Barak UpdatesHappeningsBreaking NewsFeature Story

চৈতন্য প্রেসের বাড়ির পুজোর পঞ্চাশ বছর, পোশাকে চমক

ওয়েটুবরাক, ১ অক্টোবরঃ বাড়িঘর বা মন্দিরের প্রতিমা আগে পুজোস্থলেই তৈরি করা হতো। এখন আর শিল্পীরা ওইভাবে সময় দিতে পারেন না। তাই তাঁদের স্টুডিও থেকেই প্রতিমা আনতে হয়।  সে জায়গায় এখনও প্রথাটা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে শিলচর চৈতন্য প্রেসের বাড়ি।  শিল্পী রঞ্জিত পাল উল্টোরথের দিনে তাঁদের বিলপারের বাড়িতে গিয়ে প্রতিমার কাঠামো পূজাটা সেরে আসেন। পরে ওখানেই প্রতিমা গড়েন।

বাড়ির বর্তমান প্রবীণতম সদস্য তিরাশি বছরের সঞ্জয়কুমার দাস জানিয়েছেন, বাংলাদেশেই তাদের পূজার সূচনা হয়েছিল। কিন্তু দেশভাগের দরুন ধারাবাহিকতা বজায় থাকেনি। তাই এপার-ওপার যোগ করতে চান না তাঁরা। সঞ্জয়বাবুর ভাইপো রাজ দাস শোনান, শিলচরের বাড়িতে পুজোর সূচনা ১৯৭৩ সালে।  সেদিক থেকে এ বার নিজেদের বাড়ির পুজোর পঞ্চাশ বছর।

এই বিশেষ বর্ষে পুজো করা সম্ভব হবে কিনা, এ নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।  জুনের বন্যায় তাঁদের বাড়ির আট ফুট ফটকের ওপর দিয়ে জল বইছিল। সবাই মিলে একটাই প্রার্থনা করছিলেন, পুজোটা যেন ঠিকঠাক করা যায়।  রেহাই মিলতেই সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েন।

সঞ্জয়বাবু, তাঁর স্ত্রী গোপা দাসরা যেমন অভিভাবক হিসাবে সব দেখভাল করছেন, রাজ দাস-বুলু দাসরা পুজোর বাজার সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করছেন, তেমনি  বাড়ির মেয়ে-বউ সুদীপ্তা-পাম্মি-বাবলিরা মায়ের বরণ, পুজোর আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত৷ বাড়ির শিশু-কিশোররা ব্যস্ত কে কী পোশাক পরবে, এ নিয়ে চর্চায়৷

Durga Idol at the house of Chaitanya Press

বাড়ির নতুন বৌ নয়নস্মিতা দাস সবাইকে নিয়ে একের পর এক পরিকল্পনা রচনা করেছেন।  বিশেষ করে পোশাক বিধি (ড্রেস কোড) তৈরি করে কার্যকরও করে নিয়েছেন।  সপ্তমীর দিনে বাড়ির সব মহিলা হলুদ রঙের শাড়ি পরবেন। মহাষ্টমীর জন্য তাঁরা বেছে নিয়েছেন কমলা রঙ। মহানবমীর দিনে তাঁরা পরবেন মেজেন্টা বর্ণের শাড়ি।  নাকে নাকচাবি, পায়ে আলতা, মাথায় খোপা পরে বাঙালি পরম্পরার সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে চান তাঁরা। দশমীর  দিনে বাড়ির মহিলারাও প্রতিমা নিরঞ্জনে যাবেন। সবাই পরবেন লাল পাড়ের সাদা শাড়ি।  সে দিন শোভাযাত্রায় মণিপুরি ব্যান্ড থাকবে তাঁদের বিশেষ আকর্ষণ।

প্রতিমা নিরঞ্জনে চৈতন্য প্রেস বাড়ির অবশ্য এক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।  নিরঞ্জনের সময় সবাই দেবীর মুখ উপরের দিকে রেখে তাঁকে এক বছরের জন্য বিদায় দেন। সঞ্জয়-রাজদের  পুজোয় প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় জলের দিকে থাকে দেবীর মুখ। সবাই মিলে আওয়াজ তোলেন, আসছে বছর আবার হবে৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker