Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
আনন্দময়ী ভট্টাচার্যের জীবনাবসান
ওয়েটুবরাক, ২২ মার্চঃ সঙ্গীতশিল্পী আনন্দময়ী ভট্টাচার্য আর নেই। আজ সোমবার রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। প্রথমে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যায়, কোমরে চোট পান। সুস্থ হওয়ার আগেই ফেটে যায় মাথা। একমাস ধরে শয্যাশায়ীই ছিলেন।
‘আনুদি’ নামে জনপ্রিয় আনন্দময়ী ভট্টাচার্য ছিলেন শিলচর সঙ্গীত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা। ডিএনএনকে স্কুলেও শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘদিন। এই অঞ্চলের প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পীদের অনেকেই তাঁর ছাত্র। ‘ডাকে ঐ একাদশ শহিদেরা ভাই’ গানটি যে এখন মুখে মুখে শোনা যায়, শ্যামাপদ ভট্টাচার্যের লেখা গানটি প্রথম তাঁর কণ্ঠেই গীত হয়েছিল। ভাষাশহিদদের দেহ নিয়ে শোকমিছিল বেরনোর সময় তিনিই গেয়ে ওঠেন, ‘ডাকে ঐ একাদশ শহিদেরা ভাই’।
এ ছাড়া, ধামাইল সহ এই অঞ্চলের সঙ্গীত-পরম্পরাকে জাতীয় শৈক্ষিক পরিমণ্ডলে তিনিই প্রথম তুলে ধরেছিলেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারে তাঁর উপস্থাপনা শুনে বিদগ্ধমহল বিস্মিত হয়েছিলেন। তাঁরাই তাঁর কাছ থেকে জেনেছিলেন, এই অঞ্চলেও বহু সাংস্কৃতিক সম্পদ রয়েছে। এ কথা উল্লেখ করে সরকারি পেনশনে সম্মানিত সাহিত্যিক সমরবিজয় চক্রবর্তী বলেন, অবিকৃত ও নির্ভুল সঙ্গীত পরিবেশনা ছিল তাঁর বৈশিষ্ট্য। কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের কোথাও খটকা বাঁধলেই আনন্দময়ী ভট্টাচার্যের কাছে জানতে চাইতেন। শুভপ্রসাদ নন্দীমজুমদারও তা-ই করছিলেন। এমনকী তরুণতর সৌম্য চক্রবর্তীও যে কোনও ব্যাপারে তাঁরই শরণ নিতেন।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড়। তিনি বলেন, আমাদের সাংস্কৃতিক শাখা তাঁর দ্বারা অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে। সব সময় তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাংস্কৃতিক কাজকর্মে জড়িয়ে থাকতেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতেন। শোক ব্যক্ত করেছেন ছন্দনীড়ের প্রধান কর্মকর্তা, তবলাশিল্পী ভাস্কর দাস।
সঙ্গীতপ্রেমী সুদীপ্ত দেবরায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আমি উনাকে পড়ন্ত বয়সে প্রথম শুনেছি। কয়েকবছর আগে অবধি যা গাইতেন, তা যে কোনও কমবয়সীকে লজ্জা দিতে পারত। এত সুরেলা কণ্ঠ সচরাচর শুনতে পাওয়া যায় না।’