Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বাংলাদেশ কাণ্ড : পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ, বিবৃতি সিআরপিসিসি-র
ওয়েটুবরাক, ১৭ অক্টোবর : বাংলাদেশের কুমিল্লা, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপে, মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানায় নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি (সিআরপিসিসি), আসামের কেন্দ্রীয় কমিটি। সংগঠনের পক্ষ থেকে সে দেশের বুদ্ধিজীবী, সচেতন নাগরিক, সমস্ত বিরোধী দল যেভাবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন এতে তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়। সিআরপিসিসি, আসামের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, কুমিল্লা শহরের একটি পূজা মণ্ডপে রাতের আঁধারে কারা কী উদ্দেশ্যে কোরান শরীফ রেখে গেছে, তা দ্রুততম সময়ে সে দেশের প্রশাসনও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু ঘটনা পুলিশকে অবহিত করার পরও সাম্প্রদায়িক শক্তি সমবেত হয়ে বিভিন্ন মণ্ডপে ও মন্দিরে যে হামলা চালাতে পারল, তাতে পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়। এই ঘটনার পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পূজা মণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর প্রমাণ করে, বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়িঘরে হামলা-ভাংচুর লুটপাট সংঘটিত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ সরকারের দলীয় নেতাকর্মীদের ইন্ধনে সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগ উঠলেও তাদের কোনো বিচার হয়নি।
বিবৃতিতে এও বলা হয় যে, বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার সহ সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার নির্মমভাবে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, তীব্র বেকার সমস্যা সহ জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যর্থ সরকারগুলো জনগণের ক্ষোভকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিতভাবে দেশে দেশে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করছে। ভারতের বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু বিরোধী অবস্থান এদেশে সাম্প্রদায়িক মনোভাব গড়ে তুলতে যেমন সাহায্য করছে ঠিক তেমনি বিভিন্ন দেশের মৌলবাদী শক্তিকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতেও সহায়তা করছে। ফলে উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগণ নারকীয় আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।
সি আর পি সি সি, আসামের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, এ সকল মধ্যযুগীয় বর্বরতা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং তার হোতা বিভিন্ন দেশের মৌলবাদীদের মদতপুষ্ট বর্তমান সরকারগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল মানুষ ও সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন।
সি আর পি সি সি, আসামের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কুমিল্লা সহ বিভিন্ন এলাকায় পূজা মণ্ডপে ও মন্দিরে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেদেশের আওয়ামী লিগ সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জোরালো দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি ভারত সরকারকে আন্তর্জাতিক স্তরে চাপ তৈরি করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সে দেশের সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়৷ সংখ্যালঘুদের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান, নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক অনুদান এবং আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও দাবি জানায় সিআরপিসিসি৷ এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তাও সুনিশ্চিত করতে বলা হয়। পাশাপাশি আমাদের দেশের মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো যাতে বাংলাদেশের ঘটনার সুযোগ নিয়ে উত্তেজনা ছড়াতে না পারে তা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলোকে সুনিশ্চিত করতে সি আর পি সি সি, আসামের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়।