Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কংগ্রেস-ইউডিএফ নয়, শিলচর সফরের শেষবেলায় বামেদের টার্গেট করলেন হিমন্ত
ওয়েটুবরাক, ১৯ সেপ্টেম্বরঃ দুদিনের কাছাড় সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বেশ কটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন, বক্তৃতা করেন। দফায় দফায় এসেছেন সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে। কোথাও কংগ্রেস বা এআইইউডিএফ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি। এমনকী সুস্মিতা দেবের নতুন দল তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কেও নয়। এরা যেন তাঁর কাছে বিরোধীই নয়। তবে আজ রবিবার রাতে বিমলাংশু রায় ফাউন্ডেশন আয়োজিত গ্রন্থ উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি বামেদের একহাত নেন।
রাজ্যে এই সময়ে বামেদের একজনই বিধায়ক রয়েছেন। বরাক থেকে এই পাট কবেই উঠে গিয়েছে। তবু হিমন্ত তাঁদেরই শক্ত আক্রমণ হানেন। বলেন, বামেরাই ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। তাঁরাই মাক্সীয় তত্ত্বকে সামনে এনে ভারতের আধ্যাত্মিকতা, বিশ্বাস ও পরম্পরাকে চ্যালেঞ্জ করে। অথচ ভারতের মাটিতে মার্ক্সের কথা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। এরা সাম্যের কথা বারবার বিভাজন টেনেছে বলে অভিযুক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, তারা যে সাম্যের কথা বলেন, তা বেদ-উপনিষদে বহু কাল আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। ওই কথা মেনেই ভারতবাসী নিজেদের একই আত্মার সৃষ্টি বলে বিশ্বাস করেন। সবাই নিজেদের মহাশক্তির সন্তান বলে মনে করেন। বিশ্ব জুড়ে ভারতের এই দর্শনকে শ্রদ্ধা করে। মার্ক্সীয় তত্ত্ব মেনে বামেরা উল্টোকথা বলে বিভাজনের পথে হাঁটে। তিনি বলেন, এরা কখনও নকশাল বানায়, কখনও ভাষার নামে আন্দোলন করে। অধ্যাত্মবাদ মিলন শেখায়, আর এরা সংঘাত শেখায়। মার্ক্সীয় তত্ত্বকে খারিজ করে দিয়ে হিমন্তের আহ্বান, যে ইতিহাস বিভাজন সৃষ্টি করে, একে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।ইতিহাস পড়ুন সংস্কৃতির ইতিহাস, নিজেদের বংশপরিচয়ের ইতিহাস।
বঙ্গভবনের প্রেক্ষাগৃহে দাঁড়িতে হিমন্ত বলেন, ধর্ম না থাকলে ভাষা হারিয়ে যায়। তিনি বাংলা, অসমিয়া বা হিন্দিতে কথা বলার সময় পৃথক কিছু মনে হয় না। কারণ সবেরই সূত্র সংস্কৃত। বরাক-ব্রহ্মপু্ত্রে একই গোত্রের প্রচুর মানুষ রয়েছেন, একই মন্ত্রে দুই উপত্যকার মানুষ অঞ্জলি দেন। অসমের মুসলমানদের প্রত্যেকের পূর্বপুরুষ হিন্দু ছিলেন, এ কথার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, উপাসনা পদ্ধতি পৃথক হতে পারে, কিন্তু বংশপরিচিতিকে কেউ অস্বীকার করবেন না। একে অস্বীকার করলে সংস্কৃতিবিচ্ছিন্ন হতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী শর্মা এ দিন বিমলাংশু রায় ফাউন্ডেশন প্রকাশিত ‘শিকড়ের খোঁজে—-প্রেক্ষিত বরাক-সুরমা’ গ্রন্থের আবরণ উন্মোচন করেন৷ এটি ইতিহাস অনুসন্ধানী ১২ জন লেখকের প্রবন্ধ সংকলন৷ প্রবন্ধকাররা হলেন ড. তন্ময় ভট্টাচার্য, ড. সুবীর কর, ড. মনুজেন্দ্র শ্যাম, জ্যোতিলাল চৌধুরী, ড. অমলেন্দু ভট্টাচার্য, টিএইচ বাবাচন্দ্র সিংহ, ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, মিহিরকান্তি চৌধুরী, জয়লক্ষী দেবী, সঞ্জীব দেবলস্কর, বিশ্বজ্যোতি বর্মন ও দীপঙ্কর ঘোষ। ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ ও মিহিরকান্তি চৌধুরী বাংলাদেশের লেখক। প্রচ্ছদ এঁকেছেন সুজিত পাল। তাঁদের আজ মঞ্চে ডেকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়, প্রয়াতদের জানানো হয় মরণোত্তর সম্মান৷
বিমলাংশু রায়ের ৮৩-তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য এবং সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়ও৷