Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News
তিরিশ বছর আগে আজকের দিনটি দেখতে পেয়েছিলেন শিলচরের কিছু মানুষ, অ্যাওয়ার্ড নিয়ে বললেন ডা. রবি কান্নান
//ডা. রবি কান্নান //
নমস্কার। ভারতের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। আমার এই পুরস্কার বা স্বীকৃতিতে অনেক অনেক মানুষ জড়িয়ে রয়েছেন। প্রথমে বলতে হয়, কাছাড় ক্যানসার হসপিটাল সোসাইটির কথা, যারা তিরিশ বছর আগে আজকের দিনটির স্বপ্ন দেখেছিলেন। হাসপাতালে আমার যে চারশো পঞ্চাশের বেশি সহকর্মী রয়েছেন, এই পুরস্কার তাঁদেরও প্রাপ্য। তাঁরা সবাই হাসপাতালকে সময়, প্রতিভা ও শ্রম দিয়েছেন, তাঁরা শুধু রোগীকে সুস্থ করার কাজটুকুই করেননি, বরং বাস্তবিকতা পর্যালোচনা করে ধৈর্যের সঙ্গে হতাশজনদের মনে আশার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছেন। এটাই ছিল সবচেয়ে বেশি জরুরি। আমরা সবাই একযোগে রোগীর পরিচর্যা করায় সার্বিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হয়েছে। এই স্বীকৃতি আমাদের সরকার, সরকারি অফিসার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, যাঁরা আমাদের প্রক্রিয়ার অংশীদার হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন সকলের। এই স্বীকৃতি আমাদের মহান দেশের প্রতিটি ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রাপ্য, যাঁরা আস্থা ও দায়বদ্ধতার প্রতি সম্মান জানিয়েছিলেন, যাঁরা বিশ্বাস করতেন, আমরা পারব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, যে সব রোগীর চিকিৎসা আমরা করেছি, তাদের পরিবার-পরিজনেরাও এর অংশীদার, কারণ কোনও দ্বিধা না রেখে তাঁরা আমাদের হাতে জীবন সঁপে দিয়েছিলেন। তবে আমরা যা করেছি, শিলচরের জন্য তা মোটেও অভিনব নয়। কারণ এই শহরে অনেকে অন্যান্য ক্ষেত্রে এই ধরনের কাজ করে চলেছেন, অনেকে আমাদের মতোই স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করছেন। এই রমন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড আমাদের সকল সহযোগীদের প্রাপ্য। আমি তাঁদের সকলের হয়ে এই সম্মান গ্রহণ করলাম।
ভূপেন হাজরিকা গেয়েছিলেন, উই আর ইন দ্য সেম বোট ব্রাদার…
পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণ একে অন্যের সঙ্গে এতটাই সম্পর্কীত যে, আলাদা করে কাউকে ভাবা যায় না। সংস্কৃতে তাই বলা হয়েছে, বসুধৈব কুটুম্বকম। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীটাই একটা পরিবার। অন্যকে নিঃস্বার্থ ভালবাসার মধ্য দিয়েই মানুষের প্রকৃত আনন্দ আসে। আমাদের শিক্ষা, সময়, শ্রম শুধু রোগীর পরিচর্যাতেই সীমিত রাখলে হবে না, বরং হতাশদের মনে আশার আলো জ্বালাতে হবে। তাহলেই রোগের চিকিৎসা হবে, রোগীরা সুস্থ হবেন, এ ভাবেই ক্যানসার বা অন্যান্য রোগদমন সম্ভব।
আমরা বিশ্বাস করি, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে ব্যতিক্রমী কিছু একটা করা যায়ই।
এই বিশেষ মুহূর্তে আমি আমার দুই সহকর্মীকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই ডা. রিতেশ ও ডা. দর্শনা, এখানে আছেন। আছেন আমার পরিবারের সদস্যরা, বিশেষ করে আমার মা, যাঁকে ছাড়া আমার ডাক্তার হওয়া কল্পনাই করা যায় না। আছেন কন্যা, বোন, ভাগনি এবং আমার স্ত্রী সীতা, যিনি আমার সারা জীবনের সহযোগী।
ধন্যবাদ রমন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনকে, যারা আমাকে এ কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে যে, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে ব্যতিক্রমী কিছু একটা করা যায়ই। ধন্যবাদ।
(রমন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের পর ডা. রবি কা্ন্নান যে বক্তৃতা করেছেন, তারই বঙ্গানুবাদ এখানে দেওয়া হল।)