয়াস নিয়েছেন সে জন্য তাঁকে এক পত্র দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছে বরাকবঙ্গ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত পত্রে বলেছেন, বিধানসভায় বড়ো ভাষার স্বীকৃতি রাজ্যের জনবিন্যাসের মৌলিক চরিত্রকেই উন্মোচিত করলো। অধ্যক্ষের পদক্ষেপে বড়ো ভাষা চর্চা ও বিকাশের প্রয়াসও নয়া মাত্রা পাবে।
পত্রে ভাষা ভিত্তিক পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করে সাধারণ সম্পাদক দত্ত বলেছেন, ২০১১ সালের আদমশুমারির ভিত্তিতে পিপলস লিঙ্গুইস্টিক সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ২৮.৯২ শতাংশই বাঙালি। বাংলাভাষীর মোট সংখ্যা ৯০ লক্ষ ২৪ হাজার। রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জনগোষ্ঠী সঙ্গতভাবেই গণতান্ত্রিক শাসনের পরিসরে উপযুক্ত মর্যাদা ও স্বীকৃতি চাইছে। বিধানসভার কাজকর্মে এবং সভাস্থলের মূল প্রবেশদ্বারে অন্যান্য ভাষায় সঙ্গে বাংলাও যাতে সন্নিবিষ্ট হয় সেজন্য পত্রে অধ্যক্ষ দৈমারীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। পত্রে বরাকবঙ্গের মনোভাবের কথা তুলে ধরে বলা হয়, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সন্মেলন এবং রাজ্যের বাংলাভাষী জনগণ অসমিয়া, বড়ো সহ সব ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সন্মেলন মনে করে, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও মর্যাদার আবহ বিরাজ করলে সব ভাষার চর্চা, বিকাশ ও পারস্পরিক ভাব বিনিময় সাবলীল ছন্দে চলতে পারে। পত্রে এটা উল্লেখ করা হয়েছে, নিজের মাতৃভাষা চর্চা করেও অসমিয়া ভাষার বিকাশে বাঙালির অবদান এক ঐতিহাসিক সত্য। আজও এই ধারা অব্যাহত।
একইভাবে বড়ো ভাষার উন্নতির জন্যও বাংলাভাষী জনগণ সদর্থক ভূমিকায় এগিয়ে এসেছেন। বলা হয়, অতীতে একপেশে মনোভাবের জন্য এ রাজ্যের মানচিত্র দফায় দফায় সংকুচিত হয়েছে। তার পুনরাবৃত্তি রাজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে আর কাম্য নয়। কাউকে ব্রাত্য, উপেক্ষিত না রেখে সব ভাষা ও জাতিগোষ্ঠীর সমবিকাশ ও সমৃদ্ধির উদার ভাবনার পথই এ রাজ্যের কাঙ্খিত উন্নয়নের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারে। রাজ্যের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার এবং বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ দৈমারীর সব কল্যাণ প্রয়াসে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সন্মেলন পাশে থাকবে বলেও পত্রে জানানো হয়েছে। পত্রের প্রতিলিপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া এবং বরাকের বিধায়ক, সাংসদেরও দেওয়া হয়েছে।