AnalyticsBreaking News

নাগরিকত্ব/৩৯ঃ ভারতের কোনও শরণার্থী নীতি নেই, আছে শুধু এসওপি
Citizenship/39: India has got no refugee policy, it only has SOP

২৪ মার্চঃ ৫.২২ এনআরসির সর্বশেষ অবস্থা বিশদে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলল, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ হয়েছে। ৪০ লক্ষ ৭০ হাজার ৭০৭ জন এই তালিকায় স্থান পাননি। খসড়া প্রকাশের পর ২০০৩ সালের সিটিজেনশিপ রুলস অনুযায়ী দাবি, আপত্তি আহ্বান করা হয়। যাদের নাম বাদ পড়েছে, তারা নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারছেন। একইভাবে কারও নাম নিয়ে কেউ আপত্তি জানাতে পারেন।
এই দাবি, আপত্তি প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে নিষ্পত্তির জন্য অসম সরকার , আরজিআই এবং এনআরসি কো-অর্ডিনেটরের সঙ্গে পরামর্শ করে কেন্দ্রীয় সরকার একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরি করে। ভারত সরকারের তৈরি এই এসওপিতে সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদন দেয়।

২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর খসড়া এনআরসির উপর দাবি, আপত্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু হবে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে। রাজ্য কো-অর্ডিনেটরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২ লক্ষ ২১ হাজার ৮৩৮ জন দাবি করেছেন এবং আপত্তি জানানো হয়েছে ৭২ জনের বিরুদ্ধে।

আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় ১৫টি নথি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। এর সবকটি বা অন্তত একটি জমা দিয়ে লিগ্যাসি পার্সনের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক প্রমাণ করতে বলা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট এনআরসি-তে নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি পেশের জন্য ওই ১৫টির নথির ১০টিকে নির্দিষ্ট করে দেয়। বাকি ৫টি নথির ব্যবহার বিবেচনাধীন বলে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দেয়। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর ওই ৫টি নথির সাহায্যেও নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য দাবি জানানোর অনুমতি দেওয়া হয়। তবে নির্দেশ দেওয়া হয়, চূড়ান্ত এনআরসি-তে যেন শুধু প্রকৃতদেরই নাম ওঠে, সে জন্য খুব সতর্কতার সঙ্গে নথিপত্র পরীক্ষা করতে হবে।

দাবি-আপত্তি প্রক্রিয়া নিষ্পত্তির পরেই সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদিত সময়ে এনআরসি চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হবে।

৫.২৩ একটি শক্তিশালী প্রব্রজন বা শরণার্থী নীতি তৈরির জন্য সরকার পরবর্তী সময়ে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, কমিটি তা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বলে, ভারত ১৯৫১ সালের ইউএন কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রটোকলে সাক্ষর করেনি। তাই তার কোনও প্রব্রজন বা শরণার্থী নীতিও নেই। তবে ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভারত সরকার একটি এসওপি তৈরি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, সম্প্রদায়, ধর্ম, লিঙ্গ, জাতীয়তা, পরিচিতি বা ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য কেউ নিজের দেশে অত্যাচারের শিকার হলে এবং তা যদি প্রমাণিত হয়, তবে ওই বিদেশের নাগরিককে ভারতে বসবাসের জন্য দীর্ঘকালীন ভিসা দেওয়া যেতে পারে। শরণার্থী হিসেবে যে সব বিদেশি ভারতে বসবাস করেন, তাদের পুনর্বাসন প্রকল্পে সরকার সময়ে সময়ে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে। শরণার্থী পরিচয় পত্র বা ট্রাভেল ডকুমেন্টের মত নথি এবং নিজেদের সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুসারে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি শরণার্থী, অনুপ্রবেশকারী এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করার কৌশল নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে রয়েছে। নিরাপত্তার দিক থেকে ক্ষতিকর কোনও কাজ কেউ করছে কিনা, তারা সেদিকে নজর রাখে। কারও কোনও কাজে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বা সংহতি বিঘ্নিত হতে পারে বলে রিপোর্ট পেলে তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে তা জানায়। এই ধরনের প্রব্রজকদের বিচার হয়, শাস্তি হয় এবং শাস্তির মেয়াদ ফুরালে নিজের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

৫.২৪ এ প্রসঙ্গ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আরও জানায়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার, থাইল্যান্ড বা ভুটান কেউই আমাদের মতো কনভেনশন বা প্রটোকলে সাক্ষর করেনি। শরণার্থীদের নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও জাতীয় নীতিও প্রণয়ন হয়নি। তবে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের (যারা নিজেদের শরণার্থী বলে দাবি করেন, তারা সহ) ব্যাপারে ১. ১৯৪৬সালের ফরেনার্স অ্যাক্ট ২. ১৯২০ সালের পাসপোর্ট (এন্ট্রি ইনটু ইন্ডিয়া) অ্যাক্ট ৩. ১৯৩৯ সালের রেজিস্ট্রেশন অব ফরেনার্স অ্যাক্ট এবং ৪. ১৯৫৫ সালের সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ও তার অধীনে তৈরি নীতি-নির্দেশিকা রয়েছে। বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে যারা শরণার্থী বলে দাবি করেন. তাদের জন্য ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর একটি এসওপি তৈরি ও ইস্যু করা হয়েছে। ওই এসওপি-র ভিত্তিতে শরণার্থীদের মামলা একজন একজন হিসেবে বিবেচিত হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker