Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আমলাদের বাদ দিয়ে নিজের চোখে শিলচর ঘুরে দেখুন, হিমন্তকে নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ
ওয়েটুবরাক, ২০ আগস্টঃ মুখ্যমন্ত্রী বরাক উপত্যকা সফরে আসছেন। সে সময়ে তাঁকে স্বচক্ষে শিলচর শহরের দুর্বিসহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানাল প্রগতিশীল নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ, শিলচর। তাঁরা আশাবাদী, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তা করবেন এবং এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবেন। তাঁদের আশা, বর্ধিত জল কর ও পুরকর প্রত্যাহারের গণদাবি পুরণেও সচেষ্ট হবেন তিনি।
মঙ্গলবার সিটিভিওএ কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রগতিশীল নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ, শিলচরের নেতৃবৃন্দ বলেন, কঠিন অসহনীয় পরিবেশের মধ্য দিয়ে শিলচরবাসী দিন অতিবাহিত করে চলেছেন। ভাঙা ফুটপাথ, অবর্ণনীয় বেহাল সড়ক ব্যবস্থা, দুর্গন্ধময় পানীয় জল, আবর্জনায় ভর্তি নালা-নর্দমা, অল্প বৃষ্টিতেই শহরে জমাজলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া – এমন অজস্র সমস্যায় শহরবাসীর বেঁচে থাকাই প্রশ্নের সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে মঞ্চের পক্ষে বাসুদেব শর্মা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে অনুরোধ জানান, আমলা ছাড়া একবার শিলচর সফর করুন। তাহলেই শিলচরবাসী যে নরকযন্ত্রণা ভোগ করছে, তা টের পাবেন। তিনি বিস্মিত, আগে মুখ্যমন্ত্রী আসার খবরে রাস্তাঘাটে প্যাচওয়ার্ক হতো। এ বার তাও নেই। খোদ বিজেপির অফিসের পঞ্চাশ মিটারের মধ্যে রাস্তায় বিশাল বিশাল গর্ত। কারও কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই।
নাগরিক সমন্বয় মঞ্চের সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’- এর মতো শিলচর পুরসভা সম্পূর্ণ অন্যায় ও বেআইনিভাবে জলকর থেকে শুরু করে দোকান, বাড়িঘর, আবেদন ফর্ম প্রতিটি ক্ষেত্রে মারাত্মক হারে কর বৃদ্ধি করেছে। জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে পুরসভার একজন ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন। অথচ আসাম মিউনিসিপাল অ্যাক্টের 68, 69 ও 75 ধারায় বলা হয়েছে, একমাত্র নির্বাচিত পুর সংস্থা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। দ্বিতীয়ত, করবৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে সাধারণ জনতার উদ্দেশে বিজ্ঞপ্রি প্রকাশ করতে হবে। এর শুনানি গ্রহণের পরই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে পারে। তৃতীয়ত, অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির প্রয়োজন দেখা দিলে রাজ্য সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। শিলচরে কোনও শর্তই পূরণ হয়নি বলে অভিযোগ করে ধ্রুব সাহা বলেন, তাই আমরা শহরবাসীর নিকট আবেদন রেখেছি যে তারা যেন বর্দ্ধিত জলকর, অন্যান্য পুরকর দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
একতরফা, তুঘলকি সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করে এর তীব্র প্রতিবাদ করেন প্রগতিশীল নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ, শিলচর-এর পক্ষ থেকে কিশোর ভট্টাচার্য, হিল্লোল ভট্টাচার্য, অরিন্দম দেব, সীমান্ত ভট্টাচার্য, আশু পাল, প্রদীপ নাথ, মনোজ পাল, প্রণব দত্ত প্রমুখ।
তাঁরা বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় জনগণকে নিয়ে একমাসব্যাপী প্রতিবাদী ধর্ণার আয়োজন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিবেকানন্দ রোড়, ইটখোলা তেমাথা, আর্যপট্টি দুর্গাবাড়ি, দেবীপ্রসাদ পাঠশালা পয়েন্ট, মধুরাঘাট পয়েন্ট, ন্যাশন্যাল হাইওয়ে পয়েন্ট, গোলদীঘি মল, রাঙ্গিরখাড়ি পয়েন্ট ইত্যাদি স্থানে বিক্ষোভ ও ধর্ণা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এখন হবে ২২ আগস্ট তারাপুরে, ২৪ আগস্ট ওয়াটার ওয়ার্ক্স রোড, ফাটকবাজারে, ২৫ আগস্ট তপোবননগর ও ২৭ আগস্ট সোনাইরোডে। পরে ১ সেপ্টেম্বর তারিখে ধরনা বিক্ষোভ বিলপারে।
তাতে কর্তৃপক্ষের টনক না নড়লে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এক গণ প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হবে। সেদিন সকাল ১১ টায় শিলচর নরসিংটোলা ময়দান থেকে বেরিয়ে ন্যাশনাল হাইওয়ে পয়েন্ট পর্যন্ত যাওয়া হবে। এই মিছিলে শহরের প্রতিটি ক্লাব, সংস্থা, সংগঠনকে নিজ নিজ ব্যানার সহ যোগদান করতে আহ্বান জানান তাঁরা।