Barak UpdatesHappeningsBreaking News

এনভায়রনমেন্ট ক্লিয়ারেন্স ছাড়া শিলচরে গ্রিনফিল্ড এয়ারপোর্টের কাজ করা যাবে না, কড়া রায় সুপ্রিম কোর্টের

ওয়েটুবরাক, ৬ মে : এনভায়রনমেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ছাড়া শিলচরে গ্রিনফিল্ড এয়ারপোর্ট প্রজেক্টের কাজ শুরু করায় কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করলো সুপ্রিম কোর্ট। এমনকি ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালে এই মামলা খারিজ হওয়া নিয়েও সুপ্রিম কোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ সরকারি তরফে দাবি করা হয়েছিল, চা চাষের নিয়মমাফিক প্রক্রিয়াতেই কিছু চা গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে৷ শীর্ষ আদালত ওই দাবি মানতে রাজি হয়নি৷

ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের রায় খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র এখানে বাধ্যতামূলক৷ এই ছাড়পত্র ছাড়া এয়ারপোর্ট নির্মাণের কোনও কাজ করা যাবে না৷ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, আগে তা না করায় ২০০৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে৷ ফলে এখন পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র হতে হবে ২০২২ সালের অবস্থানকে ধরে অর্থাৎ গাছ কাটার আগের পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে৷

আগে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল রায় দিয়েছিল, যেহেতু পরিবেশগত ছাড়পত্র এখনও বাকি রয়েছে, তাই এখনই এই মামলা বিচার্য নয়৷ সুপ্রিম কোর্ট এই প্রেক্ষিতে গ্রিন ট্রাইবুনালের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়েই প্রশ্ন উত্থাপন করে৷

ফোরাম ফর স‍্যোশাল হারমনি ও দু’টি সহযোগী সংগঠনের আপিল মামলাতেই সোমবার চূড়ান্ত শুনানি হয় এবং পরে এই রায় ঘোষিত হয়। ফোরাম ফর স্যোশাল হারমনি এবং অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি, এই রায় শ্রমিকদের আপসহীন লড়াইয়ের ফসল। সংশ্লিষ্ট সকলকে তারা ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানায়।
উল্লেখ্য, শ্রমিকদের সকল প্রকার আপত্তি অগ্রাহ্য করে, ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করে রণসজ্জায় বুলডোজার লাগিয়ে ২০২২ সালের ১২ মে থেকে লাগাতার তিন দিন ধরে এয়ারপোর্ট বানানোর নামে ডলু বাগানের দুই ডিভিশনের প্রায় ৪২ লক্ষ চা গাছ উপড়ে ফেলা হয়। কাটা হয় একাংশ ছায়া গাছও৷

ফোরাম ফর স্যোশাল হারমনি এবং অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে শিশির দে ও অরিন্দম দেব জানান, ইতিমধ্যে ডলু বাগানের মোট ৭ জন স্থায়ী শ্রমিক এই মামলায় পক্ষ হতে চেয়ে তাদের বক্তব্য সহ শপথনামা দাখিল করেন। তারা হলেন নীলিমা ভুমিজ, অঞ্জলি তন্তুবাই, বিষ্ণু সাঁওতাল, সূর্যমনি কর্মকার, ইন্দ্রজিৎ তেলী, বিদ্যুৎ ভুমিজ, চন্দ্রধর তেলী। মূল মামলাকারীদের হয়ে লড়েছেন আইনজীবী প্রশান্ত ভুষন এবং সহযোগিতায় ছিলেন আইনজীবী রিয়া যাদব। শ্রমিকদের হয়ে শপথনামা জমা দিয়েছেন আইনজীবী রাহুল গুপ্ত এবং আদালতে সওয়াল করেছেন সিনিয়র আইনজীবী গোপাল সঙ্করনারায়ন। তাঁরা আশা ব্যক্ত করেন যে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সমগ্র দেশব্যাপী উন্নয়নের নামে উচ্ছেদের যে সরকারি নীতি, তার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত জনগণ এই রায়ের বার্তা পেয়ে তাদের অধিকার আদায়ে পুনরায় জেগে উঠবেন৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker