Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ডলুতে চা বাগান তুলে দিয়ে বিমানবন্দর নির্মাণের বিরোধিতায় কংগ্রেস
ওয়েটুবরাক, ১৮ জানুয়ারি : ডলু চা বাগান এবং এর ফাঁড়ি লালবাগ ও ময়নাগড় বাগানের প্রায় ৮৭৩ একর জমির ওপর নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের যে পরিকল্পনা চলছে আসাম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক সঞ্জীব রায় এর আপত্তি জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, চা বাগান এবং বাগানের শ্রমিকদের আবাসিক এলাকা নিয়ে এই বিমানবন্দর নির্মাণের প্রস্তাব সরকারের শ্রমিকবিরোধী নীতিরই নয়া সংযোজন। অনুমোদিত চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন এবং বরাক উপত্যকার ট্রেড ইউনিয়নের সাথে কোনও পরামর্শ ছাড়া বা স্থানীয় চা বাগান শ্রমিকদের সঙ্গে কোনও কথা না বলে সরকার কীভাবে এমন এক পদক্ষেপ নিতে পারে, প্রশ্ন করেন সঞ্জীব৷ তাঁর কথায়, প্রায় পনের হাজার চা শ্রমিক সেই প্রস্তাবিত এলাকায় বসবাস করছেন এবং যদি এই পদক্ষেপগুলি বাস্তবায়িত হয় তবে হাজার হাজার শ্রমিক তাদের চাকরি হারাবে এবং সমগ্র সম্প্রদায়কে নিজ জীবিকার জন্য লড়াই করতে হবে। বছরের পর বছর চা বাগানের শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম, তাদের ঘাম ও রক্তের ফলে বাগানগুলো সুন্দর বর্তমান অবস্থায় রয়েছে যেখানে হাজার হাজার মানুষ শুধুমাত্র সবুজ চা পাতার উপর নির্ভরশীল।
কংগ্রেস বাগান মালিককে এ ব্যাপার সতর্ক করে দেয় এবং সরকারকেও সতর্ক করে যে, দরিদ্র শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে খেলা করবেন না৷ অবিলম্বে এই ধরনের প্রস্তাবগুলি প্রত্যাহার করা হোক। তাঁর পরামর্শ, অসম সরকারের অধীনে প্রচুর খাস জমি রয়েছে, সেখানে বিমানবন্দর হতে পারে। এ ছাড়া, বরাক উপত্যকায় অনেক অচল এবং মৃত চা বাগান রয়েছে, যেগুলি বছরের পর বছর ধরে অব্যবহৃত পড়ে আছে এবং সেই বাগানগুলির একটি বড় অংশ অবৈধভাবে বহিরাগতদের দখলে রয়েছে। সেসব বাগান কেন এমন প্রকল্পে নেওয়া হচ্ছে না, জিজ্ঞাসা কংগ্রেস নেতার ?
সঞ্জীব রায় জানতে চান, সেই মৃত বাগানগুলিকে একপাশে রেখে চলমান বাগানগুলিকে টার্গেট করার জন্য সরকারের কোন বিশেষ লুকানো অ্যাজেন্ডা আছে কি ? তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, প্রতিটি চা-পাতা এবং প্রতিটি চা গাছে বর্তমান শ্রমিক এবং তাদের পূর্বপুরুষদের হাজার ফোঁটা ঘাম-রক্ত আছে৷ তাই সরকারকে এই আগুন নিয়ে আর খেলা উচিত নয়। বিজেপি সরকার বা তাদের সাংসদ যদি মনে করেন যে চা বাগানের শ্রমিকদের বিনামূল্যে চালের বিনিময়ে তাঁরা সহজেই চা বাগানের জমি দখল করতে পারেন তবে এটি সত্যিই একটি ঐতিহাসিক ভুল হবে । কংগ্রেস চা বাগানের শ্রমিক এবং সমাজের দরিদ্র অংশের বৃহত্তর স্বার্থে শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে৷ কংগ্রেস প্রস্তাবিত বিমানবন্দর ও সরকারের কোনও উন্নয়নমূলক কাজের বিরুদ্ধে নয়৷ তাই বলে শত শত বছরের মানব সভ্যতা ও চা-বাগানকে উপড়ে ফেলার মূল্যে নয় । বরাকের চা বাগানের শ্রমিকরা অভিভাবকহীন নয় এবং এটি বিজেপি সরকার এবং বিজেপি নেতাদের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চান সঞ্জীব।